Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Duare sarkar

দুয়ারে শিবিরে হয়রানি, ধমক জেলাশাসকের

বাসিন্দার অভিযোগ, জমির নথিপত্র নিয়ে কৃষকবন্ধু প্রকল্পে আবেদন জমা দিতে গেলে তাঁকে বলা হয় যার কাছ থেকে জমি কেনা হয়েছিল তাঁর সচিত্র ভোটার পরিচয় পত্র ও আধার কার্ডের প্রতিলিপি আনতে।

 ময়নায় দুয়ারে সরকারের  শিবিরে জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র

ময়নায় দুয়ারে সরকারের শিবিরে জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২২ ০৭:৩২
Share: Save:

লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কৃষকবন্ধু ও বার্ধক্য ভাতা-সহ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির চালু করেছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় শিবির করে এর জন্য আবেদন জমা নেওয়া হচ্ছে। ১ নভেম্বর থেকে রাজ্যজুড়ে পঞ্চম দফায় এই শিবির চালু হয়েছে।

কিন্তু সেই ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে আবেদন জমা দিতে আসা বাসিন্দাদের হয়রান করা হচ্ছিল বলে অভি‌যোগ ওঠে একাংশ কর্মীর বিরুদ্ধে। বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না ব্লকের ময়না-১ পঞ্চায়েত এলাকায় দুয়ারে সরকার শিবিরে বাসিন্দাদের হয়রানির অভিযোগে কৃষি দফতরের এক কর্মীকে ধমক দিলেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। যা নিয়ে প্রশাসনিক মহলে শোরগোল পড়েছে। ওই কর্মীকে ধমকের পাশাপাশি শিবিরে থাকা জেলার সমস্ত সরকারি কর্মী-আধিকারিকদের এবিষয়ে সতর্কও করেছেন জেলাশাসক।

ময়না-১ ও ২ পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের জন্য বুধবার ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির হয়েছিল। ময়না-১ পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের জন্য স্থানীয় গড়সাফাৎ প্রাথমিক স্কুলের মাঠে শিবির করা হয়। ওই দিন বিকেলে সেই শিবির পরিদর্শনে এসেছিলেন জেলাশাসক। শিবিরে জেলাশাসক বাসিন্দাদের সাথে সরাসরি কথা বলছিলেন। সেই সময় কৃষকবন্ধু প্রকল্পে আবেদন জানাতে আসা এক বাসিন্দা জমির নথিপত্র সংক্রান্ত সমস্যার অজুহাতে তাঁকে আবেদন জমা দিতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি ওই অভিযোগ পেয়ে সটান হাজির হন কৃষি দফতরের শিবিরে। শিবিরে থাকা কৃষি দফতরের কর্মীর কাছে তিনি জানতে চান ওই ব্যক্তির আবেদন জমা নেওয়া হচ্ছে না কেন?

বাসিন্দার অভিযোগ, জমির নথিপত্র নিয়ে কৃষকবন্ধু প্রকল্পে আবেদন জমা দিতে গেলে তাঁকে বলা হয় যার কাছ থেকে জমি কেনা হয়েছিল তাঁর সচিত্র ভোটার পরিচয় পত্র ও আধার কার্ডের প্রতিলিপি আনতে। ওই বাসিন্দার অভিযোগ, ওই নথি জোগাড় করা মুশকিল সে কথা জানানো সত্ত্বেও তাঁর আবেদন জমা নেওয়া হয়নি। অভিযোগ শুনে জেলাশাসক শিবিরে কর্তব্যরত কৃষি দফতরের কর্মীর কাছে জানতে চান, আপনাকে যদি এভাবে নথি জোগাড় করতে বলা হয় আপনি তা পারবেন কি? তা হলে ওই ব্যক্তির পক্ষে ওই সমস্ত নথি জোগাড় করা কী করে সম্ভব? আর এই কারণে আবেদন জমা না নিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে কেন? এরপরই জেলাশাসক ওই কর্মীকে (কৃষি প্রযুক্তি সহায়ক) ধমকের পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। সেই সঙ্গে শিবিরে থাকা সমস্ত সরকারি কর্মী-আধিকারিকদের আরও মানবিক হওয়ার পরামর্শ দেন।

‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে মানুষকে হয়রানির অভিযোগে সরকারি কর্মীকে জেলাশাসক ধমক দিয়েছেন, এমন ঘটনা জানাজানি হওয়ায় প্রশাসনিক মহলে আলোড়ন পড়ে। প্রশাসন সূত্রের খবর, ময়না ব্লকে ওই ঘটনার পরে জেলাশাসক বুধবার সন্ধ্যায় জেলার সব বিডিও, সরকারি বিভিন্ন দফতরের জেলা আধিকারিকদের নিয়ে ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠক করে দুয়ারে সরকার শিবিরে আসা মানুষকে কোনও অজুহাতেই হয়রান না করতে সতর্ক করে দেন। বাসিন্দারা যাতে শিবিরে এসে সবরকম সাহায্য পান সে জন্য সমস্ত দফতরের কর্মীদের নির্দেশও দেওয়া হয়।

যদিও ধমকের প্রসঙ্গ এড়িয়ে ময়নার বিডিও রাজীব সরদার বলেন, ‘‘বুধবার দুয়ারে সরকার শিবিরে একটি বিষয়ে সমস্যা হয়েছিল। তা নিয়ে জেলাশাসক প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন।’’ জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘ময়নায় ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে গিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে কিছু অভিযোগ পাই। তারপর শিবিরে কর্তব্যরত কর্মীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে । সাধারণ মানুষ যাতে শিবিরে এসে তাঁদের বিভিন্ন আবেদন জানাতে পারেন সেজন্য দফতরের কর্মীদের মানবিক হতে বলা হয়েছে। জেলার সমস্ত বিডিও, বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদেরও এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Duare sarkar East Midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy