জলোচ্ছ্বাস: রবিবার শঙ্করপুরে।
আশঙ্কা ছিল বড়সড় দুর্যোগের। তবে শেষ পর্যন্ত তার থেকে রেহাই পেল সৈকত শহর। প্রবল ঘূর্ণিঝড় শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় আপাত স্বস্তিতে প্রশাসন। তবে উপকূল এলাকার সর্বত্র যাবতীয় সতর্কতা বহাল রয়েছে।
শনিবার রাত থেকেই কার্যত বাতাসের দাপট ছিল না। ঘূর্ণিঝড় ‘জ়ওয়াদ’ স্থলভূমিতে আছড়ে পড়ার আগে বরং রবিবার দিনভর যা ঘটল তা হল নাগাড়ে বৃষ্টি। এদিন সকাল থেকে ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে ভিজেছে দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর এবং শঙ্করপুরের মতো পর্যটন কেন্দ্রগুলি। দুপুরের পর সেই বৃষ্টির দাপটও খানিকটা কমে যায়। তবে বাতাসের জোর কিছুটা বাড়ে। ফলে অমাবস্যার মরা কটালে বঙ্গোপসাগর খানিকটা অশান্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের।
শীতে পর্যটনের মরশুম শুরুর এটিই ছিল প্রথম রবিবার। ছুটির দিন হলেও ‘জ়ওয়াদ’-এর জন্য দিঘা, মন্দারমণিতে আগাম নজরদারি শুরু করেছিল প্রশাসন। এদিন সকাল থেকেই আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢেকে গিয়েছিল। সৈকতে সকাল থেকেই প্রচুর পরিমাণে পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স কর্মী এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন ছিলেন। ওল্ড দিঘা এবং নিউ দিঘায় বিভিন্ন ওয়াচ টাওয়ার থেকে চলে নজরদারি। ওল্ড দিঘার বিশ্ববাংলা উদ্যানের কাছে ছাতা মাথায় বেশ কিছু পর্যটককে দেখা গেলেও তাদের কাউকেই সৈকতের ধারে কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। সমুদ্রসৈকতে যাওয়ার সবকটি সরণির মুখে দড়ি দিয়ে আটকে দিয়েছিল পুলিশ। সকালের জোয়ার চলাকালীন সমুদ্র উত্তাল ছিল বটে। তবে ঢেউ কখনই গার্ডওয়াল অতিক্রম করেনি। দুপুর নাগাদ সমুদ্র সৈকত পরিদর্শনে বেরোন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী।
মন্দারমণিতে নাগাড়ে বৃষ্টির এক ফাঁকে আকাশে নীল রং উঁকি মারলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। সমুদ্রসৈকতে ঢোকার পথ দড়ি আটকে দিয়েছিল মন্দারমণি উপকূল থানার পুলিশ। সেই সঙ্গে সমুদ্রের কাছে যেতে না দেওয়ার কথা জানিয়ে দিনভর প্রচার চলে মাইকিং-এর মাধ্যমে। দোকানপাট কার্যত বন্ধ ছিল। দুপুর দুটো নাগাদ বৃষ্টি কিছুটা থামলেও বাতাস গতিবেগ বেড়ে যায়। ফলে সমুদ্র কিছুটা অশান্ত হয়ে ওঠে। সোমবার সকালে ফের জোয়ার। তার আগে এই বাতাসের গতি বাড়ায় বিপদের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। বিশেষত রামনগর-১ ব্লকের তালগাছাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত সমুদ্র বাঁধের উপরে নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
গত মে মাসে ইয়াসে শঙ্করপুর থেকে তাজপুর পর্যন্ত দীর্ঘ চার কিলোমিটার সমুদ্র বাঁধ তছনছ হয়ে গিয়েছিল। ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গ্রাম। তাই এ বার বিপদের আশঙ্কায় আগে থেকেই ওই এলাকার বাসিন্দাদের স্থানীয় দুটি আয়লা কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানান বিডিও বিষ্ণুপদ রায়। এক নাগাড়ে বৃষ্টি হলেও সেরকম জল জমেনি কোথাও। এদিন খেজুরি-২ ব্লকের মেহেদিনগর গ্রামে রসলপুর নদী সংলগ্ন একটি ছোট অংশে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জল ঢুকে প্লাবিত হয় একটি খটি। পরে মৎস্যজীবীরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাঁধ মেরামতি শুরু করে। খেজুরির নিচ কসবা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সমুদ্ভব দাস বলেন, ‘‘বাঁধের সামান্য অংশ ভেঙে খটিতে জল ঢুকেছিল। পরে তা নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy