নেই সচেতনতা। মাস্ক ছাড়াই চলছে বাজারে কেনাকাটা। রবিবার তমলুক শহরে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস
দেশজুড়ে করোনা আক্রান্তের হার ফের ঊর্ধ্বমুখী। সারা দেশের সাথে এ রাজ্যেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেও নতুন করে করোনা আক্রান্ত বাড়ছে। মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানেই করোনা আক্রান্তের হার কয়েক গুণ বেড়েছে।
গত ২২ মার্চ সারা রাজ্যে একদিনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৬৮। ওই দিন জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬ জন। দশ দিন পরে ২ এপ্রিল রাজ্যে একদিনেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৭৩৬ জন। ওই দিন জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৭ জন। ঠিক একদিন আগেই জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০ জন। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির সাথে ফের আতঙ্ক বাড়ছে জেলায়। বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে গত ১ এপ্রিল। ফলে জনসভা বা মিছিলের মতো কর্মসূচি বন্ধ হওয়ায় হাজার হাজার মানুষের বড় জমায়েত কমলেও উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুতহারে বাড়তে থাকায়। ইতিমধ্যেই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সচিব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন যে সব হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হচ্ছিল জরুরি ভিত্তিতে ওই সব হাসপাতালের যন্ত্রপাতির মেরামতি সহ পিপিই, গ্লাভস, মাস্ক সহ বিভিন্ন সামগ্রী পর্যাপ্ত মজুত রাখার। বাড়ানো হচ্ছে করোনার নমুনা পরীক্ষা।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গত বছর মার্চ মাস থেকে এখনও পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার ৮৯৫ জন। এদের মধ্যে ২০ হাজার ৫১৮ জন করোনা মুক্ত হয়েছেন। জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এখনও পর্যন্ত ২৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় এখন করোনায় আক্রান্ত সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৯৮ জন। ১৩ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত তমলুক শহরেই নতুন করে ৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তমলুক জেলা সদর হাসপাতাল-সহ সব মহকুমা হাসপাতাল ও ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করোনা পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। বাসিন্দাদের সচেতন করতে ফের বাড়ি বাড়ি প্রচারে জোর দেওয়া হয়েছে। মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার ও পারস্পারিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ে সচেতন করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এ ছাড়া নমুনা পরীক্ষা ও ৪৫ ঊর্ধ্ব ব্যক্তিদের করোনা প্রতিষেধক (ভ্যাকসিন) নেওয়ার বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে। ৪৫ ঊর্ধ্ব ব্যক্তি যাঁদের কোমর্বিডিটি নেই তাঁদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। জেলা সদর হাসপাতাল ছাড়াও পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে করোনার প্রতিষেধক নেওয়া যাবে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের সচেতন করার পাশাপাশি জ্বর, সর্দি, কাশির মতো উপসর্গ থাকলে দ্রুত নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দিচ্ছেন। ৪৫ বছরের বেশি বয়সের ব্যক্তিদের করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার বিষয়ে বিস্তারিতভাবে বোঝানো হচ্ছে। করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে বাসিন্দাদের সচেতন করার পাশাপাশি বাস ও ট্রেন সহ জনবহুল জায়গাগুলিতে মানুষকে করোনা সতর্কতা বিধি মেনে চলার জন্য প্রচার চালানো হচ্ছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় বলেন, ‘‘করোনার সংক্রমণ রুখতে বাসিন্দাদের সচেতন করার পাশাপাশি করোনা উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের দ্রুত নমুনা পরীক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে। এর জন্য জেলা সদর, মহকুমা হাসপাতাল ও প্রতিটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। জেলায় ৪৫ ঊর্ধ্ব ব্যক্তিদের প্রতিষেধক দেওয়ার কর্মসূচিও চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy