করমর্দনেই শুভেচ্ছা। মেদিনীপুর শহরের জোড়া মসজিদের সামনে। নিজস্ব চিত্র
লকডাউন এবং আমপানের জোড়াধাক্কায় কিছুটা হলেও ফিকে হল ইদের চেনা ছবি। দূর থেকে সালাম জানিয়ে সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে একে অপরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন অনেকে।
এ বার ইদগাহগুলিতে ভিড় ছিল না। মেদিনীপুর টাউন মুসলিম কমিটি ইদে আলিঙ্গন, হাত মেলানো থেকে বিরত থাকার আর্জি জানিয়েছিল। কমিটির পক্ষে আব্দুল ওয়াহেদ বলছিলেন, ‘‘সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে ইদ পালনের আর্জি জানিয়েছিলাম। তাতে সাড়া মিলেছে। করোনা সতর্কতা মেনেই উৎসব পালিত হয়েছে।’’ মেদিনীপুর শহরের নিমতলাচকের বাসিন্দা ইমতিয়াজ নওয়াজের কথায়, ‘‘আলিঙ্গন নয়। এ বার ইদে সালাম জানিয়েই শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি।’’
লকডাউনের বিধি মেনেই মেদিনীপুর শহরের কিছু মহল্লা আলো দিয়ে সাজানো হয়েছিল। সাউন্ড বক্স বাজেনি বললেই চলে। অন্য বছর এই দিনে অনেকে কাছে-দূরে বেড়াতে যান। এ বার সেই সুযোগ মেলেনি। তবে সারাদিন মিষ্টিমুখ ও খাওয়াদাওয়া চলেছে। শহরের এক মুসলিম যুবক বলেন, ‘‘ইদ মানে পরিজনেদের আলিঙ্গন পাওয়া। তবে এ বার আলিঙ্গন করিনি। তাতে আনন্দ কমেনি। সকাল থেকে অনেকের সঙ্গেই সালাম করে ইদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি।’’
অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সময়ের প্রয়োজনে রীতি বদলে যায়। যেমন এক সময়ে সুগন্ধি আতর ব্যবহার করা ছিল ইদের প্রচলিত রীতি। এখনও ধীরে ধীরে ইদের আতরের জায়গা নিচ্ছে দামি পারফিউম। তেমনই করোনা সতর্কতায় আলিঙ্গনের হুড়োহুড়ি কমে তার জায়গা নিয়েছে সালাম জানিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময়ের প্রথা। মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ বলেন, ‘‘ইদ খুশির উৎসব। মেদিনীপুরে নির্বিঘ্নেই ইদ পালিত হয়েছে।’’
সোমবার রেলশহর খড়্গপুরেও ইদ পালিত হয় অনাড়ম্বর ভাবে। শহরের বেশিরভাগ মসজিদ, ইদগা ময়দানে ভিড় দেখা যায়নি। যদিও ইন্দার ইদগাহ মসজিদে কয়েকশো মানুষ ভোর ৪টে নাগাদ জমায়েত করে নমাজ পড়েন। খবর পেয়ে এসডিপিও সুকোমল দাসের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি সামলায়। তবে ইদের পরে আলিঙ্গন এখানেও অনেক কম দেখা গিয়েছে। শহরের পুরাতনবাজার এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ বিলালের আক্ষেপ, “ইফতারের আনন্দ এ বার ছিল না। সত্যি বলতে ইদের খুশিও নেই। বাড়িতেই ইদ পালন করেছি। আলিঙ্গন করিনি। মনে হচ্ছে কোথাও যেন সব নিয়ম পালন করেও ইদ পালনের বৃত্ত শেষ হল না।” খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ নিজের বাংলোয় পরিবারকে নিয়ে ইদ পালন করেছেন। তাঁর কথায়, “করোনা সতর্কতায় এ বার ইদের আনন্দে একটু আপোস করতে হয়েছে। তবে বাড়িতে সকলেই নিষ্ঠার সঙ্গে ইদ পালন করেছে। মনের মিলই বড় কথা। আলিঙ্গন না হলে ইদ পালন হয় না এটা ভাবা ঠিক নয়।”
ঘাটাল মহকুমার মধ্যে ঘাটাল শহর, চন্দ্রকোনা, দাসপুর, সোনাখালি, রামজীবনপুর, ক্ষীরপাই-সহ বিভিন্ন জায়গাতেই ইদগাহে নমাজ পড়তে অনেকে ভিড় করেন। তবে বাড়িতে নমাজ পাঠ করেছেন এমন লোকজনের সংখ্যাই ছিল বেশি। নমাজ পড়া হয় আলিঙ্গন ছাড়াই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy