Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Municipal Election 2020

পুরভোটের মুখে চিড়! হাজির দেব, নেই বিধায়ক ও পুরপ্রধান  

বৃহস্পতিবার ঘাটাল-দাসপুরে তৃণমূল সাংসদ দেবের কর্মসূচিতে দলের স্থানীয় বিধায়ক শঙ্কর দোলই ও ঘাটালের তৃণমূল পুরপ্রধান বিভাস ঘোষের এই গরহাজিরা ঘিরে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।

সেতুর শিলান্যাসে দেব। বৃহস্পতিবার ঘাটালের কনকপুরে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

সেতুর শিলান্যাসে দেব। বৃহস্পতিবার ঘাটালের কনকপুরে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:১০
Share: Save:

পুরভোটের আগে একগুচ্ছ কর্মসূচিতে হাজির দলীয় সাংসদ। তবে তার একটিতেও দেখা গেল না তৃণমূলের বিধায়ক বা পুরপ্রধানকে।

বৃহস্পতিবার ঘাটাল-দাসপুরে তৃণমূল সাংসদ দেবের কর্মসূচিতে দলের স্থানীয় বিধায়ক শঙ্কর দোলই ও ঘাটালের তৃণমূল পুরপ্রধান বিভাস ঘোষের এই গরহাজিরা ঘিরে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। তৃণমূলেরই একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, সাংসদের অনুষ্ঠানে দু’জনের এই অনুপস্থিতি দলের বিভাজনকে আরও বেআব্রু করে দিল। পুরভোটে তা প্রভাব ফেলবে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন ঘুরছে দলের অন্দরে।

এ দিন দুপুর দু’টো নাগাদ দাসপুরের পৌঁছন অভিনেতা সাংসদ দেব। একটি অনুষ্ঠানে তফসিলি জাতি-উপজাতি সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীদের হাতে শংসাপত্র তুলে দেন। দাসপুর মিলন মঞ্চের সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঘাটালের মহকুমাশাসক অসীম পাল, দাসপুরের বিধায়ক মমতা ভুঁইয়া, কর্মাধ্যক্ষ শ্যাম পাত্র, দাসপুর-১পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সুকুমার পাত্র, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুনীল ভৌমিক প্রমুখ।

এই অনুষ্ঠান সেরে দেব পৌঁছন ঘাটাল শহরের কুশপাতা সাংসদ কার্যালয়ে। সেখানে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিনি। পুরপ্রধানের অনুপস্থিতিতেই ঘাটাল শহরের উন্নয়ন নিয়ে নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। মিনিট দশেকের সাংবাদিক বৈঠকে দেব জানান, মনসুকায় ঝুমি নদীতে প্রস্তাবিত সেতু এবং শিলাবতী নদীতে ফুটব্রিজ এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। এ ক্ষেত্রে অর্থ দফতরের সবুজ সঙ্কেত মিলেছে। ডিপিআর তৈরির কাজ চলছে। ঘাটাল ব্লকের কনকপুরে সাংসদ তহবিলের ৪৫ লক্ষ টাকায় সেতু তৈরির কথাও জানান দেব। তার স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় ঘাটালের রেল, সড়ক, সেতু-সহ সাবির্ক উন্নয়নের নানা খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা করেন। বন্যা প্রতিরোধে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ যে তাঁর লক্ষ্য তা-ও এ দিন স্পষ্ট করেন তৃণমূলের তারকা-সাংসদ।

কিন্তু সাংসদের অনুষ্ঠানে দলেরই বিধায়ক, পুরপ্রধান অনুপস্থিত কেন? তবে কি পুরভোটের মুখে গোষ্ঠী কোন্দল প্রভাব ফেলছে?

সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে বিতর্ক এড়িয়ে দেবের জবাব, “ওঁরা হয়তো ব্যস্ত রয়েছেন।” এ দিন পরে কনকপুরে গিয়ে সেতুর শিলান্যাস করেন সাংসদ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা ব্লক সভাপতি দিলীপ মাঝি, শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ বিকাশ কর প্রমুখ।

দেবের অনুষ্ঠানে ছিলেন না কেন? ঘাটালের পুরপ্রধান বিভাস ঘোষের যুক্তি, “আমি পুরসভার পানীয় জল প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।” আর বিধায়ক শঙ্করের বক্তব্য, ‘‘ঘাটালেই ছিলাম। তবে ব্যক্তিগত কাজ ও উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকায় দেবের অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি।’’

ঘাটালে তৃণমূলের সাংসদ-বিধায়কের এই বিভাজন নতুন নয়। এর আগেও নানা ঘটনায় এই বিরোধ সামনে এসেছে। এলাকার উন্নয়ন নিয়ে নানা ক্ষেত্রেই দুই জনপ্রতিনিধির মতৈক্য হয়নি। দেবের সাংসদ তহবিলের টাকায় ঘাটাল শহরের বিবেকানন্দ পল্লিতে পার্কের জন্য টাকা বরাদ্দ বা হাসপাতালের গেটের সামনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যাত্রী প্রতীক্ষালয় তৈরিতে দেবের সরাসরি নজর থাকায় বিধায়ক, পুর-কর্তৃপক্ষের ততটা যত্ন ছিল না বলে অভিযোগ। পার্কের কাজ এক সময় বন্ধও হয়ে যায়। আর প্রতীক্ষালয়ে শীতাতপ যন্ত্রে বিদ্যুৎ সংযোগ হয়নি। এ সব নিয়েই ঠান্ডা লড়াই চলছে।

সন্ধ্যায় মেলা উদ্বোধনে দেব যান ডেবরায়। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিল্লির হিংসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দিল্লির ঘটনা দুঃখজনক। তবে ভোট হলেই এখন ভয় লাগছে। ২০২১ সালের নির্বাচন নিয়েও ভয় লাগছে, এখানে না ধর্মযুদ্ধ হয়ে যায়! যেখানেই নির্বাচন সেখানেই যেন ধর্মকে নামিয়ে দেবে।’’ তবে দিল্লির প্রেক্ষিতে কেন্দ্র কিছু একটা করবে বলে আশাবাদী দেব।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy