প্রতীকী ছবি
এক থেকে সংখ্যাটা এক লাফে হল নয়। তার মধ্যে খড়্গপুরেরই ছ’জন।
দিল্লি ফেরত আরপিএফ কনস্টেবলদের মোট ন’জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। এর মধ্যে ওড়িশার বালেশ্বরে একজন আগে থেকেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। নতুন করে যাঁদের আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা গিয়েছে তাঁদের একজন পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদায় ও অন্যজন হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় কর্মরত। বাকি ৬জন খড়্গপুরের। ওড়িশায় এক রেলরক্ষী আক্রান্ত হওয়ার পরই তাঁর সংস্পর্শে আসায় ১৮জন আরপিএফ কনস্টেবলকে খড়্গপুরে নিভৃতবাস কেন্দ্র (কোয়রান্টিন) পাঠানো হয়েছিল। তার মধ্যে ৮ জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। তবে বাকি ১০ জনের জনের মধ্যে ৬ জনের রিপোর্টই পজ়িটিভ এসেছে বৃহস্পতিবার। এই পরিস্থিতিতে ওই ১৮ জনের পরোক্ষ সংস্পর্শে আসা সকলেরই খোঁজ শুরু করেছে রেল।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘দ্বিতীয় দফায় ১০জনের পরীক্ষা হয়েছিল। ৬জনের রিপোর্টই পজ়িটিভ এসেছে। করোনা আক্রান্ত রেলরক্ষীদের পূর্ব মেদিনীপুরের বড়মা করোনা হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।’’
বুধবারই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে রেল প্রশাসনকে নিভৃতবাস কেন্দ্রে থাকা ১৮জন আরপিএফ কনস্টেবলের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার থেকে খড়্গপুর রেল ডিভিশনের পক্ষ থেকে এই কাজ শুরু হয়েছে। নিভৃতবাস কেন্দ্রে থাকা রেলরক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের কয়েকজনকে গৃহ পর্যবেক্ষণে (হোম কোয়রান্টিন) থাকতে বলা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। খড়্গপুরে সাউথসাইডে আরপিএফ ব্যারাকেই ৬জনকে নিভৃতবাসে রাখা হয়েছে। আরও কয়েকজনের নাম উঠে আসছে।
জেলার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল মানছেন, “সরাসরি যাঁরা দিল্লি থেকে ফিরেছিলেন তাঁদের সংস্পর্শে অনেকে এসেছেন। তাই আমরা রেলকে বলেছিলাম পরোক্ষভাবে সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করতে। একই সঙ্গে হোম কোয়রান্টিনে রাখতে বলা হয়েছিল। খড়্গপুরের সাউথসাইডে আরপিএফ ব্যারাকে তেমন কয়েকজনকে চিহ্নিত করে কোয়রান্টিন করা হয়েছে বলে রেল জানিয়েছে।” রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল সিকিউরিটি কমিশনার বিবেকানন্দ নারায়ণের বক্তব্য, “আমরা খুব সতর্ক নজর রাখছি। দিল্লি থেকে ফেরা কর্মীদের পরোক্ষভাবে সংস্পর্শে আসা কর্মীদের খোঁজ চলছে। ১৩-১৪ জনকে নিউ সেটলমেন্ট কোয়রান্টিন কেন্দ্র-সহ কয়েকটি জায়গায় ইতিমধ্যে কোয়রান্টিন করা হয়েছে।”
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৪ এপ্রিল বিশেষ পার্সেল ভ্যানে দিল্লি থেকে ২৮জন রেলরক্ষী খড়্গপুরে ফিরেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১৮জন ডিভিশনের সদর খড়্গপুরে থাকলেও বাকিরা সাঁতরাগাছি, শালিমার, বালেশ্বর, মেচেদা, উলুবেড়িয়ায় নিজেদের কর্মস্থলে চলে গিয়েছিলেন। গত দু’দিনে তাঁদের মধ্যেই বালেশ্বর, মেচেদা ও উলুবেড়িয়া আরপিএফ পোস্টের একজন করে মোট তিনজনের আরপিএফ কনস্টেবলের করোনা আক্রান্ত হন। এ দিন খড়্গপুরের ৬ জনের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তার আগে খড়্গপুর শহরের নিউ সেটেলমেন্টে রেলের নিভৃতবাস কেন্দ্রে থাকা ১৮জনের মধ্যে ৮জনের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল।
এই পরিস্থিতিতে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না রেল ও জেলা প্রশাসনও। রিপোর্ট নেগেটিভ আসা রেলরক্ষীদের আবারও পরীক্ষা করা নিয়ে আলোচনা চলছে। জেলার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল বলেন, “অনেক ক্ষেত্রে রিপোর্ট নেগেটিভ এলে ১৪দিনের মাথায় আরও একবার পরীক্ষা করা হয়। এ ক্ষেত্রে সেটা ভাবা হতে পারে।”
এ দিকে, নিউ সেটলমেন্টে রেলের নিভৃতবাস কেন্দ্রে বহিরাগতের প্রবেশ ঠেকাতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গোটা চত্বর পুলিশের পক্ষ থেকে গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশও। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “যাতে নিউ সেটলমেন্টের ওই কোয়রান্টিন কেন্দ্রে সাধারণ মানুষ কোনওভাবে না যান, সে জন্যই আমরা এলাকাটি ঘিরে রেখেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy