আলোয় জ্বলেছে দিঘা গেটে। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
আছড়ে পড়ার কথা ছিল উপকূলের দিঘা-মন্দারমণি-শঙ্করপুর এলাকায়। কিন্তু পথ পাল্টে সে চলে গিয়েছিল হলদিয়া, নন্দীগ্রাম দক্ষিণ ২৪ পরগণার দিকে। ফলে ঘূর্ণিঝড় ‘আমপানে’র দু’দিন পরে সৈকত শহর দিঘা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হলেও হলদিয়ায় ফেরেনি চেনাছন্দ।
বুধবার বিকেলে ‘আমপানে’র ঝড়-বৃষ্টিতে দিঘার হাসপাতাল মোড়, রেল স্টেশন, থানা, মোহনার প্রবেশপথ-সহ একাধিক জায়গায় বহু পুরনো গাছ ভেঙে পড়েছিল। সেই সংখ্যাটা প্রায় ১০ হাজার বলে দাবি দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের। ঝড় শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল দিঘায়। ভেঙে গিয়েছিল বিদ্যুতের অসংখ্য খুঁটিও।
তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে দিঘায়। শুক্রবার সৈকত এবং শহরের ভিতরে সব জায়গায় হাইমাস্ট এবং ত্রিফলা আলো জ্বলেছিল। ঝড়ে ভেঙে পড়া গাছের ডালপালা পরিষ্কার করেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং দিঘা- শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের কর্মীরা। ঝড়ের কয়েক ঘণ্টা বাদেই পানীয় জলের পরিষেবাও চালু হয়ে গিয়েছে বলে স্থানীয়েরা জানিয়েছেন।
স্থানীয়দের একাংশের অবশ্য অভিযোগ, শহর দিঘা স্বাভাবিক হলেও ওড়িশা সীমানা লাগোয়া বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা শুক্রবারও স্বাভাবিক হয়নি। দিঘার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘দিঘায় ক্ষয়ক্ষতি সে রকম অর্থে হয়নি। গাছ পড়ে এবং বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে কিছুটা অচলাবস্থা হয়েছিল। এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে দিঘা।’’
দিঘা স্বাভাবিক হলেও হলদিয়ায় এ দিনও থেকে গিয়েছে হাজারো সমস্যা। স্থানীয় প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, হলদিয়ায় যে ঝড় এত প্রভাব ফেলবে, তা তারা আশা করেনি। তাই ঝড়ের দু’দিন পরেও কার্যত স্তব্ধ শিল্প শহর। শহরের সর্বত্র বিদ্যুৎ নেই। এমনকী, শহরে পানীয় জল সরবরাহও পুরোপুরি বন্ধ। ফলে টাউনশিপ, দুর্গাচক, হাতিবেড়িয়া সব জায়গাতেই পানীয় জলের হাহাকার দেখা গিয়েছে। আর এই সুযোগে জলের কালোবাজারি শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০ লিটার জলের দাম আগে যেখানে ছিল ৩০ টাকা, এখন সেই জলের দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। কোথাও আবার অপরিশোধিত জলকে বোতলবন্দি করে পরিশোধিত বলে চড়া দামে বিক্রির অভিযোগও উঠে আসছে।
অন্যদিকে, শহরে উপড়ে পড়া কয়েক হাজার গাছের সব এখনও সরানো সম্ভব হয়নি বলে পুরসভা সূত্রের খবর। এ দিন ভবানীপুর থানার পুলিশকর্মীদের উদ্যোগে চৈতন্যপুর-ব্রজলালচক সড়কে পড়ে থাকা গাছ সরানো হয়। পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং পুরসভার নিযুক্ত কর্মীরা রাস্তা পড়ে থাকা গাছ পরিষ্কারের কাজ শেষ করে ফেলেছেন। এছাড়া ২৯ জন কাউন্সিলর ওয়ার্ড ভিত্তিক ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকাও তৈরি করছে। সেই তালিকা পুরসভাকে জমা দিতে হচ্ছে। হলদিয়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুধাংশু মণ্ডল বলেন, ‘‘শহরে পানীয় জল এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা এখনও বন্ধ। সংশ্লিষ্ট সব দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রাখা হচ্ছে।’’
শুধু হলদিয়া শহর এলাকা নয়, হলদিয়া গ্রামীণ ব্লকেও একই পরিস্থিতি। এ ব্যাপারে হলদিয়ার বিডিও তুলিকা দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ দিন শুধু মোবাইলের নেটওয়ার্ক পাওয়া গিয়েছে। বাকি পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ঝড় পরবর্তী কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy