অখিল গিরি।
রাষ্ট্রপতির সম্পর্কে কু-কথা বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। তার পরবর্তী সময়ে কিছুদিন কার্যত মুখে কুলুপ ছিল রাজ্যের কারা মন্ত্রী অখিল গিরির মুখে। তবে বৃহস্পতিবার মন্ত্রী ফের স্বমহিমায়। তৃণমূলেরই বর্ষীয়ান সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিশির অধিকারীকে এবার ‘নেংটি মন্ত্রী’ বলে আক্রমণ করলেন কারা মন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার খেজুরিতে ‘হার্মাদ মুক্তি দিবসে’র ১৩ তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পৃথকভাবে কর্মসূচি নেয় বিজেপি এবং তৃণমূল। বিকালে খেজুরি কলেজে আয়োজিত তৃণমূলের সভায় অখিল শিশিরবাবুকে কটাক্ষ করেন। বর্তমানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর তাঁকে আক্রমণের প্রসঙ্গ তুলে ধরে অখিল বলেন, ‘‘আমাকে বলে আমি হাফ প্যান্ট মন্ত্রী। আমার দফতরে আমি একাই মন্ত্রী। কিন্তু তোমার বাবার উপরে তো তাঁর দফতরের মন্ত্রী ছিলেন। আমি যদি হাফপ্যান্ট মন্ত্রী হই তাহলে কি তোমার বাবা নেংটি মন্ত্রী!’’ উল্লেখ্য, শুভেন্দুর বাবা শিশিরবাবু খাতায়-কলমে তৃণমূলের সাংসদ হলেও তাঁর সাংসদ পদ বাতিলের দাবিতে লোকসভার স্পিকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে তৃণমূলের সংসদীয় দল। এমন প্রেক্ষাপটে অখিলের শিশিরবাবুকে কুকথা বলা নিয়ে সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুদাম পণ্ডিত বলছেন, ‘‘যে দলের সর্বোচ্চ নেত্রী কুৎসিত ভাষায় প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে গালি দেন, তাঁর দলের বাকি নেতাদের মুখে এ ধরনের ভাষা স্বাভাবিক।’’ সভার শেষে অবশ্য ওই ‘কু কথা’ প্রসঙ্গে অখিল ব্যাখ্যা দেন, ‘‘শিশির অধিকারী কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ছিলেন যে দফতরে, তার উপরে আরেকজন ক্যাবিনেট মন্ত্রী ছিলেন। আমার দফতরে আমি একা মন্ত্রী। অথচ আমাকে ওঁর ছেলে শুভেন্দু হাফপ্যান্ট মন্ত্রী বলেন। তাহলে হাফপ্যান্টের নীচে কী থাকে, সেটা বোঝাতে গিয়েই আমি একথা বলেছি।’’ অখিলের মন্তব্যে অবশ্য চুপ বর্ষীয়ান সাংসদ শিশিবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘অখিলের কথার কোনও প্রতিক্রিয়া দেব না।’’
অন্যদিকে, এদিন সকালে খেজুরি-১ ব্লকের কামদেব নগর থেকে আশা ভবন পর্যন্ত দু কিলোমিটারের বেশি রাস্তায় প্রতিবাদ মিছিল করেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। পরে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ছিলেন শুভেন্দু। ঘটনাচক্রে, এ দিন খেজুরির কলেজ মাঠে হাজির থাকার কথা ছিল বন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার। ফলে এ দিন কার্যত রাজনৈতিক দ্বৈরথ হওয়ার কথা ছিল শুভেন্দু আর বীরবাহার। তবে বন প্রতিমন্ত্রী সভায় আসেননি। তাই ওই দ্বৈরথেরও সাক্ষী থাকেননি খেজুরিবাসী। বীরবাহা আগামী ২৬ ডিসেম্বর রামনগরে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচিতে হাজির থাকবেন বলে জানিয়েছেন কারা মন্ত্রী অখিল। এ দিন সকালের সভায় শুভেন্দুর মুখে উঠে আসে এনআইএ তদন্তের প্রসঙ্গ। এদিন বিজেপির কর্মসূচির আগে খেজুরিতে দলেরা সমর্থককে মারধর করার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘সবে কাজ শুরু করেছে এনআইএ। সমর মণ্ডল (জনকা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি) কোথায়? অপেক্ষা করুন।’’
শুভেন্দুর মুখে এ দিন বামেদেরও প্রশংসা শোনা গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সব বামপন্থীরা খারাপ নয়। তাই আমি আজকের কর্মসূচির নাম হার্মাদ মুক্ত রাখিনি। সুকুমার সেনগুপ্ত, নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক ভূপাল পন্ডা অত্যন্ত শ্রদ্ধেয়।’’
বিকালে তৃণমূলের কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও। একদিনে একই এলাকায় দুই রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ঘিরে এদিন দিনভর উত্তপ্ত ছিল খেজুরি। অশান্তি এড়াতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy