নেতাজির ছবি নিয়ে শোভাযাত্রা। তমলুকে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস
মনীষীদের জন্মদিন বা মৃত্যুবার্ষিকীতে সাধারণত তাঁদের শ্রদ্ধা জানিয়ে থাকে রাজ্যের শাসকদল। দলীয় নেতাদের ছবি দিয়ে সেই সংক্রান্ত পোস্টার-ব্যানারও লাগানো হয়। কিন্তু দেশনেতা সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতিতে তাঁর ছবিতে হল না মাল্যদান। উঠল না জাতীয় পতাকাও। এ নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছে শাসকদল।
বৃহস্পতিবার নেতাজির ১২৪তম জন্মজয়ন্তী। তা পালন করার জন্য প্রতিটি ব্লক প্রশাসনকে একটি নির্দেশিকা পাঠিয়ে দিয়েছিল নবান্ন থেকে। ওই নির্দেশিকায় প্রতিটি প্রশাসনিক ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, নেতাজির প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, এবং সুভাষ উৎসব পালন করার কথা বলা হয়েছিল। এ জন্য ব্লক পিছু অর্থও বরাদ্দ করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু এ দিন কাঁথি-৩ ব্লকে প্রশাসনিক ভবনে চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি। এমনকী, নেতাজির প্রতিকৃতিতে মাল্যদানও পর্যন্ত করা হয়নি বলে অভিযোগ।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক ‘বিতর্ক’। নেতাজিকে অবমাননা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি রাজদুলাল নন্দ বলেন, ‘‘জাতীয় পতাকা উত্তোলন বা নেতাজির ছবিতে মাল্যদান না হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি অবদান যাঁর, তাঁকে এভাবে অসম্মান করাটা পঞ্চায়েত সমিতির উচিত হয়নি।’’ তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপিও। বিজেপির জেলা সভাপতি (কাঁথি) অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওদের দলে একজনই নেতাজি রয়েছেন। তাঁকে সম্মান জানাতেই ব্যস্ত শাসকদল।’’
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলকে কাঠগোড়ায় তুলে জেলা সিপিএম নেতা ঝাড়েশ্বর বেরা বলেন, ‘‘নেতাজির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে অবশ্যই প্রশাসনিক ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা দরকার ছিল। জনপ্রতিনিধিরা এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষকে মনীষীদের আদর্শ অনুসরণ করার কথা বলেন। কিন্তু তাঁরাই যদি মনীষীদের এভাবে অবজ্ঞা করেন, তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।’’
নবান্নের নির্দেশের পরেও নেতাজির জন্মজয়ন্তী পালন করা হল না কেন? বিষয়টি জানা নেই বলেই এড়িয়ে যান পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বিকাশ বেজ। তাঁর দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং বিডিও নেতাজি জন্মজয়ন্তীর মূল দায়িত্বে ছিলেন। তাই কি হয়েছে তাঁরাই ভাল বলতে পারবেন।’’ এ ব্যাপারে ফোন করা হয় বিডিও নেহাল আহমেদকে। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কৃষ্ণা দাস অবশ্য বলেন, ‘‘ব্লক এলাকার অন্তর্গত কুমিরদা গ্রাম পঞ্চায়েতে সরকারি নির্দেশ মেনে সুভাষ উৎসব হয়েছে। তাই নেতাজির প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ সেখানেই জানানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy