ফাইল চিত্র।
এসেছিলেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুফল ঠিকঠাক পৌঁছচ্ছে কি না, সে খোঁজখবর নিতে। ‘‘রান্নার গ্যাসের দাম এ ভাবে বাড়ছে কেন?’’-এসে শুনলেন মেদিনীপুরের সাংসদ তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁকে এই প্রশ্ন করেছেন এক গৃহবধূই। শুনে তড়িঘড়ি এলাকা ছাড়েন দিলীপ। ওই গৃহবধূকে জুতসই উত্তরও দিতে পারেননি তিনি।
বুধবার মেদিনীপুরে এসে ছোটবাজারের অদূরে কয়েকটি বাড়িতে যান দিলীপ। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। যাঁদের সঙ্গে বিজেপি সাংসদের কথা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ছিলেন অঞ্জনা রাণা। গৃহবধূ অঞ্জনাই দিলীপকে গ্যাসের দাম বাড়া নিয়ে প্রশ্ন করেন। জানতে চান, ‘‘রান্নার গ্যাসের দাম এ ভাবে বাড়ছে কেন?’’ একাধিক সমস্যার কথা শোনান। রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম ইতিমধ্যে এক হাজার টাকার উপরে চলে গিয়েছে। কয়েকদফায় অনেকটা দাম বেড়েছে। রান্নার গ্যাসের নতুন সংযোগ নেওয়ার খরচও একলাফে অনেকটা বেড়েছে। নতুন সংযোগ নেওয়ার খরচ দু’হাজার টাকার উপরে চলে গিয়েছে। গৃহস্থের রান্নাঘরে কোপ পড়েছে। খাদ্য এবং অনান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের বেলাগাম মূল্যবৃদ্ধি এমনিতেই ঘুম কেড়েছে মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির। দু’মাসে তিন বার রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ায় বহু মানুষেরই নাভিশ্বাস উঠছে। এলাকায় গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলার সময়ে সেই ক্ষোভের আঁচ পেলেন দিলীপও।
গৃহবধূ অঞ্জনা রান্না করতে করতে বলছিলেন, ‘‘গ্যাসের দাম বেড়ে গিয়েছে। অতিরিক্ত বেড়ে গিয়েছে। কেন বাড়ছে, সেটাই জানতে চেয়েছি। ওঁকে বলেছি।’’ কী বললেন সাংসদ? অঞ্জনা বলছেন, ‘‘উনি সে রকম কিছু বলেননি। শুধু বলছিলেন, যোজনার গ্যাসের দাম তো কম রয়েছে।’’ অঞ্জনা জুড়ছেন, ‘‘আমার ছেলে রেশন পাচ্ছে না। ওটাও বলেছি।’’ কেন তাঁর এলাকায় এসে বাড়ি বাড়ি ঘোরা, তা জানাতে গিয়ে দিলীপ বলছিলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুফল ঠিকঠাক পায় না। কেউ রেশন পায় না, কেউ ভাতা পায় না। স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতি রয়েছে। এখানে তো যোগ্যদের বঞ্চিত করে মুখ দেখে দেখে সুবিধা দেওয়া হয়!’’ তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা চেয়ারম্যান অজিত মাইতির খোঁচা, ‘‘কেন্দ্র সরকার সাধারণ মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ করে তুলছে।’’
বুধবার মেদিনীপুরে এসে শুরুতে বটতলাচক কালী মন্দিরে পুজো দেন দিলীপ। পরে এলাকা পরিদর্শনে যান। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। দলের কর্মী- সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেন। পুজো দিয়ে কী চাইলেন? মেদিনীপুরের সাংসদের জবাব, ‘‘বাংলায় শান্তি আর সমৃদ্ধি চাইলাম। আর কালী সম্বন্ধে যাঁরা কুবাক্য বলছেন, তাঁদের সদ্ববুদ্ধি চাইলাম।’’ সম্প্রতি কালী নিয়ে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের করা বক্তব্যের প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিজেপি। গেরুয়া- শিবিরের দাবি, মহুয়ার বক্তব্য ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন সংসদ ভবনের মাথায় যে জাতীয় প্রতীকটির সম্প্রতি উন্মোচন করেছেন, সেটি আসলটির থেকে আকারে- প্রকারে অনেক আলাদা। এ নিয়ে দিলীপের জবাব, ‘‘যাঁদের কাছে কোনও কাজ নেই, কাজ করতে পারে না, তাঁদের কাজ দেখলে কষ্ট হয়। মোদীজির উন্নয়ন এঁরা সামলাতে পারছে না। জবাব দিতে পারছে না। তাই ফালতু বিষয় নিয়ে চর্চা করছেন।’’ সামনে একুশে জুলাই। তৃণমূলের সমাবেশ। তার আগে বিজেপি কর্মী- সমর্থকদের উপরে তৃণমূলের লোকেরা চাপ বাড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন দিলীপ। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশ দিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, তোমাকে গিয়ে যোগদান করতে হবে। আমাদের কর্মীদের ভয় দেখানো হচ্ছে, তৃণমূলে যোগদান না করলে মুশকিল হয়ে যাবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy