তৃণমূেলর এই পার্টি অফিসেই ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হল পটাশপুর। তৃণমূলের হামলার পাল্টায় তাদের পার্টি অফিসে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। ভাঙচুর করা হল তৃণমূল সমর্থকদের একাধিক দোকান। হামলা পাল্টা হামলায় জখম হয়েছে দু’পক্ষের ১১ জন। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় নামানো হয়েছে র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স। রবিবার সকালে পটাশপুর ১ ব্লকের আলমচক (বেলদা) বাজারের ঘটনা। তবে রাত পর্যন্ত তৃণমূলের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ওই এলাকায় বিজেপি এবে তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে তৃমূলের কয়েকজন কর্মী-সমর্থক ঘরছাড়া হন। গত ১১ অগস্ট পটাশপুরে গোপালপুরে এক সভায় এলাকায় তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের উপর আক্রমণ নিয়ে বিজেপিকে হুঁশিয়রি দেন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। সাংসদের অভয়ে একে একে বাড়ি ফিরতে শুরু করেন তৃণমূলের ওই কর্মী-সমর্থকেরা। এলাকার মানুষের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের ওই লোকেরা তাঁদের ভোট দিতে দেয়নি। পটাশপুর-১ ব্লকের নৈপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আলামচক, পদিমা, চকগোপাল, সাঁঞা-সহ একাধিক এলাকাতেই একই পরিস্থিতি তৈরি করেছিল তৃণমূল।
কিন্তু লোকসভা ভোটের ফলে ওই সব এলাকায় বিজেপির প্রভাব বেড়েছে। বিজেপি নেতাদের হুমকি ও জরিমানার ভয়ে আলমচক, পদিমা, চকগোপালপুর গ্রামের বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী দেড় মাস ধরে ঘরছাড়া ছিলেন বলে অভিযোগ। গত বৃহস্পতিবার তাঁরা বাড়ি ফেরেন। অভিযোগ, এর পরই তৃণমূল কর্মীরা গ্রামের বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালায়। বিজেপির তিনজন কর্মী জখম হন। পাল্টা বিজেপির লোকেরা গত শুক্রবার রাতে চকগোপালপুর গ্রামে তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলা চালায়। হামলায় পাঁচ জন তৃণমূল সমর্থক জখম অবস্থায় এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শনিবার রাতে পটাশপুর থানায় বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তৃণমূল।
তৃণমূলের অভিযোগ, এর পরই রবিবার সকালে প্রচুর বহিরাগত এনে বিজেপির লোকজন আলামচক বেলদা বাজারে তৃণমূলের পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালায়। চেয়ার, টিভি, ফ্যান, আলমারি ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় নামে র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ সাত জন বিজেপি কর্মীকে আটক করেছে।
এগরা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শেখ আখতার আলি বলেন, ‘‘পার্টি অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সাতজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এলাকায় অশান্তি থামাতে পুলিশি টহলদারি এবং পিকেট বসানো হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।’’
নৈপুর পঞ্চায়েতে তৃণমূলের সভাপতি দুর্গাপদ দাবি করেন, ‘‘প্রশাসন নিরপেক্ষ হলে আজকে এই ঘটনা ঘটত না। একাধিক বার পুলিশকে জানিয়েও লাভ হয়নি। বিজেপির দুষ্কৃতীরা এলাকা দখল করতে আমাদের পার্টি অফিস ভাঙচুর চালায়। দলীয় কর্মীদের মারধর করে। অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে।’’
পটাশপুর-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তাপস মাজি বলেন, ‘‘বিজেপি এলাকায় রাজনৈতিক সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে ক্ষমতা দখল করতে চাইছে। আমাদের পার্টি অফিস ভেঙে জ্বালিয়ে দিয়েছে বিজেপির দুষ্কৃতীরা। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপির সন্ত্রাস রুখে দেবে তৃণমূল। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে পুলিশকে জানিয়েছি।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘লাল জামা বদলে এখন গেরুয়া হয়ে গিয়ে তৃণমূলের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে। আগামী দিনে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ করা হবে।’’ বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক সভাপতি অনুপ চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি, ‘‘বিজেপির লোকেরা এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। শাসকদলের প্রতি সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশেই এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ দিয়ে এলাকার দুষ্কৃতীদের বাঁচাচ্ছে শাসক দল। এতে ক্ষতি হচ্ছে সমাজের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy