‘আমপানে’ আশ্রয়হীন এমন বহু বাড়ির বাসিন্দা। অভিযোগ, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের বঞ্চিত করে তালিকায় নাম থাকছে শাসক ঘনিষ্ঠদের।
দোতলা পাকা বাড়ি। আপত দৃষ্টিতে তাতে ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্নটুকুও নেই। অথচ, ওই বাড়ির বাসিন্দার নাম ‘আমপানে’ ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায়!
রাজ্য সরকারের ক্ষতিপূরণ বরাদ্দে যে ইতিমধ্যেই দুর্নীতি শুরু করেছেন তৃণমূলের স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা, সে ব্যাপারে পাঁশকুড়ায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা তৈরিতে স্বজন পোষণের অভিযোগে পাঁশকুড়ার রঘুনাথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের ইতিমধ্যেই বিডিও’র কাছে নিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেত্রী প্রতিমা দাস।
গত মে মাসে জেলার উপকূলবর্তী এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’। তার প্রভাব পড়েছিল পাঁশকুড়া এলাকাতেও। সেখানেও বহু কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙেছে। কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকা বাড়িও। ঝড়ে যে সমস্ত বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা মেরামতির জন্য রাজ্য সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের তৎকালীন ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে।
বাঁদিকে, রঞ্জিতের অক্ষত বাড়ি। ডানদিকে, প্রধান ‘ঘনিষ্ঠ’ অন্য জনের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র
ইতিমধ্যে পাঁশকুড়া ব্লকে দেড় হাজার জনের টাকা পাঠিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। ব্লকের ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে সংসদ এলাকা অনুযায়ী ভাগ করে দেওয়া হবে প্রাপকের সংখ্যা। সেই সংখ্যা অনুযায়ী পঞ্চায়েতগুলি নামের তালিকা তৈরি করে তা জমা দেবে ব্লকে। ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা তৈরির জন্য প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। কমিটিতে থাকবেন বিডিও মনোনীত একজন প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোনীত একজন প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা বা নেত্রী। ওই চারজনের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে চূড়ান্ত হবে ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা।
রঘুনাথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে সিপিএমের বিরোধী নেত্রী প্রতিমা দাস শুক্রবার পাঁশকুড়ার বিডিওর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তাতে তিনি অভিযোগ করেছেন, রঘুনাথবাড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান অজিত কুমার সামন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা এক তরফাভাবে তৈরি করেছেন। সেখানে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা আদৌ নেই। এমনকী, পঞ্চায়েত প্রধান চূড়ান্ত নামের তালিকা বিরোধী দলনেত্রীকে দেখাননি বলেও অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের চিহ্নিত করতে একটি তদন্ত কমিটি গড়ার দাবি করেছেন প্রতিমা।
প্রতিমার দাবি, পঞ্চায়েত প্রধান ১০৮ জনের নামের যে তালিকা তৈরি করেছেন, তাতে নিজের শাশুড়ি অনুরাধা সাউ, উপপ্রধানের স্বামী অনুপ হাজরা, তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য রঞ্জিত দাসের কলেজ পড়ুয়া ছেলে সৌমেন দাসের নাম রয়েছে। এছাড়াও, পাকা বাড়ি থাকা প্রধানের এক ছায়াসঙ্গীর স্ত্রী, এক পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যার স্বামীর নামও রয়েছএ। প্রতিমা বলেন, ‘‘আমার যা অভিযোগ, তা আমি বিডিওর কাছে লিখিত আকারে জানিয়েছি।’’
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে ফোন করা হয়েছিল রঘুনাথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতর প্রধান অজিতকে। তবে তাঁর ফোন ছিল নট রিচেবল। অজিতকে এসএমএসও করা হয়েছিল। তবে তারও উত্তর দেননি পঞ্চায়েত প্রধান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy