Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in Midnapore

অ্যাম্বুল্যান্স চালক যোগে নিভৃতবাসে ২৯

ঘাটাল শহরে ভাড়ায় থাকেন ওই অ্যাম্বুল্যান্স চালক। বাড়ি ঘাটালেরই এক গ্রামে। ওই যুবক করোনা পজ়িটিভ হওয়ার পরে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে তৎপরতা শুরু হয়েছিল ঘাটালে।

জীবাণুনাশ: ঘাটাল শহরে চলছে স্প্রে। ছবি:কৌশিক সাঁতরা

জীবাণুনাশ: ঘাটাল শহরে চলছে স্প্রে। ছবি:কৌশিক সাঁতরা

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২০ ০১:২৯
Share: Save:

‘নিশ্চয় যান’ অ্যাম্বুল্যান্সের চালক করোনা আক্রান্ত হওয়ায় উদ্বেগ ছড়িয়ে স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের অন্দরে। ঘাটালের বাসিন্দা ওই যুবকের সংস্পর্শে কতজন এসেছেন, জরুরি ভিত্তিতে তার খোঁজখবর শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, লকডাউন চলাকালীন ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়া অনেককেই ঘাটালে নিয়ে এসেছেন ওই অ্যাম্বুল্যান্স চালক। এ ছাড়া এই পর্বে রোগী নিয়ে কলকাতা, মেদিনীপুরেও গিয়েছিলেন তিনি। ফলে, আক্রান্ত চালকের সংস্পর্শে কতজন এসেছেন, হন্যে হয়ে তার খোঁজ চলছে। শুক্রবার পর্যন্ত মোট ২৯ জন নিভৃতবাস কেন্দ্রে রয়েছেন।

সংস্পর্শে আসা যাঁদের চিহ্নিত করা গিয়েছে, তাঁদের নিভৃতবাসে পাঠানোও শুরু হয়েছে। এঁদের মধ্যে আছেন ঘাটাল হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা। শুরু হয়েছে পরীক্ষাও। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “শুক্রবার আক্রান্ত যুবকের স্ত্রী-সহ পরিবারের চার জনের করোনা পরীক্ষা করা হবে। দুই চিকিৎসক-সহ ঘাটাল হাসপাতালের ন’জন স্বাস্থ্য কর্মীর করোনা পরীক্ষা করা হবে শনিবার। আর ওই অ্যাম্বুল্যান্স চালকের সূত্রে ঘাটাল হাসপাতালের আইসোলেশন ও মেডিসিন বিভাগের দুই নির্দিষ্ট ওয়ার্ড বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রোগীদের অন্য ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।”

ঘাটাল শহরে ভাড়ায় থাকেন ওই অ্যাম্বুল্যান্স চালক। বাড়ি ঘাটালেরই এক গ্রামে। ওই যুবক করোনা পজ়িটিভ হওয়ার পরে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে তৎপরতা শুরু হয়েছিল ঘাটালে। শুক্রবার সকাল থেকে ঘাটাল শহরে বেশ কিছু এলাকায় অবাধ যাতায়াতে রাশ টানা হয়। শহরের ১৭টি ওয়ার্ডে বিক্ষিপ্ত ভাবে বসানো হয়েছে পুলিশি পাহরা। গ্রামীণ ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের বিশেষ কারণ ছাড়া শহরে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। শহরে আনাজ বাজারের সময় সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে শহরের নির্দিষ্ট এলাকা সিল করে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়েছিল। শুক্রবার ঘাটাল শহর জুড়ে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়। পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীরা এ দিন ওই যুবকের ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।

তৎপরতার ছবি ঘাটাল হাসপাতালেও। বৃহস্পতিবার রাতেই আইসোলেশন-সহ গোটা ঘাটাল হাসপাতালে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়। দুই চিকিৎসক-সহ মোট ন’জন স্বাস্থ্যকর্মীকে গৃহ পর্যবেক্ষণে (হোম আইসোলেশন) রাখা হয়েছে। দু’-একদিনের মধ্যে তাঁদের মেদিনীপুরে পাঠানো হতে পারে বলে খবর। তবে এ দিনও ঘাটাল হাসপাতালে রোগী ভর্তিতে কোনও প্রভাব পড়েনি। মেডিসিন ওয়ার্ডের রোগীদের অন্য ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

করোনা আক্রান্ত ওই অ্যাম্বুল্যান্স চালক সাম্প্রতিক কালে ঠিক কোথায় গিয়েছিলেন, তা নির্দিষ্ট করে জানতে পারেনি প্রশাসন। আক্রান্ত যুবকের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখে জানার চেষ্টা চলছে তিনি কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন। জানা যাচ্ছে, ওই যুবক দিনের বেশিরভাগ সময়ই থাকতেন হাসপাতালে চত্বর এবং শহরের প্রাণকেন্দ্র এলাকায়। অন্য অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। নিয়মিত মদের আসরেও যেতেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের সংস্পর্শে আসা অনেককেই শুক্রবার চিহ্নিত করে গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকতে বলা হয়েছে। আর পাঁচ অ্যাম্বুল্যান্স চালককে সরকারি নিভৃতবাস কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। গৃহ পর্যবেক্ষণে পাঠানো হয়েছে অ্যাম্বুল্যান্সের মালিককেও। আর কয়েকজন রোগীকেও চিহ্নিত করে গৃহ পর্যবেক্ষণে পাঠানো হয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE