এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলে হাতির হানায় মৃত্যু হল এক যুবকের। ফাইল ছবি।
মাধ্যমিকের প্রথম দিনই জলপাইগুড়িতে হাতি পিষে মেরেছে এক পরীক্ষার্থীকে। তার পরে রাজ্য জুড়ে জঙ্গল এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশিকা দিয়েছে বন দফতর। তারপরেও অবশ্য মৃত্যু এড়ানো গেল না। এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলে হাতির হানায় মৃত্যু হল এক যুবকের।
শনিবার সকালে খড়্গপুর গ্রামীণের কলাইকুণ্ডা রেঞ্জের খেমাশুলির অদূরে পতনা সংলগ্ন জঙ্গলে মেলে অরুণ মল্লিক (৩৯) নামে ওই যুবকের দেহ। তাঁর বাড়ি অর্জুনী পঞ্চায়েতের ভুরুরচাটি গ্রামে। দিনমজুর অরুণ শুক্রবার বাড়ি থেকে রোজকার মতোই কাজে গিয়েছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যা হলেও ফেরেনি। তাঁর সঙ্গী সন্তু মল্লিক এসে জানান, জঙ্গলে হাতির মুখে পড়েছেন অরুণ। রাত হয়ে যাওয়ায় কেউ আর জঙ্গলে যাওয়ার সাহস করেনি। এ দিন সকালে বনকর্মীরা গিয়ে জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে অরুণের দেহ। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে তা ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়।
বন দফতরের দাবি, খরগোশ শিকার করতে একই সাইকেলে গিয়েছিলেন অরুণ আর সন্তু। তাতেই হাতির হামলার মুখে পড়েন তাঁরা। সন্তু পালালেও শেষ রক্ষা হয়নি অরুণের। খড়্গপুরের ডিএফও শিবানন্দ রাম বলেন, “মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য দিন-রাত জঙ্গল এলাকায় নজরদারি চলছে। কিন্তু কেউ যদি আমাদের নজর এড়িয়ে শিকার করতে জঙ্গলে যায় তাহলে বিপদ হতেই পারে। এই দুই যুবক খরগোশ শিকারে পতনা সংলগ্ন জঙ্গলে ঢুকেছিল। ওদের কাছ থেকে ফাঁদ-সহ শিকারের সরঞ্জাম মিলেছে।”
স্ত্রী ও নাবালক দুই ছেলেকে নিয়ে অভাবের সংসারে অরুণ ছিলেন একমাত্র রোজগেরে। স্ত্রী কবিতা স্বামীকে হারিয়ে হাহাকার করছেন। দুই ছেলে বছর চোদ্দোর জিৎ ও বছর বারোর আদিত্যও শোকবিহ্বল। জিত বলে, “কী করতে বাবা জঙ্গলে গিয়েছিল জানি না। আমাদের সংসারটা ভেসে গেল।” অরুণের সঙ্গী সন্তু অবশ্য শিকারের কথা মানেননি। তিনি বলেন, “আমরা ঝাড়গ্রামের টুঙাধুয়ায় কাজে গিয়েছিলাম। সন্ধ্যায় একই সাইকেলে জঙ্গলপথে ফিরছিলাম। সামনে হাতি চলে আসায় অরুণ জঙ্গলের দিকে ঢুকে বাঁচার চেষ্টা করে। আর আমি সাইকেল নিয়ে খালপাড়ের রাস্তা ধরে পালিয়ে চলে আসি।” তবে গ্রামেরই যুবক তথা বনরক্ষী নেতাজি দণ্ডপাটের দাবি, “ওরা দুপুরের দিকে জঙ্গলে গিয়েছিল। সঙ্গে ফাঁদ ছিল। দিন মজুরের কাজের পাশাপাশি মাঝেমধ্যে ওরা শিকারও করে।”
তবে বন দফতরের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সুভাষ মল্লিক বলেন, “আমাদের গ্রামে গত কয়েক বছরে ৩ জনকে হাতি মারল। লোকে তে জঙ্গলের সহজ পথে যাতায়াত করেই। জলপাইগুড়ির ঘটনার পরে বন দফতরের নজরদারি থাকলে কী এমনটা ঘটত?’’ উঠেছে ক্ষতিপূরণের দাবি। যদিও ডিএফও বলছেন, “শিকার করতে জঙ্গলে গিয়ে মারা গেলে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়না। কিন্তু আমরা মানবিক ভাবে সবরকম চেষ্টা করছি। সৎকারেও কিছু সাহায্য করছি। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে তদন্তের পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy