Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

নিয়ম উড়িয়ে দেদার মাটি কাটছে ইটভাটা, বিপন্ন নদী

মুখ্যমন্ত্রীর সেই হুঁশিয়ারিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই অবশ্য দিনেদুপুরে নদী পাড় থেকে যন্ত্র দিয়ে বেআইনি ভাবে মাটি কাটার কাজ চলছে। বিপন্ন হচ্ছে নদী।

এভাবেই নদীর পাড় থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

এভাবেই নদীর পাড় থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সুতাহাটা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৩০
Share: Save:

পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে নদী থেকে বালি তোলার অবৈধ কারবার নিয়ে আগেই সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক’দিন আগে দিঘায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে আরও এক ধাপ এগিয়ে তিনি জানিয়েছেন, কোনও রকম বেআআইনি কাজই বরদাস্ত করা হবে না।

মুখ্যমন্ত্রীর সেই হুঁশিয়ারিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই অবশ্য দিনেদুপুরে নদী পাড় থেকে যন্ত্র দিয়ে বেআইনি ভাবে মাটি কাটার কাজ চলছে। বিপন্ন হচ্ছে নদী।

হলদিয়া মহকুমার কুঁকড়াহাটি সংলগ্ন হুগলি নদীর তীরবর্তী ইটভাটা এলাকায় প্রকাশ্যেই চলছে এই বেআইনি কারবার। এ ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত-প্রশাসনের একাংশের যোগসাজশ রয়েছে বলেও অভিযোগ। সরকারি নিয়ম অনুয়ায়ী, ‘মাইনিং প্ল্যান’-এ উল্লেখিত পরিমাণের থেকে বেশি মাটি কোনও ভাবেই নদীর পাড় থেকে তোলা যায় না। কিন্তু সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ইটভাটার মালিকরা নদীর পাড় থেকে যথেচ্ছ মাটি কেটে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ।

গোটা আষ্টেক ইটভাটা রয়েছে ওই এলাকায়। প্রতিনিয়ত পাড় থেকে যথেচ্ছ মাটি তুলে নেওয়ায় হুগলি নদীর ভাঙন বাড়ছে। মাটি তুলে নিয়ে যাচ্ছে ‘মাটি মাফিয়া’-রা। তাদের দৌরাত্ম্যে ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নদী বাঁধ। বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মাটি চুরির কথা মানছেন সুতাহাটা পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাধ্যক্ষ অভিষেক দাসও। তিনি বলেন, ‘‘এ নিয়ে বন ও ভূমি সংস্কার দফতরের সঙ্গে আমাদের পঞ্চায়েত সমিতির একপ্রস্থ আলোচনা হয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কুঁকড়াহাটিতে নদী সংলগ্ন ইটভাটা মালিকদের ডেকে সাবধান করা হবে। নিয়মের বাইরে মাটি তোলা হলেই ব্যবস্থা নেওয়া বলে তাঁদের হুঁশিয়ারি দেওয়া হবে।’’

তাঁদের যে সাবধান করা হয়েছে, সে কথা মানছেন স্থানীয় একটি ইটভাটার মালিক কালীপদ ভৌমিক। তাঁর কথায়, ‘‘দিন চারেক আগে ব্লক ভূমি অফিসে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। অবৈধভাবে মাটি তোলা বন্ধ না করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানানো হয়। প্রতি বছরের মতোই এ বার মাটি কাটছিলাম। তবু আইনের ভয় দেখানোয় মাটি তোলার কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।’’

সব ইটভাটা অবশ্য এখনও মাটি তোলা বন্ধ করেনি। ফলে, বিপদও কাটেনি। তা ছাড়া, পঞ্চায়েত সমিতির তৎপরতা হুঁশিয়ারিতেই থমকে। এখনও এ নিয়ে নিয়মমাফিক অভিযোগ হয়নি। ফলে, শুরু হয়নি অভিযান। হলদিয়ার ব্লক ভূমি আধিকারিক বিশ্বরূপ দত্ত মানছেন, এ নিয়ে তাঁদের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। ফলে, পদক্ষেপও করা হয়নি।

শুধু হুঁশিয়ারিতে আটকে না থেকে লিখিত অভিযোগ করছেন না কেন? এ বার পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাধ্যক্ষের জবাব, ‘‘আমরা পঞ্চায়েত সমিতির তরফে তৎপর হয়েছি। এতে সমস্যা না মিটলে পরবর্তী পদক্ষেপের কথা ভাবা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Brick Clan River Soil Digging
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE