Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Depression

Coast: চিন্তা বাড়াচ্ছে নিম্নচাপের বৃষ্টি

বাঁধ যাতে আরও না ভাঙে, সে জন্য তা মেরামতির প্রস্তুতি করেছে ব্লক প্রশাসন।

উত্তাল: মঙ্গলবার দিঘায় জলোচ্ছ্বাস।

উত্তাল: মঙ্গলবার দিঘায় জলোচ্ছ্বাস। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৫৭
Share: Save:

ঝিরঝিরে বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়া বইছিল রবিবার থেকেই। সোমবার রাত থেকে নিম্নচাপের প্রভাবে জেলায় শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। অতিবৃষ্টিতে জল জমে স্বাভাবিক জনজীবন যেমন ব্যহত হয়েছে, তেমনই বহু এলাকায় নদী এবং খালের পাড়ে নেমেছে ধস।

জেলা কৃষি সূত্রের খবর, রবিবার সকাল থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত জেলায় গড়ে ১০ মিলিমিটারেরও কম বৃষ্টিপাত হয়েছিল। কিন্তু সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত জেলায় গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭১.৭ মিলিমিটার। এর মধ্যে দিঘায় ১৪৩.৪, ভগবানপুরে ১০৪.৩, কাঁথিতে ১০০.২, কাজলাগড়ে ৭২.৩, এগরায় ৪৯.২, নন্দীগ্রামে ৩৮.২, পাঁশকুড়ায় ২৯.৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদিন ধরে চলেছ জেলাজুড়ে ভারী বৃষ্টি।

এক টানা বৃষ্টিপাতের ফলে ভগবানপুর-১, এগরা-১, চণ্ডীপুর, সুতাহাটা, কোলাঘাট, পাঁশকুড়া, তমলুক, নন্দকুমার-সহ বিভিন্ন ব্লক এলাকায় চাষের জমি জলমগ্ন হয়েছে। আমন, আউশ ধান ও ঝিঙে, চিচিঙ্গা, বেগুন, ঢ্যাঁড়স প্রভৃতি আনাজ এবং ফুলের চাষ ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি দফতর। এছাড়া, শহর থেকে গ্রাম— সর্বত্র স্বাভাবিক জনজীবন বিঘ্নিত হয়েছে। এ দিন বাস এবং অন্য গাড়ি চলাচল কমে যাওয়ায় বিভিন্ন রাস্তা ছিল সুনসান। জেলার অন্যতম ব্যস্ত মেচেদা কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে সারি দিয়ে বাস দাঁড় করানো ছিল। ‘পূর্ব মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র সম্পাদক সুকুমার বেরা বলেন, ‘‘জেলার সব রুটেই বাস চলাচল প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছিল। প্রতিদিন প্রায় ১১০০ বাস চলাচল করছিল। কিন্তু এ দিন সকাল থেকে টানা ভারী বৃষ্টির কারণে লোকজন বাড়ি হতে পারেনি। এদিন মাত্র ৬০০টি বাস চলাচল করেছে।’’

এ দিকে, নিম্নচাপের টানা বৃষ্টির জেরে পটাশপুরের উত্তর সেলমাবাদ গ্রামে কেলেঘাই নদীর বাঁধের ধস নামে। ধসে গিয়েছে পানিপারুল রাস্তার একাংশও। স্থানীয় সূত্রের খবর, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির জেরে কেলেঘাই নদী ও বাগুই খালে জলস্তর বেড়েছে। এ দিন জলের চাপে উত্তর সেলমাবাদ গ্রামের কাছে কেলেঘাই নদীর বাঁধের দু’জায়গায় প্রায় ১৫ ফুট দীর্ঘ ধস নামে। তাতে আতঙ্কে রয়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। খবর পেয়ে মঙ্গলবার বিকালে বাঁধ পরিদর্শন করেন পটাশপুর থানার পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা।

বাঁধ যাতে আরও না ভাঙে, সে জন্য তা মেরামতির প্রস্তুতি করেছে ব্লক প্রশাসন। ইতিমধ্যে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় ধসে পড়া অংশে মাটির বস্তা ও কাঠের বল্লা পোঁতার কাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা নদী বাঁধ পাহারা দিচ্ছেন। মাইকে করে চলছে প্রচার। কেলেঘাই নদী বাঁধ সংলগ্ন এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সেলমাবাদ হাইস্কুলের ত্রাণ শিবিরে সরানো হচ্ছে। পটাশপুর-১ এর বিডিও পারিজাত রায় বলেন, ‘‘সেলমাবাদের কাছে কেলেঘাই নদী বাঁধে ধস নেমেছে। স্থানীয়দের নিয়ে মাটির বস্তা ফেলার কাজ চলছে। বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ জায়গায় ও স্কুলের ত্রাণ শিবিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাতে বাঁধ পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

আবার, পানিপারুল খালের সেতুর কাছে মঙ্গলবার রাতে ধস নেমেছে। তাতে পাকা রাস্তার একাংশ ভেঙে বসে গিয়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিপদের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এলাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছে। পূর্ত দফতর ধসে যাওয়া রাস্তা সারানোর প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। তবে বৃষ্টি বন্ধ হলেই পাকাপোক্ত ভাবে সেখানে রাস্তার মেরামতির কাজ করা হবে বলে পূর্ত দফতর জানিয়েছে।

এ দিন সন্ধ্যা দুবদা খালের বাঁধের পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন এগরার বিধায়ক তরুণ কুমার মাইতি। জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার বলেছেন, ‘‘জেলার সর্বত্র ভারী হচ্ছে। বৃষ্টির জেরে কাঁথি-১ ও দেশপ্রাণ ব্লকে কিছু বাড়ি ভেঙেছে বলে রিপোর্ট এসেছে। তবে বড় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Depression
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy