উৎকণ্ঠা: কারখানার বাইরে পরিজনের ভিড়। নিজস্ব চিত্র
শহর জুড়ে রয়েছে ছোট বড় শতাধিক কারখানা। গত এক দশকে সেই সব কারখানায় অন্তত ছ’বার বড়সড় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। ঘটেছে প্রাণহানিও। কিন্তু এর পরেও রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চল হলদিয়ার একমাত্র সরকারি হাসপাতালে চালু হয়নি ‘বার্ন ওয়ার্ড’। অগ্নিদগ্ধ রোগীকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হয় তমলুক জেলা হাসপাতাল বা কলকাতা।
শুক্রবার হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালসের ন্যাপথা ক্র্যাকার ইউনিটে আগুন লাগে। তাতে কমপক্ষে ১৩ জন আধিকারিক এবং কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। পুলিশের সহায়তায় ‘গ্রিন করিডর’ তৈরি করে চিকিৎসার জন্য তাঁদের পাঠাতে হয়েছে কলকাতার হাসপাতালে। এ দিনের অগ্নিকাণ্ডের পরে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে ‘বার্ন ওয়ার্ড’ তৈরির প্রসঙ্গে সওয়াল উঠতে শুরু করেছে। স্থানীয়দের অনেকেরই বক্তব্য, শহরে ওই পরিষেবা থাকলে আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা হয়তো এখানেই করা যেত।
মহকুমা হাসপাতাল সূত্রের খবর, সেখানে অগ্নিদগ্ধ রোগীর চিকিৎসা করার মতো ‘বার্ন ওয়ার্ড’ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। এ ধরনের রোগীকে তমলুকে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে পৃথক ‘বার্ন ওয়ার্ড’ চালু থাকলেও পরিষেবা ঠিকমত মেলে না বলে অভিযোগ করেন রোগীর পরিজন। জেলা সদর হাসপাতাল সূত্রের খবর, ১৫ শয্যা বিশিষ্ট ‘বার্ন ওয়ার্ডে’ কোনও প্লাস্টিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ নেই। হাসপাতালের চার শল্য চিকিৎসক অগ্নিদগ্ধ রোগীদের দেখাশুনো করেন। তমলুক জেলা হাসপাতালের সুপার গোপাল দাসও স্বীকার করেছেন যে, সেখানে উপযুক্ত চিকিৎসকের অভাব রয়েছে।
হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে কোনও অগ্নিদগ্ধ রোগী আনা হলে তাঁর কি কোনও চিকিৎসাই হয় না? এ ব্যাপারে হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সাধারণ বেডে রেখে বড় জোর একটা মশারি টাঙিয়ে দেওয়া এবং সাময়িক কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও পরিকাঠামো না থাকায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রোগীকে রেফার করে দিতে হয়।’’
‘বার্ন ইউনিট’ না থাকার ব্যাপারে হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে হলদিয়ায় বার্ন ওয়ার্ড চালুর লিখিত প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার বিরোধী দলের বিধায়কদের দাবির মর্যাদা রাখেনি। তাই এদিন এতবড় ঘটনার পরেও শ্রমিকদের এখানে চিকিৎসা করানো গেল না।’’
অবশ্য শুধু হলদিয়া মহকুমা হাসপাতাল নয়, কাঁথি, এগরা মহকুমা হাসাপাতাল, নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালেও অগ্নিদগ্ধের চিকিৎসার ইউনিট নেই। জেলায় থাকা ১৫৪টি বেসরকারি নার্সিংহোমেও ওই পরিষেবা নেই বলে অভিযোগ।
এ ব্যাপারে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার শুধুমাত্র জেলা সদর হাসপাতালে বার্ন ওয়ার্ড চালু করেছে। মহকুমা হাসপাতালগুলিতে এধরনের ইউনিট চালুর কোনও নীতি নেই। তবে রাজ্য সরকার চাইলে হলদিয়াতে গড়ে তুলতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy