মহিষাদলে বিডিওকে ধমক। — নিজস্ব চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় ঠাঁই পেতে ঝুপড়িতে বাস পাকাবাড়ির মালিকের? সেই ‘চালাকি’ ধরে ফেলার পর কেন্দ্রীয় দলের সদস্যদের ধমকের মুখে পড়লেন পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের বিডিও। কী ভাবে পাকাবাড়ির মালিকের তালিকায় নাম উঠল তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা। যদিও বিডিওর দাবি, তিনি কোনও চাপের মুখে এমন কাজ করেননি।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা যান মহিষাদলের বেতকুন্ডু গ্রামে। সেখানে আবাস প্লাসের উপভোক্তা করিম আলির বাড়িতে গিয়ে তাঁরা দেখতে পান, আশপাশে কয়েকটি পাকাবাড়ির মাঝে করিম থাকেন একটি ঝুপড়িতে। করিমের দাবি, তাঁর ৩ ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাঁরা বাইরে থাকেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। করিম বলেন, ‘‘এক ছেলে বাড়ি দূরে ঘর করেছে। এক ছেলে পাকাবাড়ি বানিয়ে বাইরে চলে গিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘স্ত্রী, এক বৌমা, নাতি এবং নাতনিদের নিয়ে আমি ঝুপড়িতেই বসবাস করি।’’
করিমের এই যুক্তি অবশ্য মানতে রাজি হননি কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা। তাঁরা করিম আলির বাড়ির ভিতরেও যান। এর পর কেন্দ্রীয় দলের এক সদস্য মহিষাদলের বিডিও যোগেশচন্দ্র মণ্ডল এবং বেতকুন্ডু পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক অসীম নায়েককে প্রশ্ন করেন, ‘‘পাকাঘর ছেড়ে এক কামরার ঝুপড়ি ঘরে গোটা পরিবার নিয়ে কী ভাবে বাস করেন করিম? এটা বিশ্বাস করা যায়?’’
এর পর কেন্দ্রীয় দলের ওই প্রতিনিধি বিডিও যোগেশচন্দ্রকে ধমকের সুরে বলেন, ‘‘যে কোনও সাধারণ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ দেখলেই বুঝে যাবেন এ ভাবে পাকা ঘর ছেড়ে এক কামরার ঝুপড়ি ঘরে স্ত্রী, ছেলে, বৌমা, নাতি এবং নাতনিদের নিয়ে করিম বসবাস করেন না। একটা সামাজিক বিষয়ও তো থাকে। এ ভাবে এক ঘরে এতগুলি মানুষ বসবাস করে এটা কি বিশ্বাস করা যায়?’’ বিডিওকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘হয় আপনারা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিতে এই ব্যক্তিকে আবাস তালিকায় ঠাঁই দিয়েছেন, অথবা আপনারা চাপের মুখে পড়ে ভয়ে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন।’’ যদিও চাপের কথা অস্বীকার করেছেন বিডিও যোগেশচন্দ্র।
গত বুধবার ময়নার বাকচা গ্রাম পঞ্চায়েতের এজমালিচক গ্রামে যান কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। ওই গ্রামের বাসিন্দা দুলাল বর্মণ-সহ ২৬টি পরিবারের নাম ইচ্ছাকৃত ভাবে আবাস প্লাসের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। কেন্দ্রীয় দলের ২ প্রতিনিধি দুলালের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান পাকাবাড়িতে থাকেন দুলাল এবং তাঁর পরিবার। কিন্তু তিনি সামনে থাকা একটি ঝুপড়ি দেখিয়ে নিজেদের নাম তুলেছিলেন আবাস প্লাসের তালিকায়। সেই নাম বাদ যাওয়ায় তাঁরা অভিযোগ জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে। বৃহস্পতিবার এমনই ঘটনা ঘটেছে নন্দকুমার থানার কুমারচক গ্রামেও। কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা জানতে পারেন, পাকাবাড়ির মালিকদের নাম রয়েছে আবাস উপভোক্তার তালিকায়। এ নিয়ে সমীক্ষার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের ধমক দেন কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy