মেদিনীপুর শহরে ‘দুয়ারে ডাক্তারে’র হোর্ডিং। নিজস্ব চিত্র।
‘দুয়ারে ডাক্তার’ শিবির হবে গ্রামে। শিবিরের প্রচারের হোর্ডিং লেগেছে শহরেও। উদ্যোগে পুরসভা। গ্রামের শিবিরের প্রচার শহরে কেন, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন! পুরসভার এমন বাহুল্যের ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরাও। পুর-কর্তৃপক্ষ অবশ্য এতে দোষের কিছু দেখছেন না! মেদিনীপুরের পুরপ্রধান সৌমেন খানের সাফাই, ‘‘দুয়ারে ডাক্তার এক অভিনব কর্মসূচি। এমন কর্মসূচির প্রচার করা আমাদের সকলের দায়িত্ব!’’
আগামী ২৪ এবং ২৫ মার্চ, এই দু’দিন ধরে মেদিনীপুর গ্রামীণের চাঁদড়ায় ‘দুয়ারে ডাক্তার’ শিবির হওয়ার কথা। চাঁদড়া হাইস্কুল চত্বরে শিবিরের আয়োজন হতে পারে। সেই মতো প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। চাঁদড়ার প্রস্তাবিত ওই শিবিরের প্রচারেই শহরে হোর্ডিং লাগিয়েছে পুরসভা। বস্তুত, রাজ্যে ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসেবে ‘দুয়ারে ডাক্তার’ শিবির প্রথম হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়িতে। গত ৮ এবং ৯ ফেব্রুয়ারি। এসেছিল কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটি দল। ঠিক ছিল, সফল হলে আগামী দিনে অন্যত্রও এই কর্মসূচি হবে। কেশিয়াড়ির শিবির সফল হয়েছে। এ বার অন্যত্রও শিবির হবে। ফের পশ্চিম মেদিনীপুরে আসছে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটি দল। এ বার দলটি যাবে চাঁদড়ায়। সেখানে ‘দুয়ারে ডাক্তার’ শিবির হবে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী মানছেন, ‘‘এ বার চাঁদড়ায় দুয়ারে ডাক্তার শিবির হবে। জেলা থেকে যে সব পদক্ষেপ করার করা হচ্ছে।’’ কেশিয়াড়ির ধাঁচে পরে গোয়ালতোড়েও (গড়বেতা ২) ‘দুয়ারে ডাক্তার’ শিবির হয়েছে। গত ৩ এবং ৪ মার্চ। গোয়ালতোড়ের শিবিরে গিয়েছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটি দল।
জেলা প্রশাসনের দাবি, প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রান্তিক মানুষের কাছে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছতেই চাঁদড়ায় এই শিবির হবে। শিবিরে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা থাকবেন। তাঁরা রোগী দেখবেন। বিভিন্ন মহল মনে করাচ্ছে, রাজ্যে সরকারি স্তরে অন্যতম শ্রেষ্ঠ হাসপাতাল এসএসকেএম হাসপাতাল। অনেকেই সেখানকার পরিষেবা নিতে চান। কিন্তু সকলে পারেন না। এই কর্মসূচির ফলে এসএসকেএমের চিকিৎসকদের নাগালে পাবেন প্রান্তিক মানুষেরা। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলছেন, ‘‘এই কর্মসূচিকে দুয়ারে পিজি হাসপাতালের ডাক্তারও বলতে পারেন।’’ চাঁদড়ার শিবিরের প্রচারে শহরে হোর্ডিং লাগিয়েছে পুরসভা। একাধিক মহলের দাবি, কেশিয়াড়ির শিবিরের প্রচারে কিন্তু পুরসভার এমন পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
তাদের অনুমান, চাঁদড়া মেদিনীপুর বিধানসভার অন্তর্গত বলেই পুরসভার এই অতি-তৎপরতা। তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণে পুরপ্রধান সৌমেন মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়ার অনুগামী হিসেবেই পরিচিত। বিঁধছে বিরোধীরা। কংগ্রেস কাউন্সিলর মহম্মদ সইফুলের কথায়, ‘‘পুরসভার বেহিসেবি খরচে কার্যত লাগামই নেই। এমন কাজকর্মে পুরসভার আর্থিক পরিকল্পনার দফারফা হচ্ছে!’’ জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাসের কথায়, ‘‘পরিকল্পনা বহির্ভূত এমন বহু খরচই করে চলেছে পুরসভা। শহরে পুরসভা কেন ওই শিবিরের প্রচারে অর্থ খরচ করবে, সেটাই বোধগম্য হচ্ছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy