স্কুলের জমি বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল নন্দীগ্রামের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিক্রি করা জমির টাকা দিয়ে ওই শিক্ষক নতুন জমি কিনেছেন বলেও দাবি। ঘটনায় নন্দীগ্রাম থানা এবং নন্দীগ্রামের-১ এক বিডিওর কাছে এলাকার এক বাসিন্দা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যদিও ওই প্রধান শিক্ষকের দাবি, স্কুলের নামে থাকা বর্গাদারদের জমি সর্বসম্মতভাবে সমঝোতা করে বিক্রি করে দেওয়া সিদ্ধান্তনেওয়া হয়েছিল।
নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের নন্দীগ্রাম বাজারে রয়েছে ব্রজমোহন তিয়ারি শিক্ষা নিকেতন। স্কুলের নন্দীগ্রাম এলাকায় বহু জমি রয়েছে। সেই সব জমি থেকে অন্তত ৩৫০ বিঘা জমি স্কুলের প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত কুমার শাসমল বিক্রি করে দিয়েছেন বলে লিখিত অভিযোগ করেছেন ধান্যখোলা এলাকার বাসিন্দা আমিরুল খাঁন। তাঁর অভিযোগ, বিক্রয় যোগ্য দলিলে স্কুলের জমিকে ‘আমার সম্পত্তি’ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান শিক্ষক। বিক্রয় যোগ্য দলিলে একাধিক স্ববিরোধী বক্তব্যও তুলে ধরা হয়েছে বলে দাবি।
রঞ্জিতের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, বর্তমানে বিদ্যালয় থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে নন্দীগ্রাম এলাকার চারিগাহল্যা মৌজায় প্রায় ৮ একর জমি কেনার পরিকল্পনা করেছেন প্রধান শিক্ষক। ওই জমিতে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। যদিও নন্দীগ্রাম ব্রজমোহন তিয়ারি শিক্ষা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত বলছেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে। সবার সঙ্গে আলোচনা করে এবং শিক্ষা দফতরের অনুমতি নিয়ে বর্গাদারদের জমা দেওয়া হচ্ছে। নন্দীগ্রামে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল করার জন্য বেশ কিছুটা জমি কেনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষঅপপ্রচার করছেন।’’
উল্লেখ্য, ১৯১২ সালে নন্দীগ্রাম ব্রজমোহন তিয়ারি শিক্ষা নিকেতন প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই সময় একাধিক শুভানুধ্যায়ী স্থানীয় বাসিন্দা স্কুল কর্তৃপক্ষের নামে বহু জমি দান করেছিলেন। বর্তমানে ওই জমিগুলি স্কুল থেকে বেশ কিছুটা দূরে এবং বর্গা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বর্গাদারেরা স্কুলের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করেছেন। স্কুলের কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি এবং অভিভাবকদের নিয়ে একটি যৌথ কমিটি তৈরি করা হয়েছে। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বর্গাদারদের সঙ্গে সমঝোতা করে নির্দিষ্ট মূল্যের বিনিময়ে জমিগুলি বর্গাদারকে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর্থিক লেনদেনের জন্য পৃথক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। সমস্ত কিছু করা হচ্ছে শিক্ষা দফতরের অনুমতি নিয়ে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম-১ এর বিডিও সৌমেন বণিক বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)