E-Paper

নদীবাঁধে ধস, বন্যার আশঙ্কা 

প্রসঙ্গত গত দেড় দশকে ২০০৮ সালে কেলেঘাই নদীর একাধিক জায়গায় বাঁধ ভেঙে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল পটাশপুর ও সবংয়ে। সেই বন্যায় অনেক মৃত্যু হয়েছিল।

তালছিটকিনিতে কেলেঘাই নদীর বাঁধে ধস।

তালছিটকিনিতে কেলেঘাই নদীর বাঁধে ধস। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৩ ০৯:৩৫
Share
Save

ভারী বৃষ্টিপাতের মধ্যেই ফের কেলেঘাই নদীবাঁধের বিপজ্জনক এলাকায় ধস নামায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তড়িঘড়ি বাঁধ মেরামতিতে সেচ দফতরে ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন বিডিও। ভরা বর্ষায় মেরামতির এলাকায় নদীবাঁধে ফের ধস নামায় প্রশাসনিক গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার মানুষ। ফের বন্যার আশঙ্কায় পটাশপুরের মানুষ।

সাড়ে এক দশকে কেলেঘাই নদীর বাঁধভেঙে দু’দুবার বানভাসি হয়েছে এগরা মহকুমার পটাশপুর এলাকা। ২০২১ সালে ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে তালছিটকিনিতে কেলেঘাইয়ের বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল পটাশপুর। নদীবাঁধ ভেঙে বার বার বন্যার ঘটনায় জেলা প্রশাসনের উদাসীনতা নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। সেই তালছিটকিনি নদীবাঁধের বিপজ্জনক এলাকায় প্রায় ১০০ ফুট এলাকা জুড়ে নদীবাঁধে ধস নামায় আবার বানভাসি হওয়ার ভয় চেপে বসেছে স্থানীয়দের মনে।

বাঁধ থেকে প্রায় দশ থেকে পনেরো ফুট গভীর হয়ে বাঁধের মাঝবরাবর ধসে গিয়েছে। এখনও গেল বছরের বাঁধ মেরামতির মাটির বস্তা ধসে পড়া এলাকায় রয়েছে। বাঁধের মাঝ অংশে ধস নামায় ভারী গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়েছে। ২০২১ সালে ভাঙা নদীবাঁধের কয়েক হাত দূরে ফের বাঁধে ধস নামায় সেচ দফতরের গাফিলতি নিয়ে সরব হয়েছেন নদীতীরের দুই জেলার মানুষ। এখনও কেলেঘাই নদীতে বর্ষার জল তেমন আসেনি। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে ধীরে ধীরে নদীতে জলস্তর বাড়ছে। ভরা নদীতে এভাবে বাঁধে ধস নামলে বন্যা যে অবশ্যম্ভাবী ছিলো তা মানছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিপজ্জনক এলাকায় নদীবাঁধ মেরামতিতে কেন গাফিলতি হল সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে প্রশাসনের অন্দরে।

প্রসঙ্গত গত দেড় দশকে ২০০৮ সালে কেলেঘাই নদীর একাধিক জায়গায় বাঁধ ভেঙে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল পটাশপুর ও সবংয়ে। সেই বন্যায় অনেক মৃত্যু হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০১২ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের গঙ্গা অ্যাকশন প্রকল্পে কেলেঘাই সংস্কার শুরু হলেও তা নিয়ে বিস্তর বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে। সেই বেনিয়মের ক্ষত এখনও নদী তীরের গ্রামগুলিকে ভোগাচ্ছে। নদীর সংস্কার ও নদীবাঁধ উঁচু করে বাঁধার পরেও ২০২১ সালে বাঁধ ভেঙে ন্যায় ভেসেছিল পটাশপুর। ড্রেজার দিয়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তালছিটকিনিতে ভাঙা নদীবাঁধ মেরামতি করে সেচ দফতর ও জেলা প্রশাসন। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সোমবার রাতে তালছিটকিনির সেই নদীবাঁধের প্রায় একশো ফুট এলাকা জুড়ে ধস নামায় নতুন করে আতঙ্ক তৈরা হয়েছে। পাশাপাশি বাঁধ মেরামতিতে গাফিলতি ছিল কি না সেই প্রশ্নও জোরাল হয়েছে।

মঙ্গলবার পটাশপুর-১ ব্লকে সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে তড়িঘড়ি বৈঠক করেছেন বিডিও বিধানচন্দ্র বিশ্বাস। সূত্রের খবর, ঠিকাদারদের পাওনা বাকি থাকায় তাঁরাও বাঁধ মেরামতিতে অনীহা দেখাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে কাঠের বল্লা পুঁতে ধসে যাওয়া অংশে বাঁধ মেরামতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এক ঠিকাদারকে। এখনও পটাশপুরে কেলেঘাইয়ের বাঁধে একাধিক জায়গায় ধস রয়েছে। পাকাপোক্তভাবে বাঁধ মেরামতির দাবিতে সরব এলাকার মানুষ। নদীবাঁধের স্থায়ী সমাধান চাইছে পটাশপুর। নদীতীরের বাসিন্দা বৃদ্ধ নিরঞ্জন ও জগন্নাথ বর্মনদের কথায়, ‘‘সেচ দফতর সঠিক ভাবে বাঁধ মেরামত না করায় নতুন করে বাঁধে ধস নেমেছে। ভরা নদীতে এভাবে বাঁধে ধস নামলে ফের বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। নদীবাঁধের স্থায়ী সমাধান চাই আমরা।’’

পটাশপুর-১ ব্লকের বিডিও বিধানচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘‘বাঁধে ধস নিয়ে প্রশাসন সজাগ রয়েছে। সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়াদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

dam Patashpur

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।