সস্ত্রীক দিবাকর জানা। নিজস্ব চিত্র
তমলুকের নোনাকুড়ি সমবায়ের জমিতে বহুতল নির্মাণের অভিযোগ তুলে শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা দিবাকর জানার বিরুদ্ধে সমবায় মন্ত্রীর কাছে নালিশ জানিয়েছিলেন ওই পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জয়দেব বর্মন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সমবায় মন্ত্রীর নির্দেশে দিবাকর জানার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সমবায় দফতর।
সেই ঘটনার রেশ কাটার আগে দিবাকরের বিরুদ্ধে কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক হাজার ট্রিপ (লরি) পরিত্যক্ত পাথর-বোল্ডার ব্যবহার নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন জয়দেব। অভিযোগ পেয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন জেলাশাসক।
প্রশাসন সূত্রে খবর, তদন্তের পরে দিবাকরকে শো-কজ করা হয়েছে। তমলুকের মহকুমাশাসক গত শুক্রবার দিবাকরকে শো-কজের চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে সাতদিনের মধ্যে তাঁকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ গত ১০ জুলাই জয়দেব জেলাশাসকের কাছে চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেন, ‘‘দিবাকর জানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির ক্ষমতার ব্যবহার করে ব্লক এলাকার রাস্তা সংস্কার করতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে এক হাজার ট্রিপ (লরি) পরিত্যক্ত পাথর-বোল্ডার নিয়েছেন। ওই পাথর-বোল্ডার ব্যবহার করে কোন কোন রাস্তা সংস্কার হয়েছে তার তালিকা প্রকাশ করা হোক।’’
জয়দেবের অভিযোগ, ‘‘ব্লক এলাকার রাস্তা সংস্কারে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে পরিত্যক্ত পাথর বোল্ডার পঞ্চায়েত সমিতিকে দেওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চিঠি-সহ অন্য নথি রয়েছে। সেই পাথর বোল্ডার ব্যবহার করে ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা সংস্কারের কথা থাকলেও বাস্তবে তা করা হয়নি। তাই বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলাম।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জয়দেব বর্মনের এমন চিঠি পেয়ে জেলাশাসক তদন্তের নির্দেশ দেন। প্রশাসনিকভাবে তদন্তের পরেই গত শুক্রবার তমলুকের মহকুমা শাসক শহিদ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানাকে শো-কজের চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও দিবাকরের দাবি, ‘‘তমলুকের মহকুমা শাসকের দেওয়া চিঠি পেয়েছি। তবে তা শো-কজের নয়। চিঠিতে যা জানতে চাওয়া হয়েছে যথাসময়ে জানিয়ে দেব।’’
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিপুল সম্পত্তি বৃদ্ধির অভিযোগ তুলে দিবাকরের বিরুদ্ধে তৃণমূলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর কাছেও চিঠি দিয়ে নালিশ জানান জয়দেব। যা জেলার রাজনৈতিক মহলে শোরগোল তোলে। এরপরই জয়দেবের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তুলে তৃণমূলের ব্লক কমিটি তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে জেলা সভাপতির কাছে।
তবে সে বিষয়ে কিছু করার আগেই জয়দেবের অভিযোগ নিয়ে দিবাকরের বিরুদ্ধে সমবায় দফতর ও জেলা প্রশাসনের পদক্ষেপ ঘিরে রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন পড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy