লোকালয়ে বুনোরা ঢুকে পড়লে তাদের জঙ্গলে ফেরাতে এই যানটি ব্যবহার করবে বন দফতর।—নিজস্ব চিত্র
প্রায় দোরগোড়াতেই দুর্গাপুজো। তবে হাতি-ঠাকুরের উপদ্রব থামেনি এ রাজ্যের জঙ্গলমহলে। অবস্থা সামলাতে তাই সহায় দু’টি ‘ঐরাবত’— হাতি মোকাবিলার বিশেষ যান।
ঐরাবত নামের এই গাড়িতে শুধু হাতি নয়, অন্য হিংস্র পশু তাড়ানো বা পাকড়াও করার নানা সরঞ্জাম রয়েছে। দু’টি ঐরাবত রয়েছে মেদিনীপুর বন বিভাগে, একটি ঝাড়গ্রামে ও একটি বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে। যখন যেখানে হাতির উৎপাত মাত্রা ছাড়াবে, ছুটবে এই ঐরাবৎ। মেদিনীপুর বন বিভাগের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “এই সময় মাঠে ধান। তার উপর পুজোও চলে এল। তাই আমাদের দুশ্চিন্তাটাও বেশি। তবে ঐরাবত পাওয়ায় কাজ করতে অনেকটা সুবিধে হবে।’’
আগে থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুরে ৫০টি বুনো হাতির দল ছিল। সোমবার রাতে ওড়িশা থেকে আরও ৮০টি হাতির দল নয়াগ্রামে ঢুকেছে। ১৩০টি হাতি নিয়ে এখন জেরবার বন দফতর। উৎসবের মরসুমে অঘটন ঘটতে পারে যে কোনও সময়। সে জন্যই ঐরাবত। বিশেষ এই গাড়িতে রয়েছে ১৮ রকমের সরঞ্জাম। সাধারণ আলো ছাড়াও গাড়ির চারদিকে চারটি এলইডি লাইট। তিনটি ১০০ ওয়াটের। সামনেরটি ১৫০ ওয়াটের। এটি আবার ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরানো যায়। রয়েছে হুটার, রেডিও ট্রান্সমিটার, মাইক, ৪টি সার্চলাইট, ৫টি বনকর্মীদের মাথায় লাগানো লাইট, হাতির পায়ে বেড়ি দিতে চেন, এলাকা ঘিরে নিতে জাল, বনকর্মীদের পোশাক, স্প্রে মেশিন, জেনারেটর, প্রাথমিক চিকিত্সার সরঞ্জাম, ঘুমপাড়ানি বন্দুক ও নানা রকম ওষুধ। এই গাড়িতে ১২ জন বনকর্মী বসতে পারবেন।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে পিরাকাটা ও চাঁদড়ার জঙ্গলে ৫০টি হাতি রয়েছে। সোমবার রাতে চাঁদড়ার ঝরিয়াতে হাতির হানায় তিনটি বাড়ি ভেঙেছে, ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে। তার উপর ওড়িশায় বাধা পেয়ে নয়াগ্রামে ফিরেছে হাতির দল। পরে এসেছে কলাইকুণ্ডায়। দু’-এক দিনের মধ্যেই দলটি ফের কাঁসাই নদী পেরিয়ে চাঁদড়া হয়ে শালবনি ও গড়বেতার পথে যেতে পারে বলে অনুমান। ইতিমধ্যে একটি ‘রেসিডেন্ট’ হাতিকে মারার জন্য অনুমতি চেয়েছে মেদিনীপুর বন দফতর। সম্প্রতি ওই হাতিটি রঞ্জার জঙ্গলে লুলকিবালা মাহাতো নামে এক মহিলাকে আছড়ে মারে। ‘রেসিডেন্ট’টি রয়েছে চাঁদড়ার জঙ্গলে। আতঙ্কিত বাসিন্দারা লিখিত ভাবে বন দফতরের কাছে অভিযোগ জানানোর পরই বন দফতর হাতি মারার অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “আমরা আপাতত, দাঁতালটির উপর নজর রাখছি। হাতিটির মরমুখী আচরণের কথা জানিয়ে তাকে মেরে ফেলার অনুমতি চেয়ে একটি আবেদন জানানো হয়েছে। অনুমতি পেলে সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy