গোপীবল্লভপুরে টাঙানো হচ্ছে গেরুয়া পতাকা। নিজস্ব চিত্র
আজ, বুধবার অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমিপুজো ও শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্যদিকে আজই রাজ্যে সাপ্তাহিক লকডাউন। সেই নিয়ে সারা রাজ্যে জুড়েই তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর চলছে। বাদ নেই পশ্চিম মেদিনীপুরও। তৃণমূলের দাবি, বিজেপি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে। বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, মানুষ যাতে দিনটি পালন করতে না পারে সেই চেষ্টাই করছে তৃণমূল সরকার।
বিজেপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শমিত দাশ জানিয়েছেন, আজ, বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন মন্দিরে বিশেষ পুজো, হোমযজ্ঞ হবে। শমিত বলেন, ‘‘বুধবারের কার্যক্রম বিজেপির কার্যক্রম নয়। সাধারণ মানুষের কার্যক্রম। রাম জন্মভূমির বিষয়টি সাধারণ মানুষের আস্থা এবং আবেগের সঙ্গে যুক্ত। বহু বছর মানুষ এর জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। বুধবার মানুষ রাস্তায় নেমে হইহুল্লোড় করবেন না। তবে ঘরে ঘরে মন্দিরে মন্দিরে পুজো হবে। বিজেপির জেলা সভাপতির দাবি, ‘‘বুধবার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লকডাউন ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। পুলিশের বাড়াবাড়ি যেন না হয়। প্রশাসন যেন বাধা না দেয়।’’
মঙ্গলবার মেদিনীপুরে রামনবমী উদযাপন কমিটি, হিন্দু জাগরণ মঞ্চের প্রচারগাড়ি বেরিয়েছিল। সে গাড়িও আটকানো হয়েছে বলে অভিযোগ শমিতের। তাঁর দাবি, ‘‘পুলিশ বলছে, প্রচারগাড়ি থেকে জয় শ্রীরাম কেন বলা হচ্ছে। জয় শ্রীরাম বললেই না কি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লেগে যাবে!’’ বুধবার মেদিনীপুরে জেলা বিজেপির কার্যালয়েও হোমযজ্ঞ হবে বলে বিজেপির জেলা সভাপতি জানিয়েছেন। মঙ্গলবার নিমতলাচকে হিন্দু জাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে যজ্ঞ হয়েছে। এই নিয়ে বিজেপিকে পাল্টা তোপ দেগেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘ধর্ম আমরাও মানি। তবে আমরা ধর্মকে ধর্মের জায়গায় রাখি। বিজেপির মতো ধর্মকে নিয়ে রাজনীতি করি না।’’
বুধবার ঘাটাল শহর-সহ মহকুমা জুড়ে বিজেপির তরফে একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। হবে মাস্ক ও খিচুড়ি বিলি। ঘাটালের কিছু এলাকায় রামের ছবি নিয়ে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলের একাংশ। বিজেপি সূত্রের খবর, লকডাউন ভেঙেই সব কর্মসূচি হবে। বুধবার চন্দ্রকোনা রোড, গড়বেতা, গোয়ালতোড়তেও ভূমি পুজো করবে বিজেপি।
ঝাড়গ্রামে অবশ্য রাম মন্দির নিয়ে উৎসাহ তুলনায় কম। তবে দিলীপ ঘোষের বাড়ির এলাকা গোপীবল্লভপুর অবশ্য কর্মসূচি নিয়েছে গেরুয়া শিবির। জেলা বিজেপি-র জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, ‘‘দলের কোনও কর্মসূচি নেই। তবে হিন্দু সমাজের কর্মসূচিতে দলের লোকজন যোগ দেবেন।’’ বিজেপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক অবনী ঘোষ জানান, গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের ১০টি জায়গায় রামের প্রতিকৃতিতে মালা দিয়ে গৈরিক-পতাকা তোলা হবে। মাইকে রামের ভজনও বাজানো হবে। পুলিশ বাধা দিলে ঝামেলা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, জেলায় গোপীবল্লভপুরে বিজেপি-র সংগঠন তুলনামূলক ভাল বলে সেখানেই আপাতত কর্মসূচি সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে।
সরকারি নির্দেশ মেনে যথাযথভাবে লকডাউন যাতে পালিত হয় সেজন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশও। গোলমালের আশঙ্কায় বুধবার বিভিন্ন এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন থাকবে। মঙ্গলবার পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকে প্রচার করে বুধবার লকডাউনে সরকারি বিধিনিষেধের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কেউ লকডাউন অমান্য করলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোনো যাবে না।’’ রাম মন্দিরের ভূমি পুজোর দিনে জঙ্গলমহলেও বাড়তি সতকর্তা নেওয়া হয়েছে। সেখানেও রাস্তার মোড়ে পর্যাপ্ত পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy