অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বাড়িতে বাসুদেবের পরিবার। বৃহস্পতিবার ধকড়াবাঁকা গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
এক বিজেপি সমর্থককে গত বছর জুনে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। বিজেপি সমর্থকের পরিবারের দাবি ছিল, তারপর থেকেই শারীরিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন তিনি। গত বুধবার রাতে ওই বিজেপি সমর্থকের মৃত্যু হয়। এর পরেই বৃহস্পতিবার সকালে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বাড়িতে মতদেহ রেখে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি সমর্থকের পরিজন এবং গ্রামবাসীরা। পটাশপুর- ১ ব্লকের ধকড়াবাঁকা গ্রামের ওই ঘটনায় এ দিন সকাল থেকেই পলতাক ওই তৃণমূল নেতা এবং তার পরিবার।
বিজেপি এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, বাসুদেব মাজি (৩৬) নামে ওই বিজেপি সমর্থক ধকড়াবাঁকা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁকে ধকড়াবাঁকা গ্রামের তৃণমূলের বুথ সভাপতি বিশ্বজিৎ জানা এবং তার দলবল গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে বেধড়ক মারধর করেছিল বলে অভিযোগ। বাসুদেবের পরিবারের দাবি, ঘটনায় বাসুদেবের মাথায় এবং কিডনিতে গুরুতর আঘাত লেগেছিল। স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাও চলে। কিন্তু আর্থিক কারণে সেই চিকিৎসা সম্পূর্ণ হয়নি বলে দাবি পরিবারের। তারা জানিয়েছে, তারপর থেকেই বাসুদেব অসুস্থ ছিলেন।
এই পরিস্থিতিতে গত ১০ সেপ্টেম্বর বাড়িতে বাসুদেব ফের অসুস্থ হন। প্রাথমে তাঁকে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরের দিন কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে বাসুদেবকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারের দাবি, রোগীর শারীরিক অবস্থা দেখে হাল ছেড়ে দেন চিকিৎসকেরা। তাই তাঁরা গত রবিবার রাতে বাসুদেবকে হাসপাতাল থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন। বুধবার রাতে বাসুদেবের মৃত্যু হয়।
গত বছর বিশ্বজিতের মারধরেরই এই পরিণতি, এই অভিযোগে এ দিন সকালে বাসুদেবের পরিজন তাঁর দেহ নিয়ে ওই তৃণমূলে নেতার বাড়িতে হাজির হন। সঙ্গে ছিলেন গ্রামবাসীরাও। বিশ্বজিৎ এবং অন্য দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বাসুদেবের স্ত্রী রাধারাণি মাজি বলেন, ‘‘বিশ্বজিতের মারধরেই আমার স্বামী অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন। ওর কঠোর শাস্তি চাই। সরকারকে আমাদের পরিবারের দায়িত্ব নিতে হবে।’’ এক বিক্ষোভকারী হীরালাল জানা বলেন, ‘‘বিশ্বজিৎ এবং তার দলবল এই কাণ্ডে জড়িত। অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে।’’
এ দিকে, গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় বিশ্বজিৎ এবং তার পরিবার। প্রায় ছ’ঘণ্টা পরে পটাশপুর থানার পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তাই তারা একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
ঘটনায় বিজেপি’র জেলা সভাপতি (কাঁথি) অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গোটা এলাকা জুড়ে তৃণমূলের নেতারা অত্যাচার চলত। মারধরের পরে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য বাড়ি থেকে বের হতেও দিত না। মারধরে ফলেই বাসুদেবের মৃত্যু হল।’’ যদিও পটাশপুর-১ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি তাপস মাজি ঘটনায় দলের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলকে বদনাম করতে বিজেপির এই চক্রান্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy