শুক্রবার নেতাই গ্রামে প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। নিজস্ব চিত্র
এক যুগ হল নেতাই-কাণ্ডের। ঘটনার ১২তম বর্ষে আজ, শনিবার নেতাই শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটির সহযোগিতায় মূলত তৃণমূলের উদ্যোগেই শহিদ স্মরণসভার আয়োজন হচ্ছে। বিজেপিতে যাওয়ার পরে গত দু’বছর শুভেন্দু অধিকারী নেতাই দিবসে এলেও এ বার তাঁর আসার কোনও খবর নেই। আজ পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে বিজেপির সভায় থাকবেন শুভেন্দু।
ফলে, নেতাই দিবসের রাশ এ বার পুরোপুরি তৃণমূলের হাতেই। স্মরণসভা সফল করতে শুক্রবার লালগড় ব্লক দলীয় কার্যালয়ে ব্লক ও অঞ্চল স্তরের নেতা-নেত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। পরে তিনি নেতাই গ্রামেও যান। স্মরণসভায় জেলা ও ব্লকস্তরের নেতানেত্রীরা তো থাকছেনই। বিরবাহা জানান, রাজ্যের প্রতিনিধি হিসেবে জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া ও পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর আসার কথা।
গত বছর নেতাই গ্রামে ঢুকতে পারেননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। লালগড়ে ঢোকার মুখে ঝিটকায় শুভেন্দুকে আটকে দিয়েছিল পুলিশ। তবে ২০২১ সালে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতোর হুমকি উপেক্ষা করে নেতাইয়ে এসেছিলেন শুভেন্দু। শহিদবেদিতে দাঁড়িয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানও দিয়েছিলেন। এবার কি আসবেন? বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডু বলছেন, ‘‘আমাদের কাছে এখনও কোনও খবর নেই।’’ আর বিরবাহার খোঁচা, ‘‘নেতাইয়ের মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আছেন। অন্য কাউকে তাঁরা চান না।’’ বিজেপির পাল্টা কটাক্ষ, যে শহিদ বেদিতে তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা শ্রদ্ধা জানাবেন, সেটি কিন্তু শুভেন্দুর ব্যক্তিগত অর্থ সাহায্যেই তৈরি। তবে বিরবাহা বলছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিনিধি হিসেবেই শুভেন্দু নেতাই গ্রামে আসতেন। মমতাময়ীর হাত শুভেন্দুর মাথায় ছিল বলেই আজও তিনি রাজনীতি করছেন। আর শহিদবেদি তৈরি হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে।’’
আসরে বিজেপি না থাকলেও এ বার নেতাইয়ের শহিদ স্মরণ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই জট দেখা দিয়েছিল। শাসকদলের নেতা-জনপ্রতিনিধিরা নেতাই দিবসে আসেন, বছরের বাকি সময় তাঁদের দেখা মেলে না— এমন ক্ষোভ ছিল। শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটির সম্পাদক সরজিত রায় ওরফে জয় সমাজমাধ্যমে নাম না করে বিরবাহা ও জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী নিয়তি মাহাতোর সমালোচনাও করেছিলেন। তারপরই লালগড় অঞ্চল যুব সভাপতির পদ থেকে সরজিতকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ক্ষোভে শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটির উপদেষ্টা পদ থেকে বিরবাহাকেও সরিয়ে দেন কমিটির সদস্যরা।
জট কাটাতে ২৪ ডিসেম্বর গ্রামে গিয়ে কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু। জয়কে পদ থেকে সরানোর বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন কমিটির সদস্যরা। বৃহস্পতিবার ফের ঝাড়গ্রামে কমিটির পদাধিকারী ও সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন দুলাল। ছিলেন বিরবাহাও। বৈঠকে সরজিতকে লালগড় ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়ার ঘোষণা হয়।
শুক্রবার বিরবাহা লালগড়ে যান। সকাল সাড়ে এগারোটায় প্রথমে ব্লক কার্যালয়ে সরজিত, ব্লক সভাপতি তারাচাঁদ হেমব্রম, প্রাক্তন ব্লক সভাপতি শ্যামল মাহাতো, দশটি অঞ্চলের সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক করেন প্রতিমন্ত্রী। জানান, লালগড় ব্লকের দশটি অঞ্চল থেকে লোকজন এনে নেতাইয়ের সভাস্থল ভরাতে হবে। লোক ভরানোর দায়িত্ব দেওয়া হয় অঞ্চল সভাপতিদের। নেতাই গ্রামের শহিদ বেদিস্থলে সভার মঞ্চ, মাইক ইত্যাদির ব্যবস্থার দায়িত্ব দেওয়া হয় স্মৃতিরক্ষা কমিটিকে। পরে দুপুরে নেতাই গ্রামে গিয়ে মঞ্চ বাঁধার কাজ পরিদর্শন করেন বিরবাহা। সরজিত বলেন, ‘‘প্রতিমন্ত্রী সভার আয়োজনের প্রস্তুতি দেখে গিয়েছেন। শনিবার সকাল দশটায় সভা শুরুর কথা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy