অভিষেকের কর্মসূচির প্রস্তুতি সভা বিদ্যাসাগর হলে। শনিবার। নিজস্ব চিত্র soumeshwar mondol
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে শুরু হয়েছে ‘তৃণমূলের নবজোয়ার’ কর্মসূচি। জনসংযোগের নয়া পন্থায় জেলা থেকে জেলায় ঘুরছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে কর্মসূচি শুরুর পরই গন্ডগোলের একের পর এক ছবি উঠে আসছে। কোথাও প্রার্থী বাছাইয়ের ব্যালট লুট, কোথাও ভোটাভুটিপর্বে তুমুল গোলমাল, কোথাও নেতা-কর্মীদের মারপিট থামাতে নেমেছে র্যাফ! সূচি অনুযায়ী চলতি মাসের শেষে পশ্চিম মেদিনীপুরে পৌঁছবে অভিষেকের ‘জনসংযোগ যাত্রা’। তাই আগাম সতর্ক জেলা তৃণমূল।
জেলায় কর্মসূচি ঘিরে বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে বর্ধিত সাধারণ সভা ডেকে নেতা- কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে জেলা সদর মেদিনীপুরে, বিদ্যাসাগর হলের মাঠে তৃণমূলের এই বর্ধিত সাধারণ সভা হয়েছে। দলের মেদিনীপুর এবং ঘাটাল, দুই সাংগঠনিক জেলার নেতা- কর্মীরাই ছিলেন। ছিলেন তিন মন্ত্রী যথাক্রমে মানস ভুঁইয়া, শিউলি সাহা, শ্রীকান্ত মাহাতো প্রমুখ। ছিলেন দলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো- অর্ডিনেটর অজিত মাইতি, মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরা, ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আশিস হুতাইত প্রমুখ। ছিলেন দলের বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, পুরসভার পুরপ্রধান প্রমুখ।
তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, ‘‘আমি দলের সঙ্গে (রাজ্য নেতৃত্ব) কথা বলেছি। তারপরই এই মিটিংটা ডেকেছি।’’ সভায় দলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত ঘোষকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘জনসংযোগ যাত্রা হবে। কোথাও যেন কোনও রকম সামান্য বিশৃঙ্খলাও না হয়, এটা আমাদের সবাইকে দেখতে হবে। মেদিনীপুরের সম্মান আমাদের রক্ষা করতে হবে।’’ মেদিনীপুরের ‘সম্মান’ রক্ষার অনুরোধ জানিয়েছেন মন্ত্রী তথা সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়াও। তাঁর বার্তা, ‘‘গণতন্ত্রে ব্যক্তি-মত বন্ধ করা যায় না। ঘরের ভেতরে (দলের মধ্যে) সেটা করুন। বাইরে করবেন না।’’ মন্ত্রী মনে করিয়েছেন, ‘‘এ এক ঐতিহাসিক কর্মসূচি। তৃণমূলকে মানুষের দলে পরিণত করতে চাইছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।’’
দলীয় সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরে চার দিন থাকতে পারেন অভিষেক। সব ঠিক থাকলে এ জেলায় ‘জনসংযোগ যাত্রা’ পৌঁছনোর কথা ২৭ মে। জেলা ছাড়ার কথা ৩০ মে। ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম হয়ে ২৭ মে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়িতে পৌঁছনোর কথা অভিষেকের। কেশিয়াড়ি থেকে তাঁর যাওয়ার কথা খড়্গপুর গ্রামীণে। সেখান থেকে শালবনি, শেষে ঘাটাল। ৩০ মে ঘাটাল থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় পৌঁছবেন অভিষেক। শনিবার অজিত বলেন, ‘‘২৬ বা ২৭ মে জেলায় আসবে জনসংযোগ যাত্রা। হয় নয়াগ্রাম থেকে কেশিয়াড়ি হয়ে, নয়তো সাঁকরাইল থেকে খড়্গপুর গ্রামীণে ঢুকতে পারে খেমাশুলি হয়ে।’’
বিশৃঙ্খলা মূলত হয়েছে পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রার্থী বাছাইয়ের ভোট প্রক্রিয়া ঘিরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই। পশ্চিম মেদিনীপুরেও কেশিয়াড়ির মতো বহু ব্লকেই তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত। ফলে, ব্যালট-বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা থাকছে। ‘শৃঙ্খলা- ভঙ্গে’র ছাপ এ দিনের সভাতেও ছিল। শুরুতে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে অজিত বলেম, ‘‘আপনাদের জন্য ডাল-ভাতের ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু মিটিং শেষের আগে কেউ উঠবেন না।’’ সভায় শেষ বক্তা ছিলেন মানস। তিনি যখন বলছেন, তখন অবশ্য বেশিরভাগ চেয়ারই ফাঁকা। খাওয়ার জায়গায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি, হুড়োহুড়ি পড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy