এখনও ফোটেনি ফুল। নিজস্ব চিত্র।
ফুলের টানে ভিড় করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু ডিসেম্বরের প্রথম রবিবারেও ফুল হীন দোকান্ডার ‘ফুলের উপত্যকা’। শুধু ফুলের সবুজ চারা দেখেই হতাশ হয়ে ফিরে যেত হল পর্যটকদের। অন্য বছর এই সময়েই ফুলের পর্যটন শুরু হয়ে যায়। এ বছর বন্যার কারণে ফুলের দেরি। আর্থিক ক্ষতি ফুলচাষিদের।
শীতের মরসুমে পাঁশকুড়া ব্লকের ঘোষপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দোকান্ডায় কংসাবতী নদীর চরে রকমারি ফুলের চাষ হয়। অক্টোবর মাসে চাষ শুরু হয়।সাধারণত ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পুরোদমে ফুল ফুটতে শুরু করে। ডিসেম্বর থেকেই পর্যটক আসতে শুরু করেন। বসে ফুলের মেলাও।
গত সেপ্টেম্বরে কংসাবতী নদীর প্লাবনে দোকান্ডার সব জমিতে পলি জমে গিয়েছিল। বন্যার জল নামার পর ফুলচাষিরা গাঁদা, ডালিয়া, অ্যাস্টার, চন্দ্রমল্লিকা-সহ বিভিন্ন বাহারি ফুলের চাষ শুরু করেন। আশা ছিল নির্ধারিত সময়েই ফুল ফুটবে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র প্রভাবে বৃষ্টির জেরে অক্টোবরের শেষে কংসাবতীর চর নতুন করে প্লাবিত হয়। দোকান্ডার অধিকাংশ ফুল গাছ মারা যায়। সেই ধাক্কা সামলে নতুন করে ফুল চাষ করতে অনেকটাই দেরি হয়েছে। ফলে এখনও ফুলগাছ বড় হয়নি। ফুলচাষিরা জানাচ্ছেন ফুল ফুটতে সেই জানুয়ারি মাস।
কিন্তু ফুলের টানে রবিবার সকাল থেকে দোকান্ডায় পর্যটক আসতে শুরু করেছেন। নিজস্ব যানবাহনের পাশাপাশি ট্রেনে দোকান্ডায় পৌঁছন বহু পর্যটক। চারিদিক সবুজ। কিন্তু ফুলের দোকান্ডা নেই। যা দেখে মন খারাপ পর্যটকদের। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গাড়ি করে দোকান্ডায় এসেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা প্রবীর রায়। ফুল না ফোটায় কিছুক্ষণ পরেই তাঁরা ফিরে যান। প্রবীর বলেন, "প্রতিবারই দোকান্ডায় আসি। ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই অল্প বিস্তর ফুল পাওয়া যেত। এবার একেবারেই ফুল নেই। শুনলাম কংসাবতীর বন্যায় এবার ফুলচাষ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফিরে যাচ্ছি। ভাবছি জানুয়ারি মাসে আরও একবার আসব।" হাওড়া থেকে বান্ধবীদের সঙ্গে দোকান্ডায় এসেছিলেন কলেজ ছাত্রী পলি মিশ্র। তিনি বলেন, "ভরা মরসুমে দোকান্ডায় প্রচুর ভিড় হয়। ভেবেছিলাম তাড়াতাড়ি গেলে ভিড় এড়ানো যাবে। দেখলাম পর্যটক ভালই এসেছে। কিন্তু ফুল এখনও ফোটেনি।"
হতাশ দোকান্ডার ফুলচাষিরাও। ফুলচাষি সমীর মাইতি বলেন, "ছ’কাঠা জমিতে চন্দ্রমল্লিকা চাষ করেছিলাম। চরে নদীর জল উঠে গিয়ে সমস্ত গাছ মারা যায়। নতুন করে গাছ লাগিয়েছি। জানুয়ারি মাস ছাড়া ফুল ফুটবে না। আজ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকান্ডায় প্রচুর পর্যটক এসেছিল। কিন্তু আমরা তাঁদের ফুল দিতে পারিনি। প্রতিবার এই সময় থেকে আমাদের আয় শুরু হয়। কিন্তু এবার পর্যটনের মরসুমে ফুল না ফোটায় আমরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy