প্রশান্ত চন্দ। নিজস্ব চিত্র
কোথাও আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখলে তিনি পরিষ্কার করার আবেদন জানান। তাতে কাজ না হলে নিজেই পরিষ্কার করেন। এখনও পর্যন্ত এলাকাবাসীর মধ্যে তিনি শতাধিক ঝাঁটা বিলিয়েছেন। শুধু নিজের বাড়ির চত্বর, রাস্তা-ঘাট ঝকঝকে নয়, এলাকার রাস্তাঘাট তাঁর ঝাড়ুতে পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন। তিনি দাঁতনের মনোহরপুর পঞ্চায়েতের মোগলমারির বাসিন্দা প্রশান্ত চন্দ।
পেশায় মুদি দোকানি প্রশান্ত প্রতি মাসে একদিন নিয়ম করে এলাকার পাঁচটি দেবতার মন্দির, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, প্রতীক্ষালয় ও শ্মশান পরিষ্কার করা তাঁর রুটিন। এর পাশাপাশি চলে গাছ লাগানো, পরিবেশ রক্ষার বার্তা। প্রশান্তের কাজের প্রভাব পড়েছে এলাকায়। অনেকেই প্রশান্তের কাজে উদ্বুদ্ধ, অনুপ্রাণিত হয়ে সচেতন হয়েছেন। বাজার ও জনবহুল এলাকায় তিনি ছড়ায় লেখা বার্তা সাঁটিয়ে দেন। বাদ যায় না মেলা, খেলা, উৎসব, এমনকি এলাকার বিভিন্ন অনুষ্ঠান মঞ্চও। উদ্যোক্তারা না চাইলেও তিনি তাঁর বাগানের ফুল ও বাহারি গাছ সমেত বার্তা লেখা ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেন। মঞ্চ এবং চারপাশ সাজিয়ে দেন। তাঁর কথায়, ‘‘এতে যদি মানুষ সচেতন হয়। তবেই আমি সফল। এখন বাড়ির চারপাশ এবং বাড়ির সামনের রাস্তাঘাট পরিষ্কার করছেন গ্রামের মানুষ। এটাই অনেক।’’
অনেকেই প্রথমের দিকে প্রশান্তের কাজকে ভালভাবে গ্রহণ করেননি। তবে ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে পরিস্থিতি। প্রশান্ত বলছিলেন, ‘‘প্রথম দিকে অনেকেই কটাক্ষ করতেন। এখন আর করে না। সবাই বুঝতে পারছেন আমি পাগল নই। প্রকৃতি ও পরিবেশ বাঁচানো দরকার।’’ বাড়িতে গড়ে তুলেছেন একটা বড় বাগান। নাম দিয়েছি স্বচ্ছশ্রী।’’
ছেলে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া প্রসেনজিত ও স্ত্রী অনুশ্রী স্বামীর এই কাজকে সাহায্য করেন। তাঁর স্ত্রী বলেন, ‘‘ভাল কাজই তো করছেন। তাতে আমরাও সঙ্গে থাকি।’’ প্রতিবেশী দেবব্রত সাউ মানছেন, ‘‘এমন মানুষ একশোতে একটাই মেলে। একে দেখেই এলাকার অনেকেই সচেতন হয়েছেন। অন্যরা প্রশান্তকে দেখে শিখেছে, শিখবেও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy