Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Crematorium Corruption

শ্মশান দুর্নীতি, ধৃত সৌমেন্দু ‘ঘনিষ্ঠ’

পুলিশের দাবি, জাভেদ দীর্ঘদিন পলাতক ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে কলকাতার রাজারহাট-নিউটাউন এলাকা থেকে কাঁথি থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

Wooden bridge.

কাঁথি-৩ ব্লকের পশ্চিম সরপাই এলাকায় রসুলপুর নদীর উপরে রয়েছে কাঠের সাঁকো। বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে সেটি। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৫৩
Share: Save:

শ্মশান দুর্নীতি মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা বিজেপি নেতা জাভেদ আখতারকে গ্রেফতার করল কাঁথি থানার পুলিশ। বিজেপি নেতা তথা কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারীর 'ঘনিষ্ঠ' হিসাবে পরিচিত জাভেদ কাঁথি শহরের দারুয়া এলাকার বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, জাভেদ দীর্ঘদিন পলাতক ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে কলকাতার রাজারহাট-নিউটাউন এলাকা থেকে কাঁথি থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গভীর রাতেই তাকে কাঁথি থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর বুধবার সকালে তমলুক বিশেষ আদালতে তোলা হয় জাভেদকে। আইনজীবী সূত্রের খবর, প্রয়োজনীয় কিছু নথিপত্র এদিন আদালতে তদন্তকারীরা জমা দিতে দেরি করে। সে কারণে সন্ধ্যা পর্যন্ত শুনানি হয়নি। শেষ পর্যন্ত বিচারক জাভেদকে একদিনের জেল হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই মামলার তদন্তকারী অফিসার ডেপুটি সুপার ইন টেন্ড (ড্রাগ অ্যান্ড থেরাপিউটিক) রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস। তাঁর নেতৃত্বেই এদিন কাঁথি থানা থেকে তমলুক বিশেষ আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলরকে। বৃহস্পতিবার পুনরায় তাঁকে তমলুক জেলা আদালতে তোলা হবে। তবে তমলুকে দুর্নীতি দমন বিরোধী বিশেষ আদালতেই ওই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, শ্মশান সংস্কারের অনিয়মের পাশাপাশি, সরকারি জমিতে স্টল বানিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রিও করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। দাবি, পুরসভার কোষাগারে অধিকাংশ টাকাই জমা দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে কাঁথি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বর্তমান পুরপ্রধান সুবল মান্না। আগেই এই মামলায় পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার দিলীপ বেরা এবং ঠিকাদার সতীনাথ দাস অধিকারীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরে তাঁরা জামিন পান। তারপর ফেব্রুয়ারি মাসে তিন জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল পুলিশ।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেন। গত বিধানসভা ভোটের আগে তাঁর ভাই সৌমেন্দু তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যান, তখন তাঁর সঙ্গে বিজেপি যান জাভেদও। বিজেপিতে যোগদানের পর একের পর এক মামলায় নাম জড়ায় সৌমেন্দুর। যার মধ্যে রয়েছে রাঙামাটি এলাকায় শ্মশান সংস্কার দুর্নীতি, কাঁথি পুরসভার গুদাম থেকে ত্রিপল চুরির চেষ্টা, গ্রিন সিটি মিশন প্রকল্পে শহরে পথবাতি বসানোয় অনিয়ম এবং প্রভাত কুমার কলেজে ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ। এর মধ্যে ত্রিপল চুরির মামলার তদন্তে স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। কলেজ ভবন নির্মাণের মামলাও, খারিজ করেছে হাই কোর্ট। তবে, বাকি মামলাগুলিতে সৌমেন্দুকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এরই মধ্যে সৌমেন্দু ঘনিষ্ঠ জাভেদকে দীর্ঘদিন বাদে গ্রেফতার করল পুলিশ। আপাতত তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে শ্মশান দুর্নীতি মামলার পাশাপাশি, একাধিক বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সৌমেন্দুর সম্পর্কে তথ্য পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা।

এ নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, ‘‘বিজেপি কার্যকর্তাদের শুধু মিথ্যা মামলা এবং হয়রানির জন্য এসব ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুরের বিজেপি কার্যকর্তাদের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটছে। পরে আদালতের কাছে তথ্য প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে পুলিশ। রাজ্য সরকার এবং তৃণমূলের চক্রান্ত দিনের আলোর মতো সাধারণ মানুষের কাছে স্পষ্ট।’’ যদিও, কাঁথি শহর তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক খোকন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যাঁদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ পুলিশ পেয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে বলে শুনেছি। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করছে। বরং আমাদের দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে নানাভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Soumendu Adhikari arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy