Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
শিশু শ্রমিক থেকে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু— কী হাল এদের স্কুলের। খোঁজ নিল আনন্দবাজার।
Child Labor

Child labor: স্কুলের সঙ্গে বন্ধ শিশু শ্রমিক ভাতাও 

করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনে আর্থিক অনটনের মধ্যেও ১৩ মাস ধরে ভাতা পাচ্ছেন না শিশুশ্রমিক স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা।

প্রতীকী ছবি।

গোপাল পাত্র
এগরা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:২৫
Share: Save:

করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনে আর্থিক অনটনের মধ্যেও ১৩ মাস ধরে ভাতা পাচ্ছেন না শিশুশ্রমিক স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা। সংসার চালাতে অনেকেই টিউশনি করছেন। ব্লক থেকে জেলা প্রশাসন সর্বত্র আবেদন জানালেও মেলেনি প্রাপ্য ভাতা।

অভাবের কারণে অনেক পরিবারেই ছোট ছেলেমেয়েকে কাজে পাঠানো হয়। যার জেরে দেশে শিশু শ্রমিকের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। পেটের ভাত জোগাড় করতে দোকান ও বাজার, ইটভাটায় শিশুশ্রমিক হিসেবে কাজ করতে দেখা যায় নাবালক ছেলেমেয়েদের। এই সকল শিশুদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রের জাতীয় শিশু শ্রমিক প্রকল্পে একাধিক শিশুশ্রমিক স্কুল তৈরি হয়। প্রতিটি রাজ্যে জেলা ভিত্তিক এই স্কুলে ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশু শ্রমিকদের বিনামূল্যে শিক্ষা ও মিড-ডে মিলের খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। পূর্ব মেদিনীপুরে এখনও পর্যন্ত ৩০টি শিশুশ্রমিক স্কুল রয়েছে। এক সময়ে ভিক্ষাবৃত্তি ও কাগজ কুড়িয়ে কিংবা দোকানে কাজ করে তারা পরিবারের জন্য অর্থ উপার্জন করতো। সেই সব শিশুদের চিহ্নিত করার পর প্রায় বারোশো ছাত্রছাত্রী এই স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে।

জেলায় ৩০টি শিশুশ্রমিক স্কুলে শিক্ষক শিক্ষকা ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে সংখ্যাটা প্রায় একশো। কেন্দ্রীয় সরকার চুক্তিভিত্তিক এই সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের ভাতা দেয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে গত ১৩ মাস ধরে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভাতা বন্ধ রয়েছে। তবে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত মিড-ডে মিল দেওয়া-সহ তাদের পড়াশোনার মূল্যায়ন অবশ্য অব্যাহত। লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকায় তারা যাতে স্কুল বিমুখ না হয় সে জন্য নিয়মিত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এগরা ১২ নম্বর ওয়ার্ডে এমনই একটি শিশুশ্রমিক স্কুলে এখন ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৪১। স্কুলে দু'জন শিক্ষিকা ও একজন শিক্ষাকর্মী রয়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে এমনিতেই আর্থিক সঙ্কটে পড়ে্ছেন মানুষ। তার মধ্যেও ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে টানা তেরোমাস ধরে তাঁদের প্রদেয় ভাতা বন্ধ রয়েছে।

জেলায় এই প্রকল্পের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন জেলা শাসক। যদিও ভাতা বন্ধ থাকার বিষয়টি তাঁক জানা নেই বলে তিনি দাবি করেন। এগরার ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বনানী দাস মহাপাত্রের সংসার চলে এই টাকায়। দীর্ঘ রোগভোগের পরে দুর্গাপুজোর দশমীর রাতে স্বামীকে হারিয়েছেন। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে এগরা শহরে থাকেন। টাকার অভাবে ছেলের উচ্চশিক্ষা বন্ধ। বনানী বলেন, ‘‘ভাতা বন্ধ থাকায় সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে টিউশনি শুরু করেছি। তাতে আর দিদিদের সহযোগিতায় কোনওরকমে দিন কাটছে।’’ জেলার অন্য শিশু-শ্রমিক স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদেরও একই হাল। ব্লক থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে একাধিক বার দরবার করলেও আজ পর্যন্ত ভাতা মেলেনি বলে অভিযোগ তাঁদের।

জেলাশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজি বলেন, ‘‘ভাতা বন্ধ থাকার বিষয়টি জানা নেই। অবিলম্বে খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Child Labor allowance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy