Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
COVID19

রেল যোগেই সংক্রমণ বাড়ছে রেলশহরে

গত কয়েকদিন ধরে পশ্চিম মেদিনীপুরের করোনা পজ়িটিভ রোগীর প্রায় ৫০শতাংশ খড়্গপুর মহকুমার বলে জানা যাচ্ছে। আবার মহকুমায় আক্রান্তের প্রায় ৫০শতাংশেরও বেশি খড়্গপুর শহরের বাসিন্দা।

বিধি উড়িয়ে বেলদার একটি দোকানে মিষ্টি ও ক্যালেন্ডার নেওয়ার ভিড়।

বিধি উড়িয়ে বেলদার একটি দোকানে মিষ্টি ও ক্যালেন্ডার নেওয়ার ভিড়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৩৮
Share: Save:

গত বছর এপ্রিল। রেলশহরে প্রথম করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিলে আরপিএফ বা রেল সুরক্ষা বাহিনীতে। সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তে বন্ধ করতে হয়েছিল রেল ডিভিশনের সদর কার্যালয়। এক বছরের মাথায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়েও রেলশহরের আরপিএফ ব্যারাকেই আসে করোনার প্রথম পজ়িটিভ রিপোর্ট। ক্রমে শহরে হু-হু করে বেড়েছে সংক্রমণ। আইআইটিতেও থাবা বসিয়েছে এই ভাইরাস। তবে মূলত রেলের হাত ধরেই রেলশহরে বাড়ছে সংক্রমণ।

গত কয়েকদিন ধরে পশ্চিম মেদিনীপুরের করোনা পজ়িটিভ রোগীর প্রায় ৫০শতাংশ খড়্গপুর মহকুমার বলে জানা যাচ্ছে। আবার মহকুমায় আক্রান্তের প্রায় ৫০শতাংশেরও বেশি খড়্গপুর শহরের বাসিন্দা। চলতি বছরের মার্চের শেষে করোনার নতুন সংক্রমণ শুরু হয়েছিল আরপিএফে। তারপর আক্রান্তের অধিকাংশ ছিলেন আইআইটির কর্মী ও তাঁদের পরিজন। তবে এখন রেল যোগেই লাফিয়ে বাড়ছে পজ়িটিভের সংখ্যা। বুধবার রাতে খড়্গপুর শহরে যে ২০জন আক্রান্তের হদিশ মিলেছে, তার ১৫জনই রেলের কর্মী ও তাঁদের পরিজন। আক্রান্ত হয়েছেন রেল ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুই শীর্ষ আধিকারিক। তাঁদের একজন বলেন, “কীভাবে আক্রান্ত হয়েছি বুঝতে পারছি না। জ্বর ছিল। তাই পরীক্ষা করিয়েছিলাম। এখন হাসপাতালে আছি।”

রেলের চিফ মেডিক্যাল সুপারিন্টেনডেন্ট সুশীলকুমার বেহেরা বলছিলেন, “রেলে সংক্রমণ বাড়ার পিছনে আলাদা কোনও কারণ নেই। আসলে যদি মাস্ক কম ব্যবহার করেন, ভিড়ে যান, যেখানে-সেখানে খান, তবে সংক্রমণ বাড়বেই। আমরা প্রোটোকল মেনে পরীক্ষায় জোর দিচ্ছি বলে বেশি পজ়িটিভ আসছে। আর রেলের বাইরে সাধারণ মানুষ তো অনেকে উপসর্গ থাকলেও পরীক্ষা করাচ্ছে না।”

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে অবশ্য খবর, রেলের থেকে তুলনায় বেশি পরীক্ষা হচ্ছে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। পরিসংখ্যান বলছে, গত ১৪ এপ্রিল মহকুমা হাসপাতালে ৮৪ জনের আরটিপিসিআর পরীক্ষা হয়েছিল। রেলে হয়েছিল ৫৯ জনের আরটিপিসিআর পরীক্ষা। ১২ এপ্রিল মহকুমা হাসপাতালে ১২৯জনের আরটিপিসিআর পরীক্ষা হলেও রেলে মাত্র ৪৮ জনের ওই পরীক্ষা হয়েছিল। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের হাসপাতালেও জ্বর নিয়ে এলেই করোনার প্রোটোকল মেনে পরীক্ষা হচ্ছে। তবে উপসর্গ থাকলেও কিছু মানুষ তো পরীক্ষা করাচ্ছে না। সবাই সচেতন না হলে ভয়ঙ্কর বিপদ।”

রেলের কর্মীদের মধ্যে করোনার বাড়বাড়ন্ত প্রসঙ্গে খড়্গপুর রেলের সিনিয়ার ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার(হেডকোয়ার্টার) পরিমল সমাদ্দার বলছেন, “আমাদের বিভাগের কোনও কর্মী আগে আক্রান্ত হয়নি। যে দুই আধিকারিক আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের দু’জনের চেম্বারের দূরত্বও অনেকটা। দু’জনেই সোমবার থেকে অফিসে আসছিলেন না। রেলের বাইরেও বড় জগৎ রয়েছে সেখান থেকেও আক্রান্ত হতে পারে।” তবে খড়্গপুর স্টেশন হয়ে বিভিন্ন রাজ্যের মানুষের যাতায়াত লেগে রয়েছে। তাঁদের সঙ্গে মেলামেশার জেরেও আক্রান্ত বাড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে। চিফ মেডিক্যাল সুপারিন্টেনডেন্ট সুশীলকুমার মানছেন, “ট্রেনে বহু মানুষ করোনা বিধি না মেনে যাতায়াত করছে। তাঁদের সঙ্গে রেলকর্মীরা অনেকেই যাতায়াত করেন। সেটাও সংক্রমণের অন্যতম কারণ হতে পারে।”

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus COVID19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy