মাস্ক ছাড়া বহু যাত্রী ছিলেন মেদিনীপুর স্টেশনেও। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
প্রায় ৬ মাস পরে রবিবার ছুটির দিনেই ফের গড়াল লোকাল ট্রেনের চাকা। যাত্রীদের স্বস্তি ফিরল। ট্রেনের দরজায় প্রণাম করে হাসিমুখে কমারায় পা রাখলেন হকাররা। কিন্তু রেলের তরফে করোনা বিধি রক্ষার আয়োজন তেমন ছিল না। ছুটির দিন হওয়ায় ভিড় তেমন হয়নি। তবে আজ, সোমবার থেকে কাজের দিনে ব্যস্ত সময়ে লোকালের ছবিটা কী দাঁড়াবে, সেটাই ভাবনা।
রবিবার খড়্গপুর ডিভিশনে ৪৮টি লোকাল ট্রেন চলেছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত মে মাস থেকে বন্ধ ছিল এই পরিষেবা। ছুটির দিন হওয়ায় ভিড় অনেকটাই কম ছিল। তবে ডিভিশনের সদর খড়্গপুর স্টেশনেই ৫০শতাংশের বেশি যাত্রী ছিলেন ট্রেনের কামরায়। খড়্গপুর-মেদিনীপুর-হাওড়া ডেইলি প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোশিয়েশনের সম্পাদক জয় দত্ত বলেন, “মেদিনীপুর-হাওড়া লোকালেই ৫০শতাংশের বেশি যাত্রী হয়েছে। ফলে সোমবার পরিস্থিতি কী হবে সেটা বোঝাই যাচ্ছে। কম লোকাল চালু হওয়ায় কাজের দিনে ভিড় বাড়বে। সবক’টি লোকাল চালু না হলে ভয়ঙ্কর বিপদ হবে।” খড়্গপুরের ডিআরএম মনোরঞ্জন প্রধান বলেন, “রবিবারের ভিড়ের তথ্য আমি নিইনি। সোমবার পরিস্থিতি বোঝা যাবে। তবে আমরা কালীপূজোর মধ্যে ১০০টি লোকাল চালু করব। আর আগামী দশদিনের মধ্যে ১৫০টি লোকাল ট্রেনই চালু হবে।”
এ বারের নির্দেশিকায় থার্মাল স্ক্যানিংয়ের উল্লেখ নেই। ফলে, স্টেশনে যাত্রীদের তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা ছিল না। সংখ্যায় কম হলেও একাংশ যাত্রীর মুখে ছিল না মাস্ক। রেলের পক্ষ থেকেও সচেতনতা প্রচার দেখা যায়নি। এ প্রসঙ্গে ডিআরএম বলছেন, “নিয়ম পালনের জন্য আমাদের সঙ্গে রাজ্য সরকার, যাত্রী সাধারণ সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।”
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, অধিকাংশ লোকাল ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শেষ। তবে এই মুহূর্তে পাওয়া যাচ্ছে না চালক। ছ’মাস বসে থাকলে চালকদের নতুন করে ‘রুট এক্সপিরিয়েন্স’, ‘রুট লার্নিং’ দিতে হয়। ফলে, এ দিন মেদিনীপুর-হাওড়া শাখায় ১৩টি, খড়্গপুর-হাওড়া শাখায় ৫টি, পাঁশকুড়া-হাওড়া শাখায় ৪টি, হলদিয়া-হাওড়া শাখায় ৪টি-সহ ৪৮টি লোকাল চলেছে। সব মিলিয়ে আপ রুটে ২৩টি ও ডাউনে ২৫টি ট্রেন চালু হয়েছে। ৩১ অক্টোবর প্রথম লোকাল হাওড়া থেকে রাত ২টো ৪৫মিনিটে ও খড়্গপুর থেকে রাত ৩টে ৫-এ যাত্রা শুরু করে।
মেদিনীপুর থেকে সকাল ৬টা ২০মিনিটে প্রথম লোকালের যাত্রী অন্বেষা ঘোষ বলেন, “আমি হাওড়া যাব। এত দিন বাড়ি যেতে হত বাসে। বাসের ভাড়া বেশি। বিশেষ করে শ্রমজীবী, পড়ুয়াদের জন্য লোকাল ট্রেন খুব প্রয়োজন ছিল।” কোলাঘাটের বাসিন্দা খড়্গপুর আইআইটির কর্মী বিমল জানা গত ৬ মাস বাইকে যাতায়াত করতেন। তাঁর কথায়, ‘‘লোকাল চলায় যাত্রাপথ সহজ হল।” এ দিন হাসিমুখে প্রণাম করে লোকালে ওঠা চা-বিক্রেতা নন্দকিশোর শাহ বলছিলেন, “করোনার পর থেকে কীভাবে সংসার চলছে তা আমরাই জানি। লোকাল চালু হওয়ায় আশার আলো দেখছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy