Advertisement
২১ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

বাধা সরিয়েই কৃষক বাজারে কোয়রান্টিন

কোয়রান্টিন কেন্দ্র গড়তে বারবার বাধার মুখে পড়ছে কেশিয়াড়ি ব্লক প্রশাসন।

কোয়রান্টিন কেন্দ্র সাজানোর কাজ চলছে। মঙ্গলবার কেশিয়াড়ি কৃষক বাজারে। ছবি: বিশ্বসিন্ধু দে

কোয়রান্টিন কেন্দ্র সাজানোর কাজ চলছে। মঙ্গলবার কেশিয়াড়ি কৃষক বাজারে। ছবি: বিশ্বসিন্ধু দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেশিয়াড়ি শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২০ ০০:২৪
Share: Save:

প্রথমে কলেজে বাধা। এ বার বাধা কৃষক বাজারেও।

কোয়রান্টিন কেন্দ্র গড়তে বারবার বাধার মুখে পড়ছে কেশিয়াড়ি ব্লক প্রশাসন। প্রথমে ঠিক হয়েছিল কেশিয়াড়ি পলিটেকনিক কলেজে এই কেন্দ্র হবে। বাধা আসায় তা কেশিয়াড়ি সরকারি ডিগ্রি কলেজে সরানো হয়। কিন্তু সম্প্রতি রাজ্য সরকার নির্দেশিকা দিয়েছে, স্কুল-কলেজ থেকে কোয়রান্টিন কেন্দ্র সরাতে হবে। সেই মতো ডিগ্রি কলেজ থেকে সরিয়ে কৃষক বাজারে কোয়রান্টিন কেন্দ্র গড়ার তোড়জোড় শুরু হয়। সোমবার রাতে সেখানে যান ব্লক প্রশাসন ও পুলিশের প্রতিনিধিরা। ছিলেন বিডিও সৌগত রায় ও কেশিয়াড়ি থানার আইসি বিশ্বজিৎ হালদার। কিন্তু স্থানীয় কিছু মানুষের বাধার মুখে পড়তে হয় তাঁদের।

অভিযোগ, স্থানীয়দের একাংশ, যে দলে আদিবাসীরাও ছিলেন, পথ আটকে দাঁড়ান। প্রায় দু’ঘন্টা ধরে বোঝানো হয় তাঁদের। শেষে এসডিপিও (বেলদা) সুমনকান্তি ঘোষের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী এসে ভিড় সরিয়ে দেয়। রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ পরিস্থিতি আয়ত্তে আসে৷ প্রশাসনের কাজে বাধা দেওয়ায় একজনকে আটকও করে পুলিশ। তবে মঙ্গলবার তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মানুষকে বুঝিয়ে আপাতত কৃষক বাজারে কোয়রান্টিন কেন্দ্র চালুও করা গিয়েছে। কেশিয়াড়ির বিডিও সৌগত বলেন, “কিছু মানুষের অসহযোগিতা থাকছেই। তার মধ্যেই কাজ করতে হচ্ছে। আপাতত কেন্দ্রটি চালু করা গেছে।” এসডিপিও (বেলদা) সুমনকান্তিও বলেন, ‘‘মানুষকে বোঝানো গিয়েছে। আর সমস্যা নেই।”

কোয়রান্টিন কেন্দ্র গড়ার মতো তেমন কোনও জায়গা কেশিয়াড়িতে নেই। তাই কেশিয়াড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে বেলদার দিকে প্রায় এক কিলোমিটার পাঁচ নম্বর রাজ্য সড়কের ধারে ফাঁকা জায়গায় এই কৃষক বাজার বাছা হয়। এখান থেকে রায় ৩০০ মিটার দূরে বসতি এলাকা। তাই সংক্রমণের ভয় নেই বলেই জানিয়েছে পুলিশ এবং প্রশাসন। এখানকার কোয়রান্টিন কেন্দ্রে কেশিয়াড়ি ও ঝাড়গ্রামের মোট চারজন আছেন। সকলেই কর্মসূত্রে ওড়িশায় গিয়েছিলেন৷ সেখান থেকে ফিরেছেন।সোমবার রাতে তাঁদের এই কৃষক বাজারের কোয়রান্টিন কেন্দ্রে সরিয়ে আনার পরই এলাকার মানুষ আপত্তি জানান৷ স্থানীয় এক যুবকের কথায়, “সংক্রমণ হতে পারে বলেই আমরা বাধা দিয়েছি।” শাসক দল অবশ্য প্রশাসনের পাশেই আছে। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অশোক রাউত বলেন,” আমরা সব সময় প্রশাসনের সঙ্গে আছি। আমাদের দলের তরফে এই সময় বাধার প্রশ্নই আসে না। প্রশাসন সাহায্য চাইলে অবশ্যই করা হবে।”

কৃষক বাজারে কোয়রান্টিন কেন্দ্র হওয়ায় দৈনিক আনাজ ও মাছ বাজারকে ফের মিনি মার্কেটে সরাতে হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ভিড় এড়াতে ওই বাজারগুলি কৃষক বাজারে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। মঙ্গলবার সকাল থেকে আপাতত পাইকারি বাজার বসছে জগন্নাথ মন্দির মাঠে। দৈনিক আনাজ ও মাছের বাজার বসছে মিনি মার্কেটে।

বারবার কোয়রান্টিন কেন্দ্রের জায়গা বদল হওয়ায় আর্থিক ক্ষতিও বাড়ছে প্রশাসনের। ব্লকের এক আধিকারিক জানান, প্রথমে কেশিয়াড়ি পলিটেকনিক কলেজে কোয়রান্টিন কেন্দ্র গড়ার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়। বাধা আসায় তা গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজে স্থানান্তরিত হয়। দু’টি জায়গাতেই অনেক কিছু ছিল না। সে সব ব্যবস্থা করতে হয়েছে। এখন আবার কেন্দ্র সরিয়ে কৃষক বাজারে আনতে হল। দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়া কৃষক বাজারে আনাজ ও মাছের খুচরো ও পাইকারি বাজার বসাতেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হয়েছিল প্রশাসনকে। খরচও হয়েছিল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy