Advertisement
E-Paper

খড়্গপুরের তৃণমূল অফিসে শ্রীনু নাইডু হত্যা মামলা: বাসব রামবাবু-সহ ধৃত ১৩ জনই বেকসুর খালাস

ঘটনার ৮৭ দিনের মাথায় আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। মঙ্গলবার আদালত রায় ঘোষণা করে। তাতে বাসব রামবাবু-সহ ১৩ জনকেই বেকসুর খালাস করা হয়েছে। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার ভাবনা।

File image

(বাঁ দিকে) গুলিতে নিহত শ্রীনু নাইডু। বেকসুর খালাস বাসব রামবাবু (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৩ ১৪:৫১
Share
Save

তৃণমূল পার্টি অফিসে ঢুকে রেল মাফিয়া শ্রীনু নাইডুকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত বাসব রামবাবু-সহ ১৩ জনকে বেকসুর খালাস করার নির্দেশ দিল মেদিনীপুরের আদালত। ছ’বছর আগে খড়্গপুর পুরসভা এলাকায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে গুলি করে খুন করা হয় শ্রীনুকে। মৃত্যু হয় ভি ধর্মা রাও নামে শ্রীনুর এক সহযোগীরও।

২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারি দুপুর ৩টে নাগাদ খড়্গপুর পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে নিউ সেটলমেন্ট এলাকায় তৃণমূলের ওয়ার্ড কমিটির কার্যালয়ে বসেছিলেন শ্রীনু নাইডু। সেই সময় কয়েক জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি গুলি করে শ্রীনুকে। রাতে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে খড়্গপুরের রেল মাফিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। হামলায় মৃত্যু হয় ২৫ বছরের ধর্মা রাও নামে শ্রীনুর এক শাগরেদেরও। জখম হন তিন জন।

সেই মামলার তদন্তে নেমে খড়্গপুরের আর এক রেল মাফিয়া বাসব রামবাবুকে অন্ধ্রপ্রদেশের তানুকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই জোড়া খুনের ঘটনায় মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার ৮৭ দিনের মাথায় আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। সেই মামলাতেই মেদিনীপুরের চতুর্থ অতিরিক্ত দায়রা বিচারক মন্দাক্রান্তা সাহার এজলাসে মঙ্গলবার ছিল রায়। বিচারক রায়ে রামবাবু-সহ ১৩ জনকেই বেকসুর খালাস করার নির্দেশ দেন।

সরকারি পক্ষের আইনজীবী সমর নায়েক জানিয়েছেন, আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। শ্রীনুর স্ত্রী পূজা এই রায় শুনে হতাশ। তিনি বলেন, ‘‘দু’জন মানুষ খুন হয়ে গেলেন। আহত হলেন আরও মানুষ। কিন্তু রায়ে সকলকে বেকসুর খালাস দিয়ে দেওয়া হল! আমরা রায়ের কপি হাতে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। রায় দেখে উচ্চতর আদালতে যেতে পারি।’’

দীর্ঘ দিন খড়্গপুরে ‘মুকুটহীন রাজা’ বলতে একটাই নাম উঠে আসত— বাসব রামবাবু। রেলের ছাঁট লোহার কারবারে কোটি কোটি টাকা ওড়ে এই রেল-শহরে। সেই টাকার দখলদারিতে অনেক রক্ত লেগে। বাম আমলে সেই মৃত্যুমিছিলের তালিকায় বহুচর্চিত দুই নাম ছিল মানস ও গৌতম চৌবে। খড়্গপুরের সিপিআই নেতা নারায়ণ চৌবের দুই ছেলে। ১৯৯৯ ও ২০০১ সালে— দু’বছরের ব্যবধানে খুন হন দু’ভাই। সেই মামলায় যাবজ্জীবন সাজা হয় রামবাবুর। রামবাবু জেলে থাকার সময় থেকেই নাকি শ্রীনু দখল করতে শুরু করে তার সাম্রাজ্য।

বেশ কয়েকটি ডাকাতির মামলায় শ্রীনুর নাম জড়ায়। জেলে যেতে হয় শ্রীনুকে। রামবাবুর সঙ্গে শ্রীনুর মুখোমুখি আলাপ সেখানেই। সুপ্রিম কোর্টে শর্তাধীন জামিন পেয়ে ২০১০ সালে ফিরে আসে রামবাবু। সাম্রাজ্য হারানোর আশঙ্কায় ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে রামবাবুর উপরে শ্রীনু হামলা চালায় বলে অভিযোগ। কিন্তু বেঁচে যায় রামবাবু। যদিও তার পর থেকেই রামবাবুর নাম চলে যায় পিছনের সারিতে। রকেটের গতিতে উত্থান হতে থাকে শ্রীনুর।

রামবাবুর মতো শুধু এলাকা দখলেই থামেনি শ্রীনু। রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রথমে তাকে নিয়ে যায় বিজেপির কাছে। ২০১৫-র পুরসভা নির্বাচনে শ্রীনুর স্ত্রীকে টিকিট দেয় বিজেপি। জিতে তৃণমূলে যোগ দেন পূজা। বিধানসভা ভোটের আগে শ্রীনু দায়িত্ব নেয় তৃণমূলের ‘লেবার সেল’-এর। তখন বহু তৃণমূল নেতার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। নেতাদের সঙ্গে এক মঞ্চেও দেখা যায় তাকে। ভোটের সময়ে তৃণমূলের হয়ে সক্রিয় ভূমিকা নিতেও দেখা গিয়েছিল শ্রীনুকে। সেই শ্রীনুকেই তৃণমূলের পার্টি অফিসে ঢুকে গুলি করে খুনের ঘটনায় কেঁপে গিয়েছিল রাজ্য। তৃণমূলের তৎকালীন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী খুনের ঘটনার দায় চাপিয়েছিলেন স্থানীয় বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের দিকে। প্রত্যাশিত ভাবেই সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন দিলীপ।

Sreenu Naidu Basab Rambabu Acquittal

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}