মঞ্চে তখন বক্তৃতা করছেন দিলীপ। নারায়ণগড়ের বাখরাবাদে। নিজস্ব চিত্র
অঞ্চল কর্মী সম্মেলনে যোগ দিতে এসে সভাস্থলের সামনে নিজের গাড়িতেই বসে থাকতে দেখা গেল মেদিনীপুরের সাংসদ তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। সোমবার নারায়ণগড়ে গাড়ির মধ্যে প্রায় ৪০ মিনিট বসেছিলেন দিলীপ। এ ঘটনায় শুরু হয়েছে চাপানউতোর। নারায়ণগড়ের কর্মসূচির আগে মেদিনীপুরে গিয়েছিলেন দিলীপ। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর নিয়ে সুর চড়ান তিনি।
এ দিন নারায়ণগড় ব্লকের বাখরাবাদ পঞ্চায়েতের শালজোড়াতে সম্মেলন ছিল বিজেপির। বিজেপি সূত্রের খবর, সভার সময় নির্দিষ্ট ছিল বিকেল সাড়ে ৩টেয়। সাংসদ মেদিনীপুরের কর্মসূচি সেরে সভাস্থলে এসে পৌঁছন চারটে পনেরো মিনিট নাগাদ। তখন শালজোড়ার মাঠে হাতেগোনা কয়েকজন। নেতৃত্বদের অনুরোধেও গাড়ি থেকে নামেননি তিনি। চারটে চল্লিশ নাগাদ সম্মেলন শুরু হয়। দিলীপ মঞ্চে যখন ওঠেন তখন ঘড়ির কাঁটায় পাঁচটা। তারও মিনিট পনেরো পর থেকে ভিড় বাড়তে থাকে। দিলীপের অবশ্য দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আমার ভিসি ছিল। মেদিনীপুরে সে ভিসি সেরে আসব ভেবেছিলাম। কিন্তু এখানে টেনশন ছিল। তাই আগেই পৌঁছে যাই। গাড়িতে বসেই ভিসি করি। নির্ধারিত সময়ে মঞ্চে উঠেছি।’’ মঞ্চে উঠে দিলীপ বলেন, ‘‘আমাদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে আমাদের তৃণমূলের বন্ধুরাও সভা করে ফেলেছে। আমরা সভা করলে ওরা খুব উৎসাহ পায়। সভা করে। লোককে ভয়ও দেখায়। বিজেপির সভায় যাতে কেউ না যায়।’’ প্রায় একই সময়ে বাখরাবাদ পঞ্চায়েতের খালিনাতে মিছিল ও সভা করেছিল তৃণমূল। ব্লকের এসসি সেলের সভাপতি সুশান্ত ধল ও অঞ্চল সভাপতি প্রদীপ ঘোড়াইয়ের নেতৃত্বে হয় সভা।
সম্মেলনে লোক না আসার কারণ হিসেবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, তৃণমূল এলাকায় বাড়ি বাড়ি ধমক দিয়েছে। ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে এলাকায় বাইক মিছিল করেছে। তাই বাধা পেয়ে কর্মীরা আসতে পারেননি। সম্মেলনের আয়োজক নারায়ণগড় মধ্য মণ্ডলের সভাপতি সমীরণ বলেন, ‘‘তৃণমূল ভয় দেখিয়েছে। বিজেপির সম্মেলনে আসতে লোককে বাধা দেওয়া হয়েছে।’’ বিজেপির এই অভিযোগ অস্বীকার করে ব্লকের এসসি সেলের সভাপতি সুশান্ত ধল বলেন, ‘‘বিজেপির কাজ হচ্ছে অহেতুক অভিযোগ করা।’’ বিজেপি জানাচ্ছে, সভার ঘোষিত সময় ছিল সাড়ে তিনটা। এ ক্ষেত্রে সাধারণভাবে ভিআইপিরা একটু দেরিতে আসেন। তৃণমূলের বাধার পাশাপাশি এ সময় চাষের কাজও চলছে। তাই মানুষ বেরাতে পারেননি।
পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রশাসনিক সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সফর নিয়ে কটাক্ষ করেন দিলীপ। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘লোক চোখে চোখ রেখে কথা বলতে আরম্ভ করেছেন। ঝাড়গ্রামে গিয়েছিলেন। ঝাড়গ্রামে আদিবাসী সমাজের লোকেরা বলেছেন, আমরা কিছুই পাইনি। ১২ বছর পরেও মুখ্যমন্ত্রীকে এই কথা শুনতে হচ্ছে, যিনি বারবার বলেন, জঙ্গলমহল হাসছে।’’ দিলীপের খোঁচা, ‘‘এখানে এসে প্রশাসনিক সভা উনি করেন। কিন্তু প্রশাসন কী কাজ করে, লোকে বুঝতে পারেন না!’’ পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো- অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এলে তাঁরা কিছু না- কিছু পাবেন, এটা মানুষ জানেন। এটাও জানেন, প্রধানমন্ত্রী এলে তাঁদের সব চলে যাবে ব্যবসায়ীদের দখলে!’’
সামনে পঞ্চায়েত ভোট। কাল, বুধবার রাজ্য বাজেট পেশ হওয়ার কথা। বাজেটের পরের দিনই মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা। সেই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর এ বারের সফর তাৎপর্যপূর্ণ। তবে দিলীপের কটাক্ষ, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিলে এখানে বাজেট হয়! ডিএ নেই, পেনশন নেই, চাকরি নেই। আন্দোলন শুরু হয়ে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy