Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Ashok Dinda

দলে সম্মান কই! বেসুরো বিজেপির দিন্ডা

শনিবার হলদিয়ার একটি প্রেক্ষাগৃহে সদ্য নির্বাচিত তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে সংবর্ধনা দেওয়া এবং কার্যকর্তাদের নিয়ে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

ashok dinda

অশোক দিন্ডা। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪ ০৭:৪৮
Share: Save:

অনুষ্ঠানে রয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, তমলুকের সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, দলের জেলা (তমলুক) সভাপতি তাপসী মণ্ডল। জেলার এমন শীর্ষ নেতৃত্বের সামনেই হঠাৎই সরব বিজেপি বিধায়ক অশোক দিন্ডা। দাবি করলেন, বিধায়ক থেকে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি— দলের একাংশের তরফে কাউকেই সম্মান দেওয়া হয় না। এ নিয়ে জোর চর্চা বিজেপির অন্দরে।

শনিবার হলদিয়ার একটি প্রেক্ষাগৃহে সদ্য নির্বাচিত তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে সংবর্ধনা দেওয়া এবং কার্যকর্তাদের নিয়ে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ছিলে ময়নার বিধায়ক অশোক। তিনি বলেন, ‘‘সংগঠনকে মজবুত করতে হলে দলের পদাধিকারীদের সম্মান দিতে হবে। এখানে তো দলের বিধায়ক, দলের সভাপতি বা প্রাক্তন রাজ্য, জেলা সভাপতিদের সম্মানই দেওয়া হয় না। এমনকী বিধায়কদেরও সম্মান দেওয়া হয় না।’’ এর পরেই অশোক দাবি করেন, লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি সাতটি (তমলুক জেলায়) বিধানসভায় এগিয়ে থাকলেও বিধানসভা নির্বাচনে সাতটি আসনই বিজেপি পাবে না। এর কারণ হিসেবে তাঁর ব্যাখ্যা, টিকিট না পাওয়া নিয়ে দলের দ্বন্দ্ব।

শুভেন্দুদের উপস্থিতিতে অশোক বলেন, ‘‘যে যখন সংগঠনের পদে আসেন, সে তখন ভাবেন আমি আমার নিজের মতো করে সংগঠন করব। আমি নিজের মত লাঠি ঘোরাব। এটা করলে হবে না। সবাইকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান দিতে হবে।’’ পরে দলের জয়ী পঞ্চায়েত প্রধানদেরও সতর্কবার্তা দেন বিজেপি বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘কিছু বিজেপি প্রধান ধরাকে সরা জ্ঞান করতে শুরু করেছেন। আমার কাছে তথ্য প্রমাণ রয়েছে। জেলা সভাধিপতিকে বলব, সংগঠন থেকে প্রধানদের ডেকে ওখান থেকে ঠিক করে নেওয়া। কারণ আগামী দিনে আমাদের ওইখানে জিততে হবে।’’ বিধায়ক এলাকায় এলাকায় সমন্বয় কমিটির তৈরি করার প্রস্তাবও দেন সভায়।

যে জেলায় লোকসভা ভোটে বিজেপির এত ভাল ফল, সেখানে হঠাৎ কেন এমন অভিযোগ করছেন দলীয় বিধায়ক?

রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, বিজেপির মধ্যে স্বজনপোষণ বাড়ছে। বিভিন্ন সাংগঠনিক সভাতেও নিজেদের পছন্দের মত লোককে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। যে খবর শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পৌঁছেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি কার্যকর্তা বলেন, ‘‘রাজ্য বিজেপি থেকে জেলা বিজেপি, যাঁরা মূলত তৃণমূল বা বামফ্রন্ট থেকে এসেছেন, তাঁরাই দলটা চালাচ্ছেন। সিংহভাগ নেতাই নিজের ধান্দা পূরণ করার জন্য এসেছেন গেরুয়া শিবিরে। তাই তাঁদের যে নীচু তলার কর্মীরা সম্মান দেবেন না, এটা তো স্বাভাবিক।’’

উল্লেখ্য, শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়ার পরে আদি গেরুয়া শিবিরের একটা বড় অংশ স্বজনপোষণের অভিযোগ করে চলছে। তাঁদের দবি, আদি বিজেপি নেতারা ব্রাত্য হয়ে পড়ছেন দলে। এমন আবহে বিজেপি বিধায়কের দাবি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

অশকো দিন্ডার দাবি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘২০২৬ সালে এই সাংগঠনিক জেলার সাতটির একটি বিধানসভাও জিততে পারবে না বিজেপি। ওরা টিকিট দেওয়ার লোক খুঁজে পাবে না’’ দলে কি সত্যিই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে? এ ব্যাপারে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপসী মণ্ডল বলেন, ‘‘বিধায়ক সংগঠনের ভেতরে সাংগঠনিক মন্তব্য করেছেন। এটা নিয়ে আমি সংবাদমাধ্যমে কোনও মন্তব্য করব না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Ashok Dinda BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE