বাজেটে চোখ। মেদিনীপুরের কেরানিতোলায়। —নিজস্ব চিত্র।
কেউ খুশি মোবাইলের দাম কমার আশায়, তো কারও সংশয় আমদানি শুল্ক কমানোর কথা বলা হলেও ব্যবসার হাল ফেরা নিয়ে। পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায় এবারের কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে শোনা যাচ্ছে এমনই আশা-আশঙ্কার কথা।
পশ্চিম মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাধারণ সম্পাদক চন্দন বসু বলেন, ‘‘বাজেটে কিছু প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। কিছু হয়নি। প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের জন্য মুদ্রা লোন একটা উপযোগী ধাপ। এই ঋণের সীমা ১০ লক্ষ থেকে বেড়ে ২০ লক্ষ টাকা হয়েছে। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পে বিশেষ ক্রেডিট গ্যারান্টিও ভাল সিদ্ধান্ত।’’ তবে চন্দনের মতে, ‘‘আবাসন নির্মাণকে মূলধারার শিল্পের মধ্যে আনা হবে বলে আমাদের একটা প্রত্যাশা ছিল। জেলা ছুঁয়ে একাধিক ফ্রেড করিডর হওয়ার কথা। তা নিয়েও কিছু জানতে পারলাম না।’’ গড়বেতা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সুব্রত মহাপাত্র বলছেন, ‘‘ই-কমার্সে ১ লক্ষ কর্মসংস্থানের কথা আছে। মুদ্রা যোজনা ২০ লক্ষ টাকা করা হয়েছে, আয়করে স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বেড়েছে। এ সবের ফলে ব্যবসায় গতি বাড়বে বলেই মনে হয়।’’
বাজেটে সোনায় আমদানি শুল্ক কমানোর ঘোষণা হলেও জেলার সোনা তালুকে তেমন খুশির হাওয়া নেই। ঘাটাল স্বর্ণশিল্পী ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী ওয়েলফেয়ার সমিতির সম্পাদক প্রদীপ সাহা বলছিলেন, ‘‘আমরা ধোঁয়াশায় আছি। কত দাম কমবে, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ কতটা উপকৃত হবেন তা এখনও পরিষ্কার নয়।’’ বেলদার সোনা ব্যবসায়ী শিবু কর্মকার অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের সুবিধা হল। কর কমানোয় ক্রেতারা দোকানমুখো হবেন।’’ তবে খড়্গপুর গোলবাজারে সোনার গয়না বিপণির মালিক বিক্রম রাও বলছেন, “আমদানি শুল্ক কমায় প্রতি ১০ গ্রামে হাজার দু’য়েক টাকা দাম কমবে। কিন্তু মানুষের রোজগার বাড়লে তো সোনা কিনবে। সরকারের নজর কই!’’
বাজেটে মহিলাদের স্কিল ডেভেলপমেন্টে ৩ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। গোয়ালতোড়ের কলেজ ছাত্রী দেবিকা মাহাতো, সোনালি হেমব্রমদের আশা, ‘‘এতে শিক্ষিত মেয়েদের কাজের সুযোগ বাড়লেই ভাল।’’ মোবাইলের দাম কমার ইঙ্গিতেও খুশি অনেকেই। তবে চন্দ্রকোনা রোড-ডাবচা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জয়প্রকাশ লোধা বাজেটে হতাশ। তিনি বলেন, ‘‘জিএসটি-সহ নানা ক্ষেত্রে ছোট ব্যবসায়ীদের হয়রানির উপশম পেলাম না।’’
নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি নিয়েও বাজেটে সে ভাবে উচ্চবাচ্য না হওয়ায় হতাশ অনেকে। সোনা, রুপো, মোবাইলে শুল্ক কমানো হলেও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানো হল না কে, প্রশ্ন আমজনতার। পুরনো কর কাঠামোয় থাকা পেনশনভোগীরা কতটা সুবিধা পাবেন তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। খড়্গপুর শহরের বুলবুলচটির বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টার বীরেন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, “এ বারের বাজেট মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র মানুষের কাছে বেশ হতাশাজনক। মানুষ খাবে না সোনা কিনবে?”
বাজেটে হতাশ ঝাড়গ্রামবাসীও। রাজ্যের শিল্প ও কৃষিক্ষেত্রে বরাদ্দ না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ঝাড়গ্রাম ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ভবতোষ মণ্ডল বলছেন, ‘‘এ রাজ্যের ক্ষুদ্রশিল্প ও কৃষিক্ষেত্রে কোনও ঘোষণা নেই। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও মধ্যবিত্তদের জন্যও কোনও সুখবর নেই।।’’ ঝাড়গ্রাম কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ সেনগুপ্তেরও মত, ‘‘আমজনতার স্বার্থে এই বাজেট নয়। বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রিত হবে আশা করেছিলাম। কিন্তু হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy