Advertisement
১০ জানুয়ারি ২০২৫
Coronavirus

পলিব্যাগে ত্রাণে দূষণ-ভয়

গড়বেতার তিনটি ব্লক-সহ জেলার বহু ব্লকেই যথেচ্ছ ভাবে পলিব্যাগে ত্রাণ বিলি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ শালপাতার কারবারিদের দু’টি সংগঠনের।

পলিব্যাগে ত্রাণ বিলি বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোর। নিজস্ব চিত্র

পলিব্যাগে ত্রাণ বিলি বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোর। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২০ ০৫:২৩
Share: Save:

এক বিধি মানতে গিয়ে আর এক বিধি শিকেয়!

পরিবেশের স্বার্থে প্লাস্টিক এবং পলিথিন ক্যারিব্যাগ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, করোনার জেরে উদ্ভূত আপৎকালীন এই পরিস্থিতিতে পলিব্যাগেই বেশিরভাগ ত্রাণ সামগ্রী বিলি করা হচ্ছে। লকডাউনে সরকারি বিধি মেনে কেউ যাতে দোকানে, বাজারে না যান সে জন্য বাড়িতেই খাদ্যসামগ্রী পৌছে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন, এমনকি প্রশাসনের তরফ থেকে। কিন্তু বেশিরভাগ এলাকাতেই অসহায় মানুষদের জন্য চাল, ডাল, আলু, আনাজ-সহ খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে প্লাস্টিক কিংবা পলিব্যাগেই। অভিযোগ, যা সরকারি নির্দেশ অমান্য করারই সমান।

গড়বেতার তিনটি ব্লক-সহ জেলার বহু ব্লকেই যথেচ্ছ ভাবে পলিব্যাগে ত্রাণ বিলি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ শালপাতার কারবারিদের দু’টি সংগঠনের। সারা ভারত শালপাতা শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন ও পশ্চিমবঙ্গ শালপাতা শিল্প কর্মচারী শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ তুলে দাবি করা হয়েছে, গৃহবন্দি অসহায় মানুষের জন্য পলিব্যাগের বদলে চটের বা কাপড়ের ব্যাগে ত্রাণ দেওয়া হোক। কিংবা মানুষকে বলা হোক ঘর থেকে ব্যাগ, বস্তা বা কিছু জিনিস আনতে, যাতে তাঁরা ত্রাণ সামগ্রী ঘরে নিয়ে যেতে পারেন। এই দুই সংগঠনের অভিযোগ, পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসন থেকেই পলিব্যাগ ও থার্মোকল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এখন সেই থার্মোকলের থালায় খাওয়ানো হচ্ছে, পলিব্যাগেই খাদ্যসামগ্রী বিলি করা হচ্ছে। এমনকি সেই কাজে প্রশাসনের পদাধিকারীদেরও দেখা যাচ্ছে।

সারা ভারত শালপাতা শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সতীশ সিংহ বলেন, ‘‘পরিস্থিতির কথা ভেবে এখন ওদিকে নজর দেওয়ার সময় নেই ঠিকই, সবার আগে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো দরকার, তাই বলে একটা বিধি মানতে গিয়ে আর একটা বিধিকে লঙ্ঘন করা যুক্তিগ্রাহ্য হতে পারে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘লকডাউনের সময় পরিবেশ দূষণও অনেক কম, কিন্তু ত্রাণের নামে পলিথিন ও থার্মোকলের ব্যবহারে পরিবেশ দূষণের আশঙ্কা বাড়ছে। সেই সব পলিব্যাগ ফেলা হচ্ছে যত্রতত্র। আমরা এক বিপদ তাড়াতে গিয়ে আর এক বিপদকে ডেকে আনছি।’’

পশ্চিমবঙ্গ শালপাতা শিল্প কর্মচারি শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়েছে, পরিবেশ বাঁচাতে প্রশাসনকে এ ব্যাপারে নজর দিতে হবে। তা না হলে দূষণের মাত্রা বাড়বে। এনিয়ে খুব শীঘ্রই এই দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র বলেন, ‘‘এখন মানুষের পাশে দাঁড়ানো নৈতিক কর্তব্য। সেই সঙ্গে নজর রাখতে হবে মানুষকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে যাতে ঠেলে না দিই। নিয়ম মেনে সামাজিক দূরত্ব যেমন বজায় রাখতে হবে, তেমনই পরিবেশও বাঁচে সেটাও দেখতে হবে।’’

জেলাশাসক রশ্মি কমলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এখন করোনা গাইডলাইনই দেওয়া হচ্ছে, এবিষয়ে এখন কিছু নির্দেশ নেই। সরকারের পরিবেশ বিধিই যা আছে, তবে আমরা মানুষকে সচেতন করছি এনিয়েও।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown Pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy