প্রতীকী ছবি
ঘূর্ণিঝড়ের সপ্তাহ ঘুরতে চললেও দ্বীপ মায়াচরে মিলছে না পর্যাপ্ত ত্রাণ। পানীয় জলেরা জন্য হাহাকার করছেন দ্বীপবাসী।
হলদিয়া মহকুমার মায়াচর দ্বীপ নদীবেষ্টিত হওয়ায় ঝড়ের মারাত্মক প্রভাব পড়েছে এই অঞ্চলে। সেখানে বসবাসকারী হাজার ছয়েক মানুষের শ’চারেক বাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছে। ত্রিপলের জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করলেও এখনও পর্যন্ত সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ।
যদিও হলদিয়া মহকুমা প্রশাসন সূত্রে খবর, ৮৭টি ত্রিপল মায়াচর পৌঁছেছে। কিন্তু যেখানে প্রায় ৪০০ বাড়ি ঝড়ে উড়ে গিয়েছে, সেখানে ওই কয়েকটি মাত্র ত্রিপলে পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া যাবে, এই প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। মায়াচরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘শুনেছি প্রশাসনের তরফ থেকে কিছু ত্রিপল বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু তার একটাও আমার কপালে জোটেনি। সামনে বৃষ্টি হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে বৃষ্টিতে ভিজেই দিন কাটাতে হবে।’’
মায়াচরের পঞ্চায়েত সদস্য মধুসূদন গুছাইত অবশ্য আশ্বাস দিচ্ছেন মায়াচরবাসীকে। তিনি বলেন, ‘‘কিছু ত্রিপল বিতরণ করা হয়েছে। আরও ত্রিপল প্রশাসনের কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তা হাতে আসেনি। তা এলেই স্থানীয়দের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হবে।’’
মায়াচর-সহ গোটা হলদিয়া মহকুমাই কার্যত আমফানের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত। এখনও পর্যন্ত হলদিয়ায় পানীয় জলের সঙ্কট অব্যাহত। মহিষাদল, গেঁওখালি-সহ একাধিক জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরেনি। শহরাঞ্চলে কিছু কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ এলেও গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুতের দেখা কবে মিলবে, সে ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কেউ কিছু বলতে পারছেন না।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মহিষাদলের প্রায় ৯০ শতাংশ গ্রামে বিদ্যুৎ আসেনি। এতে শুরু হয়েছে পানীয় জলের সমস্যা। বিদ্যুতের অভাবে সজল ধারা প্রকল্পে জল নেই। পুকুরের জলে গাছের পাতা পড়ে পচে যাওয়ায় সেই জলও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। আকাল মোমবাতি, কেরোসিনেরও। অভিযোগ, ১০ টাকার মোমবাতি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। আড়াইশো টাকার ত্রিপল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় মিলছে। এ সবের জেরে মানুষ কার্যত দিশাহারা।
মহিষাদলের লক্ষ্যার কালিকাকুন্ডু গ্রামের বাসিন্দা স্বাধীনতা সংগ্রামী চিত্তরঞ্জন সামন্তও চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তাঁর দোতালা মাটির বাড়ি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চিত্তরঞ্জনের নাতি অলোকেশ সামন্ত বলেন, ‘‘মোবাইলে নেটওয়ার্ক নেই। পানীয় জল নেই। ২০ থেকে ৩০ টাকা দিয়ে মোবাইল চার্জ করছি। চরম হতাশার মধ্যে রয়েছি।’’
মহিষাদলের লক্ষ্যা, ঘাগরা, কালিকাকুন্ডু, মাসুরিয়ারে মতো গ্রাম কার্যত নিষ্প্রদীপ। বিদ্যুৎ কবে আসবে, সে দিশা দেখাতে পারছে না প্রশাসন। মহিষাদল ব্লক সুত্রে খবর, বিদ্যুৎ কর্মীরা দিনরাত খেটে কাজ করছেন। কিন্তু এখন কর্মীর অভাব দেখা দিয়েছে। তাই পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া থেকে বিদ্যুৎ কর্মীদের আনা হচ্ছে। মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মহিষাদল বাজার এলাকার বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ এসেছে। চেষ্টা চলছে গ্রামের মধ্যেও। প্রাণপণে সব কিছু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy