ভাঙচুর হওয়া তৃণমূল কর্মীর বাড়ি। খেজুরিতে। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।
চব্বিশ ঘণ্টা আগে কাঁথিতে জনসভা করে গিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ অভিযোক বন্দ্য়োপাধ্যায়। তারপর দিনই প্রধানমন্ত্রীর সরকারি কর্মসূচি ও জনসভা হয়ে গেল। আর এই সময়ের মধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক গোলমালে অশান্ত হল পূর্ব মেদিনীপুর। যার দায় পড়ল তৃণমূল, বিজেপি দু’দলের উপরেই।
প্রধানমন্ত্রী সবার আগে বিজেপির প্রস্তুতি সভায় হামলার অভিযোগ যেমন উঠেছে নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। তেমনই রবিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভায় যাওয়ার পথে বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে তৃণমূলের নেতাদের ওপর সশস্ত্র হামলা অভিযোগ উঠল। ঘটনায় খেজুরি-২ ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ করণ এবং তাঁর ভাই রাজীব করণ জখম হয়েছেন। রাজীবকে তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, হলদিয়ায় রবিবার প্রধানমন্ত্রীর সভা উপলক্ষে শনিবার প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে বিজেপি। নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের আমদাবাদ ২ পঞ্চায়েতের নতুন বাজার এলাকায় ওই দিন বিকেল পাঁচটা নাগাদ সভা চলাকালীন কিছু দুষ্কৃতী বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের ওপর চড়াও হয়। তাঁদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তিন বিজেপি কর্মী জখম হন। তাঁদের তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীপক দাস নামে এক বিজেপি কর্মীর আঘাত গুরুতর হওয়ায় শনিবার রাতেই তাঁকে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। অভিযোগ, নন্দীগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তারাপদ খাটুয়া তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁকেও মারধর করা হয়। তিনি তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, ‘‘নিশ্চিতভাবে এটা তৃণমূল বুঝে গিয়েছে এই বিধানসভা ভোটে তারা হারছেই। কারণ মানুষ তাদের সাথে নেই। তাই তারা হিংসার রাজনীতি করছে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান বলেন, ‘‘আদি বিজেপি এবং আর নব্য বিজেপির মধ্যে গণ্ডগোল।এর সঙ্গে তৃণমূল যুক্ত নয়। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ।’’
প্রসঙ্গত, শনিবার কাঁথিতে অভিষেকের জনসভার পর রাত থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে খেজুরি। খেজুরি-১ ব্লকের বীরবন্দর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বোমাবাজি এবং গাড়ি, বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে। গোলাবাড়ি বুথের পঞ্চায়েত সদস্য শ্যামলী বেরার বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি অশোক আদক নামে ওই গ্রামেরই এক তৃণমূল কর্মীর বাড়ি ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার সকালে গোলাবাড়ি গ্রামে যান ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব। খেজুরি-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য বিমান নায়ক বলেন, ‘‘রাতভর এলাকায় বোমাবাজি এবং ভাঙচুর চালিয়েছে বিজেপির দুষ্কৃতীরা। তাদের গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশকে সবিস্তার জানিয়েছি।’’
তবে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। দলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ বার বিধানসভা ভোটে বিদায় নিশ্চিত জেনেই তৃণমূল নানা ভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে। কোনও ঘটনার সঙ্গেই বিজেপি কর্মীরা জড়িত নয়। বরং এদিন হেঁড়িয়ায় প্রধানমন্ত্রীর ছবি-সহ ব্যানার একাধিক জায়গায় ছিঁড়ে দিয়েছে তৃণমূলের কর্মীরা।’’
অশান্তির খবর অবশ্য অস্বীকার করেছে পুলিশ-প্রশাসন। কাঁথির এসডিপিও সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘খবর পেয়ে এ ব্যাপারে সবিস্তার খোঁজ নিয়েছি। কোথাও কিছু ঘটেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy