ঘাটালের বিভিন্ন প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে তৃণমূল সাংসদ দেব। —নিজস্ব চিত্র।
নিম্নচাপের বৃষ্টিতে জলমগ্ন বিভিন্ন জেলা। কোথাও কোথাও ইতিমধ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার তৃণমূল সাংসদ দীপক অধিকারী (দেব) ঘাটালের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করলেন। কেশপুরের ঝলকা এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর ঘাটাল এবং দাসপুর এলাকায় যান তৃণমূলের তারকা সাংসদ। পরে ঘাটাল মহকুমা শাসকের দফতরে একটি বৈঠক রয়েছে তাঁর। কেশপুরে দাঁড়িয়ে দেব জানান, তৎপরতার সঙ্গে তাঁর সংসদীয় এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। সেই সঙ্গে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের প্রতিবাদে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেন তিনি। জানিয়ে দিলেন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের ‘অগ্রগতির’ কথাও। দেব বলেন, ‘‘আমি এক জন সাংসদ হিসাবে যদি শুধু আরজি কর নিয়ে থাকি, তা হলে ঘাটালের মানুষ যাঁরা বন্যায় ডুবে আছেন, তাঁদের সঙ্গে অবিচার হবে।’’ সাংসদের সংযোজন, ‘‘সোমবার আরজি কর নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাইছি না। কাজ হচ্ছে। তবে ঘাটাল জলে ভাসছে। মানুষ কষ্টে আছেন।’’ এলাকা পরিদর্শনের পর সাংসদ জানান, অনেক বাড়ি ডুবে গিয়েছে। অনেক বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। তাই বিপদগ্রস্ত মানুষের কাছে যাতে খাবার পৌঁছতে পারে, তার জন্য নৌকা পরিষেবা, ওষুধ, খাবারের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ দফতরকে বিশেষ ভাবে সতর্ক করা হয়েছে। বিপদসীমার উপরে জল চলে এলে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। জল নেমে যাওয়ার পর আবার বিদ্যুৎ সংযোগ ঠিক করা হবে।
টানা বৃষ্টি এবং রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও। ডিভিসি-র ছাড়া জলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। এই পরিস্থিতিতে জেলাশাসকদের সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে সর্বদা যোগাযোগ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নিজেই জানিয়েছেন ঘাটাল, আরামবাগ, গোঘাট, উলুবেড়িয়ার কিছু জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পেয়েছেন তিনি। উত্তরবঙ্গের কিছু অংশও প্রভাবিত হয়েছে। দেব বলেন, ‘‘বন্যা পরিস্থিতিতেও চিকিৎসকদের প্রয়োজন। ঘাটাল, ডেবরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল যে ভাবে পরিষেবা দিচ্ছে তাতে খুশি সকলেই।’’ তবে এই পরিস্থিতিতে আরজি কর নিয়ে আলাদা করে মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেন, ‘‘বাংলার সব মানুষের মতো আমিও চাইব, ডাক্তারেরা কাজে ফিরে আসুন। আমরা সবাই চাই দোষীরা যেন শাস্তি পায়।’’ সোমবারই আবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠকের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দেব বলেন, ‘‘আজই (সোমবার) যেন সমাধান হয়। জুনিয়র ডাক্তার ছাড়া হাসপাতাল চলবে না, আমরা সবাই জানি। সিনিয়র ডাক্তারকে যতটা প্রয়োজন, ততটাই দরকার জুনিয়রদের।’’ দেব জানিয়েছেন ঘাটালের পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, মহকুমা প্রশাসন, সেচ দফতর দায়িত্ব পালন করছে। তার পরেই ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’ নিয়ে দেব বলেন, ‘‘জমির ম্যাপ করা হয়েছে। যাঁদের যাঁদের জমি রয়েছে, তাঁদের সঙ্গে কথা চলছে। অনেকগুলো সরকারি জমি পাওয়া গিয়েছে। জবরদখল করে রয়েছেন যাঁরা, তাঁদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। এই বছরের শেষেই প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু হয়ে যাবে। তারই প্রস্তুতি চলছে।’’
বস্তুত, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে দেব তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণ হিসাবে তুলে ধরেছিলেন ‘ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান’কে। তিনি জানান, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’ নিয়ে তাঁকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার পরেই আবার ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সোমবার দেব বললেন, ‘‘আমরা যাঁরা জনপ্রতিনিধি, তাঁদের কাছে মানুষের অনেক-চাওয়া পাওয়া থাকে। সাংসদ হিসাবে গত দশ বছরে হাসপাতালে ভর্তি করানোর মতো আবেদনই বেশি পেয়েছি। চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যাই বেশি থাকে। ডাক্তাররাও বোঝেন সেটা।’’ তার পর জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি নিয়ে দেব বলেন, ‘‘জানি না, আজ ফলাফলটা কী হবে। ডাক্তারেরা সব থেকে বেশি গুণী। আমি অবশ্য যা-ই বলি না কেন ভাবা হবে, দেব সরকারের পক্ষে বলছে। মানুষের হয়ে আমাদের এ কথা বলতে হবে। এটুকু বলব, প্লিজ় ফিরে আসুন কাজে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy