Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
আর্দ্রতা মাপক যন্ত্র ছাড়াই ধানের খাদ বাদ

সরকারি ধান কেনায় কারচুপির অভিযোগ

সারা বছর ধরে সরকারি স্থায়ী ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে ধান কেনার কথা থাকলেও মূলত ধান ওঠার মরসুমেই ধান কেনে সরকার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২০ ০০:৫৪
Share: Save:

ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জেলায় সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ব্লক পিছু একটি করে স্থায়ী ধান ক্রয় কেন্দ্রে চলছে কৃষকদের থেকে ধান কেনার কাজ। নিয়ম অনুযায়ী আর্দ্রতা মাপক যন্ত্র দিয়ে ধানের ভিতরের আর্দ্রতা মেপে ধানের খাদ নির্ধারণ করা হয়।

কিন্তু পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের কৃষকদের একাংশের অভিযোগ আর্দ্রতা মাপক যন্ত্র ব্যবহার না করেই ধান কেনার দায়িত্বে থাকা মিল মালিকরা কুইন্টাল প্রতি ৫ থেকে ৮ কেজি ধান খাদ হিসেবে বাদ দিয়ে দিচ্ছে। এর জেরে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে চাষিদের।

সারা বছর ধরে সরকারি স্থায়ী ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে ধান কেনার কথা থাকলেও মূলত ধান ওঠার মরসুমেই ধান কেনে সরকার। পূর্ব মেদিনীপুরে ব্লক পিছু একটি করে স্থায়ী ধান ক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। যে সমস্ত জায়গায় কিসান মান্ডি রয়েছে সেখানে ধান কেনা হয়। যেখানে কিসান মান্ডি নেই সেই সমস্ত জায়গায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় গড়ে উঠেছে একটি করে স্থায়ী ধান ক্রয় কেন্দ্র। স্থায়ী ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে কুইন্টাল পিছু ধানের সরকারি সহায়ক মূল্য ১৬৫০ টাকা। কিসান মান্ডিগুলিতে বহন খরচ হিসেবে কৃষকদের অতিরিক্ত ৫০ টাকা দেওয়া হয়। ধান কেনার আগে দায়িত্বপ্রাপ্ত মিল মালিকরা আর্দ্রতামাপক যন্ত্রের সাহায্যে ধানের ভেতরকার আর্দ্রতা মেপে নেন। অর্থাৎ ধান কতটা পরিমাণ ভেজা রয়েছে তার ওপর ধানের ওজন নির্ধারণ করে। ধান বেশি ভেজা থাকলে খাদ বাবদ কুইন্টাল পিছু একটা অংশ বাদ দেওয়া হয়। পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের চাষিদের একাংশের অভিযোগ সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে ধানের আর্দ্রতা না মেপেই মিল মালিকরা কুইন্টাল পিছু ৫ থেকে ৮ কেজি ধান খাদ হিসেবে বাদ দিয়ে দিচ্ছেন। ফলে ক্ষতির মুখে পড়ছেন তাঁরা।

মাইশোরার উত্তম পাত্র বলেন, ‘‘পাঁশকুড়া কৃষক বাজারে ধান বিক্রি করতে গিয়েছিলাম। মিল মালিক ধানের আর্দ্রতা না মেপেই কুইন্টাল পিছু ৮ কেজি করে ধান বাদ দিয়েই ধানের হিসাব করলেন। ফলে অনেক টাকার ক্ষতি হল।’’ একই অভিযোগ কোলাঘাটের উত্তর জিয়াদা গ্রামের কৃষক শ্যামল বাগের। তাঁর কথায়, ‘‘কয়েকদিন আগে বড়দাবাড়ে সরকারি স্থায়ী ধান ক্রয় কেন্দ্রে ২৪ বস্তা ধান বিক্রি করেছি। ধানের আর্দ্রতা না মেপেই কুইন্টাল প্রতি ৫ শতাংশ হারে ধান খাদ বাবদ বাদ দেওয়া হয়েছে। মিল মালিকরা মনগড়া হিসেব করে খাদ বাদ দেওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।’’

বিষয়টি নিয়ে সরব কৃষক সংগ্রাম পরিষদও। সংগঠনের সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে আর্দ্রতা মাপক যন্ত্র ব্যবহার না করে মিল মালিকরা নিজেদের ইচ্ছামতো খাদ বাদ দিচ্ছেন। এটা এক ধরনের কারচুপি। এতে চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। আমাদের দাবি ধান ক্রয় কেন্দ্রে আর্দ্রতা মাপক যন্ত্র ব্যবহার করা হোক।’’

জেলার খাদ্য নিয়ামক সৈকত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই ধরনের অভিযোগ আমার কাছেও এসেছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে প্রতিটি ব্লক কৃষি অফিসে তিন সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। কৃষকরা ওই কমিটির কাছে অভিযোগ জানালে নিশ্চয় সুরাহা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Fraud Paddy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy