Advertisement
E-Paper

হোটেলে রেখে গিয়েছেন ছেলে, অপেক্ষায় বৃদ্ধা

গত ১৮ মার্চ বছর পঁয়ষট্টির ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে ঝাড়গ্রামে বেড়াতে আসেন তাঁর ছেলে ও বৌমা। উঠেছিলেন ঘোড়াধরার একটি হোটেলে। প্রথমে দু’টি ঘর ভাড়া নেন তাঁরা। ২০ মার্চ বৌমা হোটেল থেকে চলে যান।

— প্রতীকী চিত্র।

রঞ্জন পাল

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৫ ০৬:৪৫
Share
Save

ছেলে-বৌমার সঙ্গে কলকাতা থেকে বেড়াতে এসেছিলেন। তবে রাতারাতি বদলাল দৃশ্যপট। প্রথমে পুত্রবধূ, তার পরে ছেলেও হোটেলে একা বৃদ্ধাকে রেখে চলে গেলেন। ঘটনায় বিড়ম্বনায় পড়ে ঝাড়গ্রামের ওই হোটেল কর্তৃপক্ষ পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। পুলিশও উদ্যোগী হয়েছে ছেলের কাছে বৃদ্ধাকে ফিরিয়ে দিতে।

গত ১৮ মার্চ বছর পঁয়ষট্টির ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে ঝাড়গ্রামে বেড়াতে আসেন তাঁর ছেলে ও বৌমা। উঠেছিলেন ঘোড়াধরার একটি হোটেলে। প্রথমে দু’টি ঘর ভাড়া নেন তাঁরা। ২০ মার্চ বৌমা হোটেল থেকে চলে যান। তার পরে মা ও ছেলে একই ঘরে থাকছিলেন। ২২ মার্চ ছেলে ‘দাড়ি কাটতে যাচ্ছি’ বলে বেরিয়ে যান। আর ফেরেননি। তার পর থেকে প্রতিদিনই হোটেল কর্তৃপক্ষ ফোনে যোগাযোগ করেছেন। ছেলে বলেছেন, তিনি ঝাড়গ্রামে ফিরবেন। ফেরেননি।

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে হোটেল-মালিক দীপঙ্কর আচার্য লিখিত ভাবে বিষয়টি পুলিশকে জানান। ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ বৃদ্ধার ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলে। কিন্তু তিনি ‘যাব যাব’ বলে আসেননি।

ইতিমধ্যে বৃদ্ধা অসুস্থ হয়ে পড়ায় পুলিশই তাঁকে বুধবার ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন।

হোটেল মালিক দীপঙ্কর বলছেন, ‘‘ভদ্রলোক আগেও কয়েক বার একা থেকেছিলেন। এ বার সপরিবার আসেন। এখন দেখছি, বৃদ্ধা মাকে ফেলে চলে গিয়েছেন ছেলে ও বৌমা। বাধ্য হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি।’’

এ দিকে, হোটেলে ছেলে যে পরিচয়চত্রের প্রতিলিপি জমা দিয়েছেন, সেখানে উল্লিখিত ঠিকানায় খোঁজ করে পুলিশ জেনেছে, সে বাড়িতে তাঁরা থাকেন না।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ফোনে সেই ব্যক্তি অবশ্য ফোনে দাবি করেন, ‘‘আর্থিক সমস্যা মেটাতে জামশেদপুরে এসেছি। সমস্যা মিটলে, কয়েক দিন পরে মাকে নিয়ে আসব। এমন নয়, যে মাকে ফেলে চলে এসেছি।’’ ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা বলেন, ‘‘আমরা চাইছি, ছেলে এসে মাকে ফিরিয়ে নিয়ে যান। কিন্তু উনি আসছেন না। ছেলে না এলে, আইনত এ বার পদক্ষেপ করা হবে।’’

এ দিন বিকেলে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, স্যালাইন চলছে বৃদ্ধার। ছেলে-বৌমার কথা জানতে চাওয়ায় কাঁদো-কাঁদো গলায় বললেন, ‘‘ছেলে আসবে বলেছে। সে অপেক্ষায় আছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jhargram Hotel

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}