বেপরোয়া: পটাশপুরের টিকরাপাড়ায় একটি মণ্ডপের সামনে ভিড়। দশমীর সন্ধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
পুজোর শেষ বেলায় শহর থেকে গ্রামে মানুষের ভিড়ে হারিয়ে গেল হাইকোর্টের বিধিনিষেধ।
নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে ব্যারিকেড ভেঙে দর্শনার্থীরা ঢুকে পড়লেন মণ্ডপে মণ্ডপে। দর্শনার্থীদের ভিড়ের কার্যত অসহায় দেখাল পুজোর কর্মকর্তাদের। মফস্সলের পুজোমণ্ডপে বেআব্রু হয়ে গেল করোনা সচেতনতার ছবি।
পুজোর শুরু থেকে আদালতের নির্দেশ নিয়ে খুব খুশি ছিল না অধিকাংশ পুজো কমিটি। চাপে পড়ে আদালতের নির্দেশে পুজো কমিটিগুলি মণ্ডপের সামনে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে নো এন্ট্রি বোর্ড লাগানো -সহ করোনা সচেতনতায় একাধিক ব্যবস্থা রেখেছিল। মণ্ডপে আসার পথে স্যানিটাইজ়ার টানেল বসানো হয়েছিল। দর্শনার্থীদের মাস্কও বিতরণ করা হয়েছে বহু মণ্ডপে। পঞ্চমী থেকে অষ্টমী হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে সমস্ত কিছু ঠিকঠাকই চলছিল ছন্দপতন হল নবমী ও দশমীর সন্ধ্যায়। মফস্সলের মণ্ডপগুলিতে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামল। মণ্ডপের পাশাপাশি ফাস্ট ফুডের দোকানেও উপচে পড়ল ভিড়। শিকেয় উঠল করোনা সচেতনতা।
শুরুটা হয়েছিল অষ্টমীর অঞ্জলি থেকে। নবমী ও দশমীতে সেই ভিড় কয়েকশো গুণ বাড়ল। মানুষের চাপে খাড় প্রতাপদিঘি রাস্তায় যানজট সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশকে। পটাশপুরে টিকরাপাড়ায় পুজো মণ্ডপগুলিতে থিক থিক করা ভিড়ে উধাও সামাজিক দূরত্ব বিধি। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে ভিড়ের চাপে করোনা সচেতনতায় স্যানিটাইজার টানেল থেকে মাস্ক বিতরণ সব বন্ধ করতে বাধ্য হয় পুজো কমিটিগুলি। বাঁশের ব্যারিকেড ভেঙে মূল মণ্ডপে ঢুকতে দেখা গিয়েছে দর্শনার্থীদের। পুজো দেখতে আসা অধিকাংশ দর্শনার্থীদেরই মুখে মাস্ক-এর দেখা মেলেনি। কারও কারও থাকলেও তা ঠাঁই পেয়েছিল থুতনির নীচে।
পটাশপুর টিকরাপাড়া পুজো কমিটির এক কর্তা বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ মেনে মণ্ডপে অষ্টমী পর্যন্ত সমস্ত রকম সচেতনা মেনে চলা হয়েছে। নবমী ও দশমীতে মানুষের ভিড়ে সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। বাধ্য হয়ে স্বেচ্ছাসেবকদের পিছু হটতে হয়েছে। তবুও পুলিশের সহযোগিতায় ভিড় আটকানোর চেষ্টা হয়েছিল।’’
এগরা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক মহম্মদ বৈদুজামান বলেন, ‘‘প্রতিটি মণ্ডপে পর্যাপ্ত পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন ছিল। এক সময়ে ভিড় সামলাতে কিছুটা হিমশিম খেতে হয়েছে। তবে আদালতের নির্দেশ মতো আমরা মানুষকে নিরাপত্তা দিতে সবরকম চেষ্টা করেছি।’’
শহরের পুজো মণ্ডপগুলিতেও দেখা গিয়েছে করোনা নিয়ে দর্শনার্থীদের মধ্যে অসচেতনতার ছবি। এগরা শহরের মণ্ডপগুলির সামনে নবমীতে ভিড় উপচে পড়ে। ফুটপাতে থাকা খাবার দোকানে ছিল লম্বা লাইন। কোথাও কোথাও পাত পেড়েই বাঙালি মজেছিল বিরিয়ানিতে। কাঁথি কলেজ মোড় এবং পুরনো দিঘা বাসস্ট্যান্ডে পুজোমণ্ডপে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে দর্শনার্থীদের মুখে মাস্ক দেখা গিয়েছে। পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটে নবমী ও দশমীতে বিকেল থেকেই মণ্ডপে ভিড় ছিল। নবমীর সন্ধ্যায় ভিড় সামলাতে মণ্ডপগুলিতে যথেচ্ছ সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুজো কমিটির স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন ছিল। তমলুকেও এই দু’দিন প্রচুর মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েন। ভিড় জমেছিল ফাস্টফুডের দোকানে। দশমীতে শহরের বেশ কিছু মণ্ডপে প্রতিমা নিরঞ্জনে ভিড় হয়। মাইকে করোনা সচেতনায় প্রচার করা হলেও তাতে কর্ণপাত করতে দেখা যায়নি দর্শনার্থীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy