Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Lynching

Death: যুবককে পিটিয়ে খুনের নালিশ

পল্টু রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। এই যুবকের সঙ্গে কারও পুরনো শত্রুতা ছিল কি না, সেটা তদন্তে খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

পড়ে রয়েছে শেখ পল্টুর দেহ। নিজস্ব চিত্র

পড়ে রয়েছে শেখ পল্টুর দেহ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২২ ০৮:৪৪
Share: Save:

এক যুবককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা মেদিনীপুর শহরের। মৃতের নাম শেখ পল্টু (৩১)। মঙ্গলবার সকালে শহরের তোড়াপাড়া থেকে এই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহটি রাস্তার পাশেই পড়েছিল। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

মৃতের পরিজনেদের অভিযোগ, ওই যুবককে স্থানীয় কয়েকজন পিটিয়ে খুন করেছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই স্থানীয় ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘শহরের ওই ঘটনায় ইতিমধ্যে ৪ জনকে ধরা হয়েছে। তদন্তে সবদিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ প্রাথমিক তদন্তে পুলিশও মনে করছে, এটি সম্ভবত খুনের ঘটনাই। মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। পুলিশের বক্তব্য, ময়না-তদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।

কেন এই খুন, সে নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। পল্টু রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। এই যুবকের সঙ্গে কারও পুরনো শত্রুতা ছিল কি না, সেটা তদন্তে খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তাকে কেউ কিছু সন্দেহ করেছিল কি না, সে কারণেই মারধর কি না, সেই দিকটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একাধিক মহল মনে করাচ্ছে, কখনও কখনও এমন লোককেও চোর সন্দেহে মারধর করা হয়, যে আসলে চোর নয়। অভিযুক্তেরা ঘটনার সময়কালে সেটা বুঝতে না পেরে সন্দেহের বশে মারধর করেন। মৃত পল্টুর বাড়ি ধর্মা ক্যানেল পাড়ে। আর শ্বশুরবাড়ি বড় আস্তানার কিছু দূরে খাসপাড়ায়। সোমবার রাতে ওই যুবক তাঁর শ্বশুরবাড়িতেই ছিলেন। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার ভোরে তিনি ধর্মার বাড়ি যাচ্ছিলেন। বাড়ি যাওয়ার পথেই কেউ বা কারা তাঁকে পিটিয়ে খুন করেছে।

পল্টুর দুই সন্তান রয়েছে। এদিন সকালে ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় গিয়েছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর অনিমা সাহা। অনিমা বলেন, ‘‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এদিন সকালে খবর পাই, তোড়াপাড়ার কাছে এক যুবকের দেহ পড়েছিল। পুলিশ এসে তুলে নিয়ে গিয়েছে দেহটি। খবর পেয়ে ওই এলাকায় যাই আমি।’’ কাউন্সিলর বলেন, ‘‘ঘটনা কি, আমি বলতে পারব না। পুলিশের তদন্তে নিশ্চয়ই সত্য সামনে আসবে।’’ মৃতের স্ত্রী আফসানা বিবির নালিশ, ‘‘তোড়াপাড়া স্পোর্টিং ক্লাবের সামনে কে বা কারা আমানুষিকভাবে মারধর করেছে আমার স্বামীকে।’’ আফসানা জানাচ্ছেন, পুলিশ দেহ উদ্ধার করেছিল। তিনি হাসপাতালে গিয়ে দেহ শনাক্ত করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার স্বামীর সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখেছি আমি।’’ তাঁর দাবি, এর পিছনে রয়েছে স্থানীয় দুষ্কৃতীরা। দোষীদের চূড়ান্ত শাস্তির দাবি করেছেন তিনি। শেখ রাজেশ নামে এক যুবক বলেন, ‘‘আমি ওর (পল্টুর) বন্ধু হই। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ আমাকে ফোন করেছিল ও। খুব চিৎকার করছিল। পরে ওর মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়।’’ তিনি জুড়ছেন, ‘‘আমার ফোন নম্বর ওর কাছে আগে থেকেই ছিল।’’ পল্টুর শ্যালক শেখ সুরোজ বলেন, ‘‘ওর মুখে কেউ বা কারা অনেক বালিও ঢুকিয়ে দিয়েছে। মুখে বালি ঢুকিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে।’’

ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ঘটনার পিছনে ঠিক কে কে রয়েছে, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। এই ঘটনায় মেদিনীপুর শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে। শহরে দুস্কৃতীদের দাপট কেন বাড়ছে, কেন তারা এমন বেপরোয়া হয়ে উঠছে, এ সব প্রশ্ন উঠছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলছিলেন, ‘‘আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এখন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Lynching Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy