বনপথে: তখন মুখ্যমন্ত্রীর গন্তব্য চিল্কিগড়ের কনকদুর্গা মন্দির। নিজস্ব চিত্র।
এক সময়ের সবুজ জেলা ঝাড়গ্রামে এখন করোনার বাড়বাড়ন্ত। বুধবারও জেলা করোনা হাসপাতালে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক জনসভাতেও উঠে এসেছে করোনা সংক্রান্ত উদ্বেগ।
ঝাড়গ্রামে করোনার প্রকোপ বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করে এ দিন সভার শুরুতেই রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান রাজীব সিংহ তথ্য হাতে নিয়ে জানান, গত এপ্রিল পর্যন্ত ঝাড়গ্রাম সবুজ জেলা ছিল। ৯ মে প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিশ মেলে। জুলাই পর্যন্ত ‘নর্মাল পিরিয়ড’ গিয়েছে। জুলাইয়ের শেষে মাত্র ২৮ জন পজ়িটিভ হন। হঠাৎ করে অগস্টে দু’শো সংক্রমণ বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে ছ’শো। ‘লেট সার্জ’ হয়েছে। জেলাকে খুব সাবধানে থাকার কথা বলেন রাজীব।
তারপরই মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, ‘‘ঝাড়গ্রাম জেলা ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সীমানাবর্তী। মুম্বই ও চেন্নাই থেকে প্রচুর লরি এখানে পাস করে। সুতরাং সেই এফেক্টটা এখানে হচ্ছে।’’ মুখ্যমন্ত্রীকে রাজীব জানান, করোনা হাসপাতালের সমস্যা মিটে গিয়েছে। হাসপাতালে এখন ভাল করে কাজ হচ্ছে। হাসপাতালের শয্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। ১৫ দিন আগে কোনও মৃত্যুর ঘটনা ছিল না। তবে গত ১৫ দিনে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য দফতরের টিম এসে খতিয়ে দেখে গিয়েছে। রাজীব জানান, গত সাতদিনে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। সেটাও শূন্যে আনা যেতে পারে। জেলায় ১৮৭ জন হোম আইসেলেশনে রয়েছেন। তাঁদের পালস অক্সিমিটার সরবরাহ এবং দু’বেলা খোঁজের কথা বলেন রাজীব।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, অনেকে মাস্ক পরছেন না। কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টের আওতায় পুলিশ, পঞ্চয়েত, কৃষি সব বিভিন্ন দফতরকে মাস্ক বিলি করার নিদান দেন মমতা। মমতা বলেন, ‘‘অনেকের মাস্ক কেনার ক্ষমতা নেই। যাঁর মাস্ক নেই তাঁকে কিনে দিতে হবে। কারণ করোনা আসছে বাইরে থেকে। কেউ স্বীকার করুক না করুক বায়ুবাহিত হচ্ছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁর নিজের পাড়ার এলাকা গণ্ডিবদ্ধ করে সাফল্য মিলেছিল। গণ্ডিবদ্ধ উঠিয়ে দিতেই ফের সংক্রমণ হয়েছে। মমতার কথায়, ‘‘আমার কালীঘাটের বাড়ির অফিসে দু’জনের হয়েছে। আমাকে বাড়িতে যে ছেলেটি চা করে দেয় তারও করোনা হয়েছে। এগুলো ছোটখাটো জিনিস কিন্তু নজর রাখতে হবে।’’
রাজীবের দাবি, ঝাড়গ্রামের ৭৯টি পঞ্চায়েতের মধ্যে দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত সংক্রমিত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য ভিন্ রাজ্যের লরিগুলিকে নির্দিষ্ট জীবাণুমুক্ত জায়গায় খাওয়ার জন্য থামার কথা বলেন। পুর প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য প্রশান্ত রায় মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটির ঠিকাকর্মীদের নিয়োগকারী বেসরকারি সংস্থা মাস্ক, জুতো পাচ্ছে না। এজেন্সি দিচ্ছে না।
সিএমওএইচ প্রকাশ মৃধাকে দাঁড় করিয়ে মমতা প্রশ্ন করেন, ‘‘এজেন্সি কেন দেবে এটা তো হাসপাতাল দেবে।’’ প্রকাশ দাবি করেন, ঠিকা কর্মীরা মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধির সরঞ্জাম পাচ্ছেন। তবুও কোনও সমস্যা থাকলে মিটিয়ে দেওয়া হবে। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী জেলাশাসককে বলেন, ‘‘যদি কর্মীরা মাস্ক না পেয়ে থকেন। তাহলে এজেন্সিটাকেই ব্লাক লিস্টেড করে হটিয়ে দাও। মাইনে দেবে না, মাস্ক দেবে না, এ আবার কী!’’ রাজীব জানান, রাজ্যের তরফে সাড়ে তিন কোটি মাস্ক সংগ্রহ করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy