Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
midnapore

ধর্ষণে নিষ্ক্রিয়! কোর্টের রোষে এসপি, ওসি

নির্যাতিতা চান, ঘটনার তদন্তভার সিআইডিকে দেওয়া হোক। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে বিচারপতির নির্দেশ, এ ব্যাপারে ডিজি এবং স্বরাষ্ট্রসচিব যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবেন।

কলকাতা হাই কোর্ট।

কলকাতা হাই কোর্ট।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা, মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:১১
Share: Save:

গণধর্ষণের অভিযোগ জানাতে নির্যাতিতা থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ না-নিয়েই তাড়িয়ে দেয় তাঁকে। উপরন্ত ওই সময়ের সিসিটিভি ফুটেজও ‘উধাও’ হয়ে যায় থানা থেকে! পশ্চিম মেদিনীপুরের আনন্দপুর থানার এই ঘটনায় ওসি সুবীর মাঝি এবং পুলিশ সুপার (এসপি) দীনেশ কুমারকে কার্যত কাঠগড়ায় তুলেছে কলকাতা হাই কোর্ট। রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ, পশ্চিম মেদিনীপুরের এসপি এবং আনন্দপুর থানার ওসির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী প্রমাণ লোপাট, অভিযুক্তকে আড়াল করা এবং সরকারি কর্মী হিসাবে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ব্যাপারে ২২ সেপ্টেম্বর হাই কোর্টে রিপোর্ট পেশ করতে হবে ডিজিকে।

নির্যাতিতা চান, ঘটনার তদন্তভার সিআইডিকে দেওয়া হোক। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে বিচারপতির নির্দেশ, এ ব্যাপারে ডিজি এবং স্বরাষ্ট্রসচিব যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবেন। যে ভাবে ওসি এবং এসপি গণধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগে কার্যত নিষ্ক্রিয় থেকেছেন তা নিয়ে রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করেছে হাই কোর্ট। বিচারপতির মন্তব্য, এই বিষয়টি ডিজি এবং স্বরাষ্ট্রসচিবের খতিয়ে দেখা উচিত। পুলিশের ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ঘটনার পর ২৫ দিন কেটে গিয়েছে। তার ফলে বহু প্রমাণই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

১১ অগস্ট ওই মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। তাঁর স্বামী বলেন, ‘‘কয়েকজন আমার বাড়ির সামনে বেআইনি নির্মাণ করেছে। বাড়ি দখলের চেষ্টা করেছে। সেদিন ওরা (ধর্ষণে অভিযুক্তরা) আমাদের ডেকেছিল মীমাংসার জন্য। তার পরেই তিন জন মিলে আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে।’’ নির্যাতিতা থানায় গেলে তাঁকে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। তার পরেও দু’ বার গেলে অভিযোগ নেয়নি পুলিশ। নির্যাতিতা জানান, এসপি-কে লিখিত ভাবে জানানো হলেও কাজ হয়নি। ২৯ অগস্ট মেদিনীপুর কোর্ট এফআইআর রুজুর নির্দেশ দিলেও পাত্তা দেয়নি পুলিশ। তার পরেই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন নির্যাতিতা। ৬ সেপ্টেম্বর হাই কোর্টে শুনানির পরেই তড়িঘড়ি এফআইআর করে পুলিশ। তবে তার পরেও কাউকে গ্রেফতার কেন করা হয়নি, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিচারপতি মান্থা।

ঘটনা জানতে পেরেই ওসি এবং এসপি-র রিপোর্ট চেয়েছিল হাই কোর্ট। পুলিশের রিপোর্ট দেখে বিচারপতি সন্তুষ্ট হননি। বরং ৪ অগস্ট থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফুটেজ ‘উধাও’ হওয়াকে রহস্যময় এবং লজ্জাজনক আখ্যা দিয়েছেন। এই পর্বেই নির্যাতিতার আইনজীবী সৌম্যজিৎ দাস মহাপাত্র ওসি এবং এসপি-র বিরুদ্ধে এফআইআর হওয়া উচিত বলে সওয়াল করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ইচ্ছাকৃত ভাবেই ফুটেজ মুছে ফেলা হয়েছে।’’ এই ঘটনার পরে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে এফআইআর করতে দেরি হয়েছে। এ জন্য ওসি- র বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।" ওসি সুবীর মাঝি ফোন ধরে বলেছেন, "কিছু শোনা যাচ্ছে না। টাওয়ার (মোবাইল টাওয়ার) কেটে কেটে যাচ্ছে।’’

এ দিকে হাই কোর্টের নির্দেশের পরেও পুরোপুরি স্বস্তিতে নেই নির্যাতিতা। তাঁর স্বামী বলেন, ‘‘এখন আমার যে সাক্ষী আছে, তাঁকে প্রচুর চাপ দিচ্ছে। ওরা (অভিযুক্তরা) তো প্রভাবশালী।’’

অন্য বিষয়গুলি:

midnapore Crime against Woman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy