কমিশনের বজ্র আঁটুনিই সার, আসলে ভোট করে গিয়েছে ‘ভূতে’রাই, প্রথম দফার ভোটে এমন অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার প্রথম দফার ভোটের দিন পথে দেখা যায়নি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। বুথ চত্বরেই ছিল তারা। আগামী সোমবার জেলার ১৩টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। যার মধ্যে রয়েছে গড়বেতা ও কেশপুরের মতো কেন্দ্রও। ওই দিনও বাহিনী ‘নিষ্ক্রিয়’ থাকলে অশান্তির আশঙ্কা করছে বিরোধীরা। জেলা প্রশাসনের অবশ্য বক্তব্য, দ্বিতীয় দফার ভোটও নির্বিঘ্নে হবে।
বিরোধীদের বক্তব্য, পুলিশ কেন্দ্রীয় বাহিনীকে প্রত্যন্ত এলাকায় পাঠাচ্ছেই না। শুধু বড় রাস্তায় টহল দিচ্ছে বাহিনী। তাতে ভোটারদের মনে কতটা আস্থা ফেরানো যাবে তা নিয়ে সংশয়ে বিরোধীরা। বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি ধীমান কোলে বলেন, “প্রত্যন্ত এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেখা মিলছে না। পুলিশ বলছে, পাঠাচ্ছি। অবশ্য এই আশ্বাসই সার!” জেলা কংগ্রেস সভাপতি বিকাশ ভুঁইয়াও বলেন, “প্রত্যন্ত এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চ হলেই মানুষের ভয় কাটবে। কিন্তু তা তো হচ্ছে না।”
একই মত সিপিএমের। দলের জেলা সম্পাদক তরুণ রায় বলছেন, “আমাদের দাবি বাহিনীকে শুধু কয়েকটি এলাকায় ঘুরিয়ে নিয়ে এলে হবে না। ঠিক ভাবে তাদের ব্যবহার করতে হবে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের যদিও কটাক্ষ, “বিরোধীরা সব কিছুতেই ভুল ধরে! কেন্দ্রীয় বাহিনী তাদের কাজ করছে। পুলিশও তাদের কাজ করছে। প্রথম দফার ভোট তো সুষ্ঠু ভাবেই হয়েছে।”
কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঠিক ভাবে ব্যবহার না করার অভিযোগ মানতে নারাজ পুলিশ-প্রশাসনও। জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা ও পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখরের বক্তব্য, বিভিন্ন এলাকাতেই বাহিনীর রুট-মার্চ চলছে।
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার পথে রুট মার্চ করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এক- একদিন বাহিনী ২০০-২৫০টি স্পর্শকাতর এলাকায় যাচ্ছে। যা শুনে এক সিপিএম নেতা বলছেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বসিয়ে রাখা হচ্ছে বলে তো আমরা বলছি না। প্রত্যন্ত এলাকার বাইরে দিয়ে গিয়েও কয়েক হাজার কিলোমিটার পথ পেরোনো যায়! ফলে, ওই পরিসংখ্যান দিয়ে কিছু বলা যায় না! বাহিনীকে স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে পাঠাতে হবে।”
বিরোধীদের বক্তব্য, গত লোকসভা ভোটও অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কমিশন। কিন্তু বাস্তবে উল্টোটাই ঘটেছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কার্যত বসিয়ে রাখা হয়েছিল। গত বেশ কয়েকটি ভোটেই এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বসিয়ে রাখার অভিযোগ ওঠে। অবশ্য গত লোকসভা ভোটে এটা মাত্রা ছাড়িয়েছিল বলেই মনে করে বিরোধী- শিবির। এ বার গোড়া থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহার নিয়ে রাজ্যকে কড়া বার্তা দিয়েছে কমিশন। অবশ্য ভোট যত এগিয়ে এসেছে, বাহিনীর ব্যবহার নিয়ে ততই সুর চড়াতে শুরু করে বিরোধী- শিবির। প্রথম দফার ভোটের পরে সেই সুর আরও চড়তে শুরু করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ভোটের জন্য আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে পুরোদমে কাজে লাগানো হচ্ছে। প্রথম দফার ভোটে ১৫০ কোম্পানি বাহিনী ছিল। এরমধ্যে ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলায় ১০৩ কোম্পানি। পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ জেলায়
৪৭ কোম্পানি।”
তাঁর কথায়, “ভূতুড়ে ভোটার ঠেকানো এবং নির্ভয়ে ভোটারদের ভোটদানের ব্যবস্থা করা, এটাই ছিল মূল চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ সাফল্যের সঙ্গেই উতরনো গিয়েছে।” এই পুলিশ- কর্তার আশ্বাস, দ্বিতীয় দফার ভোটও নিশ্চিন্তে নির্বিঘ্নে হবে।
দ্বিতীয় দফার ভোটে ‘ভূতে’র নেত্য বন্ধ করতে কতটা তৎপর হয় পুলিশ-প্রশাসন, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy