কবরস্থানের জমি ঘিরে পুনরুদ্ধার করেছেন স্থানীয়রাই। চন্দ্রকোনায়। নিজস্ব চিত্র।
সরকারি জমি বেদখল নিয়ে সরব হয়েছেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। সরকারি জমি দখলে কোনও নেতা-মন্ত্রী জড়িত থাকলে কড়া পদক্ষেপের বার্তাও দিয়েছেন। এই আবহে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায় সরকারি খাস জমি-সহ একটি কবরস্থান দখলের অভিযোগ উঠেছে জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে।
কবরস্থান দখল নিয়ে শুক্রবার হইচই পড়ে। তারপর স্থানীয়রাই তা বেড়া দিয়ে ঘিরে পুলিশ ও প্রশাসনের নানা স্তরে অভিযোগ জানান। তাঁদের দাবি, ওই জমি কবরস্থান বলেই সরকারি ভাবে নথিভুক্ত। কিন্তু তৃণমূলের এক প্রভাবশালী নেতার মদতে সেই জমি রায়তি বলে রেকর্ড করিয়ে বিক্রির চেষ্টা চলছিল। এই জমি কেলেঙ্কারির নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
গোটা ঘটনায় জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা নিয়ে ভূমি দফতরের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের বিডিও উৎপল পাইক বলেন, “কবরস্থানটি উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।” চন্দ্রকোনা পুরসভার চেয়ারম্যান প্রতিমা পাত্রেরও বক্তব্য, “অভিযোগ পেয়েছি। পুরসভা কড়া পদক্ষেপ করবে। দখল হওয়া সরকারি জমি পুনরুদ্ধার করা হবে।”
চন্দ্রকোনা পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের নরহরিহরি মৌজায় নির্দিষ্ট একটি দাগের ৩৬ শতক জমি কবরস্থান বলে উল্লেখিত ছিল। সেটি বহু বছর আগে থেকেই কবরস্থান হিসেবে রয়েছে বলে খবর। বছর খানেক আগে ওই জমি বেদখল হয়ে যায়। তা ছাড়া, চন্দ্রকোনা শহরে বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া নির্দিষ্ট একটি দাগের মোট ২৪৮ শতক জমি ঘেরা হয়েছিল। তার মধ্যে একটা বড় অংশ রায়ত জমি। কিন্তু তার সঙ্গে কিছুটা সরকারি জমিও রয়েছে।
ওই রায়ত জমির পাশেই ছিল ৩৬ শতক কবরস্থানের জমি। তার সঙ্গে আরও কিছুটা সরকারি খাস জমি ও একটি ডোবাও ছিল। রাতারাতি ওই কবরস্থান ডাঙা বাঁশবাগান হিসেবে চরিত্র বদল করে বেদখল যায় বলে অভিযোগ। মাটি ফেলে জায়গাটি সমান করে প্লট হিসেবে বিক্রির তোড়জোড় শুরু হয়। সরকারি ডোবাটিও মাটি ফেলে বুজিয়ে ফেলা হয়।তখন থেকেই এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ ছিল বলে স্থানীয়দের। এ বার মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি জমি বেদখল নিয়ে বার্তার পরে শুক্রবার ওই কবরস্থানের জমি ঘিরে বাঁশের বেড়া দিয়ে সরব হন স্থানীয়দের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, সবাইকে অন্ধকারে রেখে রায়ত জমি বলে কবরস্থানের জমি দখল করে নিয়েছিল জমি মাফিয়ারা। আর এ সবের সঙ্গে চন্দ্রকোনার ওই প্রভাবশালী নেতার ঘনিষ্ঠরা জড়িত। ভূমি দফতরের একাংশও সরাসরি জড়িত। পুলিশ-প্রশাসন নিরপেক্ষ তদন্ত করলেই জমি কেলেঙ্কারির পুরো বিষয়টি সামনে আসবে বলে স্থানীয়দের দাবি।
জেলা ভূমি দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শেষ হলেই কতটা জমি বেদখল হয়েছে,তা সামনে আসবে। সব উদ্ধার করা হবে। কবরস্থানের শ্রেণি পরিবর্তনের বিষয়টিরও তদন্ত শুরু হয়েছে।” তৃণমূলের চন্দ্রকোনা ২ ব্লক সভাপতি হীরালাল ঘোষও বলছেন, “চন্দ্রকোনার ওই কবরস্থান ও সরকারি জমি দখলের ঘটনা দলের সবোর্চ্চ মহলে পৌঁছেছে। দলীয় ভাবেও তদন্ত হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy